দেশের মানুষ শান্তি চায়, রাজনৈতিক বিবাদ চায় না

মীর আব্দুল আলীম প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২৩, ০৬:১১ পিএম

বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন এলেই আমাদের রাজনীতির মাঠ গরম হয়। গরম কিছুটা হয়েছে। ২০২৩-এর শেষে কিংবা ২০২৪-এর শুরুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। এ নির্বাচন ঘিরে আগেভাগেই রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে। শুরু হয়েছে বিক্ষেভ আর সভা-সমাবেশের রাজনীতি। বহু বছর ধরেই দেখছি ক্ষমতার পাঁচ বছরে শেষ বছরটা ভালোয় ভালোয় কাটে না। মারামারি, খুনোখুনি আর নানা হাঙ্গামায় উত্তপ্ত থাকে দেশ। কোনো প্রকার হাঙ্গামা না থাকলেও বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা আর হুংকারে আমরা যারা সাধারণ মানুষ, তারা ভড়কে যাচ্ছি। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২২-এর  ১০ ডিসেম্বর ঘিরে চরম উত্তেজনা ছিল দেশে। কি জানি কী হয়, এই ভয় ছিল জনমনে। কিছুই হয়নি।

শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হয়েছে। আগের দিন বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাস গ্রেপ্তার হয়েছেন। আবার এ বছরের ৯ জানুয়ারি তারা জামিনে মুক্তও হয়েছেন। ঢাকার সমাবেশের আগের দিন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাস গ্রেপ্তার দুই ধরনের কথা আসছে রাজনীতির বিভিন্ন জায়গা থেকে। এক পক্ষ বলছেন, সরকার পতন আন্দোলন থামিয়ে দিতেই এই গ্রেপ্তার। তারা এটাকে অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন।

অন্যদিকে একপক্ষ বলছেন, তারা দেশে আর জ্বালাও-পোড়াও হরতালের রাজনীতি চায় না, দেশ আর অশান্ত হোক চায় না। তারা দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন। দেশের ব্যাপক উন্নয়নে এ ধরনের সংঘাতময় রাজনীতিকে তারা মোটেও পছন্দ করছেন না। দেশের মানুষ প্রকৃতই শান্তি চায়;  রাজনৈতিক বিবাদ চায় না। হরতাল অবরোধ, ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও চায় না। এ জন্য সংলাপের বিকল্প নেই। টেবিলে বসে রাজনৈতিক সংঘাত থেকে বেরিয়ে আসুক দেশ—এটাই কায়মনে চায় দেশবাসী।

কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। কারও বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকতেই পারে। মির্জা ফখরুল কিংবা মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকলে তারা গ্রেপ্তার হতেই পারেন। ১০ তারিখের ঢাকার সমাবেশের আগের দিন বিএনপির শীর্ষ এই দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হলো কেন, এমন প্রশ্ন সামনে আসে। আগেও তো তাদের গ্রেপ্তার করা যেত? তা ছাড়া তাদের রাতে গ্রেপ্তার করা  হলো কেন। দিনের বেলায় তো তাঁরা প্রকাশ্যেই ছিলেন। ওনারা তো পলাতক ছিলেন না, ওনাদের গ্রেপ্তার করার দরকার থাকলে পুলিশ তা আগে করেনি কেন? ঘুম থেকে জাগিয়ে এত রাতে গ্রেপ্তার নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। সবকিছুর পরে দেশবাসী এখন আর কোনো সংঘাত জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতি চায় না। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ব্যাহত
হোক তা চায়।

তবে বর্তমানে দেশে রাজনৈতিক সংঘাত বাড়ছে, তা এখন দৃশ্যমান। দেশ এবং জনস্বার্থে এ সংঘাত এড়াতেই হবে। দেশের ব্যাপক উন্নয়ন যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সে স্বার্থে দেশের আমজনতা সংঘাত চায় না। তা এড়ানো মোটেও হয়তো সম্ভব হচ্ছে না। আগত নির্বাচন নিয়ে সরকার ও বিরোধী দল ১৮০ ডিগ্রি বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও আন্দোলন সামনে রেখে মাঠে গড়িয়েছে রাজনীতি। রাজপথের কর্মসূচিকে ঘিরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। নানা পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামছে ক্ষমতাসীনরা। সরকারি দলের নেতারা বলছেন, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচনের আগে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। তাই সংঘাতের দিকেই যাচ্ছে দেশ। নেতাদের মাঠ গরম করা বক্তৃতা-বিবৃতিতে কর্মীদের মধ্যেও নানা ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এই প্রতিক্রিয়ায় রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করছে। দলীয় সংঘাত বাড়ছে। মিথ্যা মামলা গ্রেপ্তার বাড়ছে। এক দলের কর্মীরা আরেক দলের কর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। খুনখারাবি হচ্ছে। তা মহা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

স্বস্তির একটা দিক আছে, অতীতে বিএনপি কিংবা বিরোধী দল সমাবেশের মোটেই অনুমতিই পেত না। এখন পাচ্ছে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক বলেই ধরে নিতে পারি আমরা। মন্দ দিকও আছে। বিএনপি যেখানেই সমাবেশ করেছে, সেখানেই কোনো একটা অজুহাতে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা আকস্মিক ধর্মঘট পালন করেছে। কখনো তারা নিরাপত্তার অজুহাত তুলেছেন, কখনো মহাসড়কে নছিমন-করিমন বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। এতে যে কেবল সমাবেশগামী মানুষই ভোগান্তিতে পড়েছে তা নয়, সাধারণ মানুষও সীমাহীন হয়রানির শিকার হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বন্ধ হওয়া জরুরি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে যে দাবি করা হচ্ছে দেশে সংঘাতময় পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে বিএনপিও সমমনা দলগুলো। প্রধান দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাজপথে এমনকি কথার সংঘাতে জড়িয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে রাজপথে ঠেকাতে ব্যাপক তৎপর আওয়ামী লীগ। বিএনপির তৎপরতা ঠেকাতে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও। এসব দেশের জন্য অশান্তির বার্তা দেয় কি?

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজপথের অনিবার্য রক্তপাত এড়াতে কয়েকটি উপায় আছে। প্রথমত, বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসে আগামী সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ করার বিষয়টি ফয়সালা করতে পারে চলতি সরকার। দ্বিতীয়ত, কোনো আলাপ-আলোচনা ছাড়াই সরকার জাতীয় সংসদে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থার অধীনে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটি বিল উত্থাপন ও পাস করে বিরোধীদলীয় আন্দোলন নিষ্প্রভ করে দিয়ে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান করতে পারে। এটি করতে সরকারি দলের হয়তো কোনো অসুবিধা হবে না। তা না করলে হয়তো সংঘাতের দিকেই দেশ যেতে  পারে।

যেকোনো দেশের রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ করা গণতান্ত্রিক অধিকার। এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের কর্মসূচি ও পরিকল্পনার কথা দেশবাসীকে জানাতে পারে। সেসব সমাবেশে সরাসরি কিংবা ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে বাধা সৃষ্টি শান্তিকামী মানুষকে উদ্বিগ্ন না করে পারে না। যেকোনো দলের রাজপথে ফয়সালা কিংবা রাজপথ দখল করার হুমকি-ধমকি কোনোভাবে কাম্য নয়। এমনিতেই দেশে অর্থনৈতিক সংকট চলছে। বাজার অস্থির। মানুষের পণ্য কেনার ক্ষমতা কমছে। এ অবস্থায় বিএনপি কিংবা অন্য কোনো দলের অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করা মোটেও ঠিক হবে না। অন্যদিকে সরকারও যেন কোনোভাবে সংঘাতের পথে পা না বাড়ায়, তা দেশের জন্য মঙ্গলকর।

পরিশেষে বলতে চাই, দলে দলে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়, এমন কাজ থেকে সবাইকে দূরে থাকতে হবে। প্রতিপক্ষকে রাজপথে মোকাবিলা কিংবা ফয়সালার পরিণাম; সে সঙ্গে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে দেশের অভ্যন্তরে কিংবা বহির্বিশ্বে সংঘাত তৈরি করার চেষ্টা কখনো মঙ্গলজনক হবে না। এ পথ থেকে সব দলকে এখনই বেরিয়ে আসতে হবে।

নির্বাচন আগত আর আমরা দেশবাসী চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন। বিগত নির্বাচনগুলো একতরফা হলেও এবার মনে হচ্ছে তা হবে না। আবহাওয়াটা ফের গোমট ঠেকছে। বোধ করি আলোর দেখা মিলবে না। রাজনৈতিক যুদ্ধ আবারও হতে পারে। কেউ চায় না নির্বাচন কেন্দ্রে কোনো সংঘাত হোক, কোনো রক্তপাত হোক এবং কোনোরকমের প্রাণহানি হোক, ভোট লুটপাট হোক। এ ছাড়া প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনও জনগণ কামনা করে না। ভোটের অধিকার প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিটি নাগরিকের। সবাই যেন আনন্দচিত্তে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন সে নিশ্চয়তা নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালনকারীদের দিতে হবে। এবং নির্বাচনের পর রাজধানীতে যেন কোনোরূপ বিশৃঙ্খলা-অরাজকতা সৃষ্টি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
মনে রাখতে হবে, গণতান্ত্রিক দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠিত করতে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই। আপামর জনগণের প্রত্যাশাও তাই। নির্বাচনের আগে ও পরে আপনাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটা ভালো ভূমিকা থাকতে হবে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আচরণবিধি প্রয়োগ করতে গিয়ে এমন কিছু করবে না যেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। নির্বাচনে কেউ জিতবেন, কেউ হারবেন।
যারাই জিতুক, শান্তিপূর্ণ ও অবিতর্কিত নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপিত না হলে দলের জয় গণতন্ত্রের জয় বলে প্রতিষ্ঠিত হবে না। আমরা প্রত্যাশা করি কোনো জাতীয় রাজনীতির চাপে এই নির্বাচনের বৈশিষ্ট্যকে যেন প্রভাবিত করা না হয়। তাই সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিতে পারা এবং স্বচ্ছভাবে ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশ নিশ্চিত করতে হবে।

জয়-পরাজয় যারই হোক, নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনোভাবেই নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে পরাজিত হলে চলবে না। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে কী হবে? আবার সংঘাত, সংঘর্ষ হবে? এটা এখন হয় না র‌্যাব পুলিশের পিটুনি আর মামলার ভয়ে। চাপা ক্ষোভ তৈরি হবে। সরকার এবং ইসির প্রতি বাজে ধারণা তৈরি হবে। বিগত নির্বাচনগুলো একতরফা হলেও এবার ঢাকা সিটির নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়।

নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ হলে কোনো সংশয় নেই। না হলেই যত বিপদ। রাজনৈতিক যুদ্ধ হতে পারে। যদিও এর সম্ভাবনা কম। তবে এটাই বলতে চাই, কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া চলতি সরকারে সময়টা খুব একটা খারাপ যায়নি। দেশে-বিদেশি বিনিয়োগ শুরু হয়েছে, দেশের দৃশ্যমান উন্নয়ন পরিলক্ষিত হয়েছে। গণতন্ত্রেও ঘাটতি থাকলেও, হরতাল অবরোধ না থাকায় জনমনে স্বস্তি ছিল। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে পেরেছে, শিল্পকারখানায় উৎপাদন হয়েছে। ভয় এখানেই; এ ধারা ঠিক থাকবে তো?

সামনের দিনগুলো ভালো যাবে তো? নির্বাচন ঘিরে আবার জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর, হরতাল অবরোধ এসব হবে না তো? সাধারণ মানুষের মধ্যেও নির্বাচন ঘিরে বেশ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। তবে তারা নির্বাচনকে ঘিরে আর কোনো অশান্তির পরিবেশ চায় না।

নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয় তাহলে আন্দোলনের ইস্যু তৈরি হবে, বাড়বে আশান্তি। অর্থনীতি ধ্বংস হবে। সম্পদ নষ্ট হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানুষের ক্ষয় হবে। দেশে বেকারত্ব বাড়বে, অনেক শিল্প-কারখানা বন্ধ হবে, ব্যবসা-বাণিজ্যে অচলাবস্থা দেখা দেবে। দেশের অর্থনীতি পঙ্গু হবে। সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা অনিশ্চিত হবে। এমনটা আমরা কেউই আর চাই না। তবে এটাও সত্য, বিরোধী দলের রাজনীতি করার পরিবেশ দিতে হবে বর্তমান সরকারকে। দেশের স্বার্থে তাদেরও ছাড় দিতে হবে।

কয়েক বছর আগে রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে আমরা প্রতিদিন যা দেখেছি, সে কথা এখনো ভুলে যাইনি। প্রতিনিয়ত চোখের সামনেই এসব ধ্বংসযজ্ঞ দেখেছি। কিছুই করতে পারিনি। এসব রোধে আইন যে নেই, তা-ও নয়, আছে। নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা রাষ্ট্রের দ্বিতীয় অপরিহার্য কাজ। বাংলাদেশের সংবিধানের তৃতীয় ভাগে ২৬-৪৭ক অনুচ্ছেদ পর্যন্ত নাগরিকের অধিকারগুলো বর্ণিত আছে। সেখানে কাউকেই নির্বিচারে মানুষ হত্যার বৈধতা দেওয়া হয়নি। এ হত্যার দায় যেমন বিরোধী দলের ছিল, রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে সরকারও এ দায় কিছুতেই এড়াতে পারে না। যখন হরতাল-অবরোধের নামে জীবন্ত মানুষ পুড়ে ঝলসে যায়, যখন তাদের উপার্জনের একমাত্র সম্বল কেড়ে নেওয়া হয়; অসহায় স্বজনের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হয়, যখন কষ্টার্জিত লাখ লাখ টাকার সম্পদ চোখের সামনে পুড়ে ছাই হয়, তখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনও প্রশ্নের মুখে পড়ে বৈকি!

আমরা বরাবরই যা দেখি, দেশপ্রেম, ধৈর্য, সহনশীলতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ দেশের রাজনীতি থেকে উধাও। এ অবস্থায় বর্তমান রাজনীতিতে বেশি করে গণতন্ত্রচর্চা এবং দেশাত্মবোধ তৈরির জন্য আমাদের জোর দাবি তুলতে হবে এবং সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। তা না হলে দেশ দিন দিন আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে, যা জনগণ ও গণতন্ত্রের জন্য কখনোই কাম্য নয়। এ পরিস্থিতি আবার অগণতান্ত্রিক শক্তির উত্থানকে সুযোগ করে দিতে পারে। আমরা আর অশান্তি চাই না, সংঘাত চাই না; আর জ্বালাও-পোড়াও চাই না। আমরা শান্তি চাই। বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্রের ভিত রচনা করেছিলেন। গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি নির্বাচন। আগত নির্বাচন যেন সুষ্ঠু হয়, এই প্রত্যাশা সবার।

 

লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সমাজ গবেষক