শহীদ মিনার নিয়ে যুগে যুগে ষড়যন্ত্র হয়েছে 

কামালউদ্দীন আহমদ প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২, ০৭:৩৬ এএম

শহীদ দিবস ও শহীদ মিনার নিয়ে সব সময়ই ষড়যন্ত্র ছিল। স্বাধীনতার ঠিক অব্যবহিত পরই পরাজিত পাকিস্তানিদের একটি অংশ রাতের বেলা শহীদ মিনারের পরিবেশকে বিতর্কিত করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। তখন এখনকার মতো এতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। একটি রাজাকার গোষ্ঠী প্রাণপন চেষ্টা করেছিল শহীদ মিনারের পবিত্রতাকে নষ্ট করতে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধীশক্তি বেগবান হয়ে ওঠে। তখন প্রায়ই শহীদ মিনারে সংঘর্ষ হতো ফুল দেওয়া নিয়ে। শহীদ মিনারে নেতৃবৃন্দের কাপড় ছেড়ার ঘটনাও ঘটেছে। অর্থাৎ এসমস্ত করা হয়েছিল যাতে মানুষ শহীদ মিনারে যেতে নিরুৎসাহিত বোধ করে। আরেক আমলে তো সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি জুতা পরে শহীদ মিনারে উঠে যেত। এখনো একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী গ্রামেগঞ্জে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর বিষয়টি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বর্ণনা করে এবং শহীদ দিবস এলেই এদের তৎপরতা বেড়ে যায়।

স্বাধীনতার পূর্বে এবং ঠিক তারপর শহীদ দিবসকে ঘিরে যেভাবে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো তার অনেকটাই ৭৫ পরবর্তী সময়ে কমে গিয়েছিল। নিজামীরা তো কখনোই শহীদ মিনারে যায় নি। তারা আবার দেশ শাসনও করেছিল। এভাবে একটি দীর্ঘ প্রজন্ম বিভ্রান্ত হয়েছে। তারা ‘জীবন থেকে নেয়া‘ ছবির কথাও শোনেনি।

আমরা ভাগ্যবান যে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে এসেছিলেন এবং বাঙালির ইতিহাস ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখতে সাহসী ভূমিকা রেখেছিলেন। মৃত্যুর মুখোমুখি হলেও তিনি নিজের পথ থেকে সরে আসেননি। আজ যে সারা দেশে  সুষ্ঠুভাবে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের ব্যাপারটি, সেটি তাঁর নেতৃত্বেই সম্ভব হচ্ছে। আমদের সকলকে শহীদদের সম্মানে নিজ নিজ অবস্থান থেকে শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা করতে হবে, অন্যকে উৎসাহিত করতে হবে এবং শহীদ মিনার বিরোধীদের রুখতে হবে।

লেখক : ট্রেজারার ও সাবেক প্রক্টর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়