সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও সহিংসতার প্রতিবাদে সারা দেশে গণ-অনশন ও গণ-অবস্থান কর্মসূচি চলছে। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদে রাজপথে বিক্ষোভ করছে হাজারও মানুষ।
শনিবার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকে সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে গণ-অনশন ও গণ-অবস্থান এবং বিক্ষোভ করছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। সকাল ৬টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। দুপুর ১২টা পর্যন্ত তারা রাজপথে অবস্থান করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা সারা দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার জন্য দুঃখ ও নিন্দা প্রকাশ করেন। এ ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টদের প্রতি।
পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ বলছেন, '“ভোর থেকেই আমরা সহিংসতার প্রতিবাদে পথে আছি। ঢাকায় শাহবাগ চত্বর আর চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা চত্বরে হাজার হাজার মানুষ এই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন। আমাদের সংগঠন ছাড়াও নানা নাগরিক সংগঠন, সব ধর্মের মানুষ এই সমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করে অংশ নিয়েছেন।”
মনীন্দ্র কুমার নাথ আরও বলেন, “হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন্দির, বাড়িঘর ও স্থাপনায় যেসব হামলা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তার প্রতিবাদে সরকার জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। সরকারের সেই সিদ্ধান্তের দ্রুত বাস্তবায়ন ও সাম্প্রদায়িক চক্রান্ত প্রতিরোধে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।”
কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), বাংলাদেশ মতুয়া মহাসংঘ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতি, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি, বাংলাদেশ মাইনরিটি সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু লীগ, মাইনরিটি রাইটস ফোরামের নেতাকর্মীরা।
আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, বাংলাদেশ রবি দাস উন্নয়ন পরিষদের নেতাকর্মীরা।
গত ১৩ অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজার বিসর্জনের দিনে কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়া যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। পরদিন দেশের কয়েক স্থানে সংঘর্ষ এবং পূজামণ্ডপ ও মন্দিরে হামলা হয়। এ ঘটনায় ৭ জন নিহত হন।
এদিকে মন্দিরে কোরআন রাখা সেই ব্যক্তিকে সিসিটিভি ফুটেজে দেখে শনাক্ত করে পুলিশ। পরে তাকে কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মন্দিরে হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় দেশে অন্তত ৭১টি মামলা হয়েছে, যেসব মামলায় অন্তত ৪৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।