করোনা মহামারি ঠেকাতে অন্যান্য সুরক্ষার পাশাপাশি মাস্কের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ। এমনকি মাস্ক না পরায় জরিমানাও করা হয়েছে। ফলে মুদিদোকানগুলোতে আগে যেমন হরেক রকম পণ্য বিক্রি হতো, সেখানে এখন বিশেষ স্থান পেয়েছে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, স্যানিটাইজারসহ করোনা থেকে রক্ষার সুরক্ষা সামগ্রী। শুধু ফুটপাত, পাবলিক বাস, মোবাইল দোকান, চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মাস্ক।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর কারওয়ান বাজার, গুলিস্তান, মতিঝিল, ফার্মগেট, ধানমন্ডি, রামপুর, মগবাজার, উত্তরা, বনানীসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফুটপাতে এসব মানহীন মাস্ক বিক্রি চলছে। গণপরিবহন ও মুদিদোকানেও মাস্ক বিক্রি চলছে।
শুক্রবার সকালে ফার্মগেট ফুটওভার ব্রিজের নিচে ফুটপাত থেকে মাস্ক কিনছিলেন গার্মেন্টস কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম। এই মাস্কগুলোতে ধুলোবালি পড়ছে—প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে ওভাবে কখনো যাচাই করে দেখিনি। করোনার জন্য মাস্ক পরার দরকার তাই পরছি। তা ছাড়া অন্যান্য জায়গা থেকে এখানে দাম কম।
একই কথা বললেন আরেক যাত্রী জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, পাবলিক বাসে তো মাস্ক কম দামে হকাররা বিক্রি করেন, তাই এগুলো কিনি।
দেদার বিক্রি হওয়া এসব মাস্ক কতটুকু নিরাপদ কিংবা এসবের কোনো অনুমোদন আছে কি না, বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ফুটপাতের মাস্ক দিয়ে করোনা সুরক্ষা তো দূরের কথা বরং এতে আরও বেশি ঝুঁকি বাড়ে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা থেকে বাঁচতে একমাত্র তিন স্তরবিশিষ্ট মেডিকেল মাস্কই করোনা থেকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা দিতে পারে। এ কথা প্রযোজ্য কাপড়ের মাস্কের ক্ষেত্রেও। পথেঘাটে, ফুটপাতে যেসব কাপড়ের মাস্ক পাওয়া যায়, সেগুলোও নিশ্চিন্ত রক্ষাকবচ নয় বলে গবেষকদের অভিমত।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, করোনা থেকে রক্ষার জন্য কাপড়ের মাস্ক, তিন স্তরের মাস্ক ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। যেগুলো স্বাস্থ্যসম্মত এবং অতিমারি থেকে রক্ষা করতে পারে। কিন্তু ফুটপাতে, চা দোকানে, পাবলিক বাসে যে মাস্কগুলো বিক্রি হয়, সেগুলো অত্যন্ত মানহীন নিম্নমানের মাস্ক। এতে করোনা সুরক্ষা তো দূরের কথা আরও ঝুঁকির আশঙ্কা রয়েছে।
এ ধরনের মানহীন মাস্ক বিক্রি ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান লেলিন চৌধুরী।