করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রওনক মাহমুদের মা। বর্তমানে তিনি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছে। সচিবের মায়ের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতে তার চিকিৎসায় উপসচিবসহ ২৪ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়োজিত করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ আগস্ট) দেশের বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদনে জানা যায়, এ বিষয়ে লিখিত নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্ব সমন্বয় করছেন সচিবের একান্ত সচিব আজিজুল ইসলাম।
নির্দেশনায় বলা হয়, তিন দিনে চারটি শিফটে ৬ ঘণ্টা করে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। ২৩ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের সিস্টেম অ্যানালিস্ট মো. ইলিয়াস হোসেন ও অফিস সহায়ক মো. জাহিদুল ইসলাম, দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএলআরআই) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আসলামুল আলাম, ট্রেইনি সহকারী মো. সানোয়ার হোসেন, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত প্রাণসম্পদ অধিদপ্তরের (ডিএলএস) অ্যানিমেল প্রোডাকশন অফিসার আলী রেজা আহমেদ ও ল্যাব টেকনেশিয়ান বিভূ চন্দ, রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত মৎস্য অধিদপ্তরের (ডিওএফ) বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান ও ট্রেইনি সহকারী সানোয়ার হোসেন দায়িত্ব পালন করবেন।
২৪ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ডিওএফ এর পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা মো. রাশেদ পাভেজ এবং অফিস সহায়ক মো. নাজির হোসেন পারভেজ, দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিএলআরআই এর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আসলামুল আলাম, ট্রেইনি সহকারী মো. সানোয়ার হোসেন, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত প্রোগ্রামার নূর মোহাম্মদ ও অফিস সহায়ক মো. আব্দুল কাদের, রাত ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ডিএলএসের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ফারুক মিয়া ও ল্যাব টেকনেশিয়ান মো. শহিদ উল্যাহ দায়িত্ব পালন করবেন।
২৫ আগস্ট ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপসচিব পুলকেশ মন্ডল ও ট্রেইনি সহকারী জগদীশ চন্দ্র দাস, দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিএলআরআইয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আসলামুল আলাম ও ট্রেইনি সহকারী মো. সানোয়ার হোসেন, সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ডিওএফের পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা মো. সামছুল আলম পাটওয়ারী ও অফিস সহায়ক মো. মফিজ হোসেন, রাত ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ডিএলএসের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এস এম নিয়াজ মোর্শেদ ও ল্যাব টেকনেশিয়ান জি এম শাহিনুর ইসলাম দায়িত্ব পালন করবেন।
নির্দেশে আরও বলা হয়, সচিবের মায়ের করোনার সংক্রমণের সার্বিক অবস্থা সার্বক্ষণিক জানাতে হবে পিএসকে। চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ, টেস্ট করানোর ও তা দ্রুত সংগ্রহ করতে হবে। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সচিবের পিএসকে রিপোর্টের কপি পাঠাতে হবে।
এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে থাকতে হবে রোগীর কাছাকাছি থাকার কথাও বলা হয়েছে। কর্মকর্তাদের উপস্থিতির রোগীর অ্যাটেন্ডেটের কাছে জানানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে লিখিত নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সচিব রওনক মাহমুদ। সচিব বলেন, “এ বিষয়ে আমাকে আর জিজ্ঞেস করার দরকার নেই। আপনারা সরেজমিনে গিয়ে দেখেন, যেটি বাস্তব পাবেন, সেটি লেখেন।”
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের করোনা ইউনিটের সামনে ডিউটিরত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুইজন এ তথ্য স্বীকার করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তারা জানান, সচিবের মায়ের যেকোনো দরকারে তারা ৬ ঘণ্টা ধরে ডিউটি করছেন।