জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা মেনে চলবে বলে জানিয়েছেন সদ্য পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) দায়িত্ব পাওয়া র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন।
র্যাব ডিজি হিসেবে দীর্ঘ দুই বছরের বেশি সময় দায়িত্ব পালন শেষে আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে যোগ দেওয়ার আগে বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন। রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এ মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়।
আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, “আমি মনে করি, আগে যেভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে পেরেছি, অভিজ্ঞতার আলোকে আগামীতেও তেমনি আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞা থেকে দায়িত্ব পালন করতে পারব।”
নব নিযুক্ত আইজিপি আরও বলেন, “যখনই অপরাধ সংঘটিত হয় তখন কিন্তু আমরা থাকি না। প্রথমে থানা পুলিশ আসে। ম্যাজিস্ট্রেট আসে। সুরতহাল হয়। মরদেহ মর্গে নেওয়া হয়। অভিজ্ঞ চিকিৎসক ময়না তদন্ত সম্পন্ন করেন। থানায় মামলা হয়। ওপেন কোর্টে বিচার হয়। দুই পক্ষের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত দেন। এসবের মধ্যে র্যাবের কোনো ভূমিকা থাকে না। সরকার গণমাধ্যম এসব মনিটরিং করে। এখানে র্যাবের কতোটুকু ভূমিকা আছে সেটা আমারো প্রশ্ন। আমরা যা করি স্বচ্ছতার সঙ্গে করি।”
চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, “আভিযানিক কার্যক্রমে আমাদের লোকের প্রাণহানি-অঙ্গহানি হয়েছে। যাদের অঙ্গহানি হয়েছে তাদের চিকিৎসা আমরা করেছি। আমাদের দায়িত্ব চ্যালেঞ্জিং, যে কারণে আমার অনেক সহকর্মী চাকরি পর্যন্ত হারায়। আমি বিশ্বাস করি আগামীতেও র্যাবের প্রতিটি সদস্য সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবে। স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।”
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, “করোনার সময় পুলিশ, র্যাব জীবনের কতো ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছে, দায়িত্ব পালন করেছে। পুলিশ গিয়ে লাশ দাফন করেছে। আমরা জানি স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে এক অসম যুদ্ধে পুলিশ প্রথম ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সেই ঐতিহ্য স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করে পুলিশ কাজ করছে।”
এর আগে বক্তব্যের শুরুতেই র্যাব ডিজি তার দায়িত্ব পালনের সময়ে সাফল্যের বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, “২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল করোনাকালে র্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্বভার গ্রহণ করি আমি। প্রাণঘাতী এই মহামারির ভীত-বিহ্বল সময়টিতে নিজ বাহিনীর সদস্যদের সংক্রমণরোধ থেকে শুরু করে সরকার ঘোষিত লকডাউন নিশ্চিত এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা ছিল র্যাব ফোর্সেস এর জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ।”
র্যাব ডিজি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় র্যাবের জোরালো অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করে। সুন্দরবনের ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণের মাধ্যমে দস্যুমুক্ত হয় সুন্দরবন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে র্যাবের অভিযান ও প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের বাঁশখালী, মহেশখালী, কুতুবদিয়া অঞ্চলের ১২টি জলদস্যু বাহিনীর ৭৭ জন দস্যু বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করে।”