২০১৪ সালে রমনা থানা ছাত্রলীগের তৎকালীন সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান রানা হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান আসামি মো. ইকবাল হোসেন তারেককে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩। হত্যাকাণ্ডের পর পরিচয় গোপন করতে নিজের নাম পাল্টে তাহের নাম ধারণ করেছিলেন তিনি।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, তারেকের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। কিন্তু তিনি বেড়ে ওঠেন যশোরে। নিজ জেলা চাঁদপুরে তাকে কেউ চিনত না। সে কারণে হত্যাকাণ্ডের পর নিজের নাম-পরিচয় গোপন রেখে চাঁদপুর চলে যান তিনি। সেখানে চাষাবাদ শুরু করেন, কিন্তু চাষাবাদের কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় তিনি পুনরায় যশোর চলে যান। সেখানেও কিছুদিন পরিবহন শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তারপর মাদক ব্যবসা শুরু করেন।
এই র্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, ২০১৯ সালে আবারও ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় নিজেকে আব্দুর রহিমের ছেলে তাহের পরিচয় দিয়ে বসবাস শুরু করেন। শুরুতে গার্মেন্টস থেকে পরিত্যক্ত কার্টন সংগ্রহ করে বিক্রি করতেন। এ ব্যবসার আড়ালে ছিল মাদক ব্যবসা। তিনি ঘন ঘন বাসস্থান পরিবর্তন করতেন। সর্বশেষ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে তার প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) র্যাবের গোয়েন্দা দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আসামি তৎকালীন সুইফ ক্যাবল লিমিটেড নামক ডিস ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন কামরুল ইসলাম ও তানভিরুজ্জামান রনি। তাদের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান রানার ব্যবসায়িক বিরোধ ছিল।
এর জেরে ২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রানা মোটরসাইকেলযোগে মগবাজার চৌরাস্তাসংলগ্ন মসজিদের পাশের গলিতে প্রবেশ করলে বাটার গলির মুখে তার গতিরোধ করে এলোপাতাড়ি তাকে কোপানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, ২০১১ সাল থেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার আগ পর্যন্ত আসামি তারেক তৎকালীন সুইফ ক্যাবল লিমিটেড নামক ডিস ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। এ সময় তিনি গাঁজা ছেড়ে ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়েন এবং চাকরির পাশাপাশি মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন।
২০১১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তাকে মাদকসহ রমনা থানা-পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ওই সময় তিনি নিজেকে মো. ইকবাল হোসেন তারেক পরিচয় দেন। তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরিয়ে দেওয়ায় রানা গ্রুপের লোকদের হাত ছিল। সেই থেকে রানা গ্রুপের প্রতি তার ক্ষোভ তৈরি হয়। ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও ডিস মালিকের নির্দেশে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন তারেক।