মঙ্গলবার সকালটা বৃষ্টি দিয়েই শুরু রাজধানীবাসীর। গতকাল থেকেই ঢাকার আকাশ কালো করে মেঘ জমে। কিছু সময় ঝিরঝির বৃষ্টি হলেও স্থায়িত্ব ছিল না। কিন্তু ভোররাতে আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে।
বৃষ্টির পাশাপাশি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করায় মানুষকে গন্তব্যে যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তারপরও ভোগান্তি উপেক্ষা করে নিজ নিজ কর্মস্থলে যাচ্ছেন ঢাকাবাসী।
গত দুই দিন ঢাকায় হালকা বৃষ্টি ঝরেছে। সোমবারও ঢাকার অনেক স্থানে কিছু সময়ের জন্য বৃষ্টি হয়েছে। দিনভর মেঘলা থাকা আকাশ ভেঙে বৃষ্টি শুরু হয় ভোররাতে।
এদিকে আজ সারা দিন বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃষ্টির কারণে অফিসগামী মানুষ বিড়ম্বনায় পড়েছেন। অনেকে রেইনকোট ও ছাতা মাথায় গন্তব্যস্থলের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। বৃষ্টি থেকে অনেকে শরীরের উপরিভাগ রক্ষা করতে পারলেও শরীরের নিচের অংশ বাঁচাতে পারছেন না। কাদা আর পানিতে নিচের অংশ ভিজে একাকার হয়ে গেছে। সকাল থেকে আকাশ অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকায় হেডলাইট জ্বালিয়ে অনেক গাড়িকে চলতে দেখা গেছে।
গণপরিবহনের পাশাপাশি রিকশা-সংকট দেখা দেওয়ায় অনেকেরই অফিসযাত্রা বিলম্বিত হয়। এই সুযোগে যেসব রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলছে সেগুলোও ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ইচ্ছেমতো।
সকালের দিকে সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কম থাকলেও পরে গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। অনেক সিগন্যালে পরিবহনগুলো দীর্ঘ সময় যানজটে পড়ে থাকায় হেঁটে যাত্রীরা গন্তব্য স্থলে রওনা হয়েছেন।
রাজধানীর মহাখালী, সাতরাস্তা, মগবাজার, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, বাংলামোটরসহ বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
মহাখালী রেলগেট মোড়ে বিআরটিসি বাস থেকে নামেন বেসরকারি চাকরিজীবী সাদেকুল। হাতে ছাতা নিয়ে নামার সময় তার শরীরের নিজের অংশ ভিজে একাকার দেখা যায়। সাদেকুল বলেন, “ছাতা হাতে বাসা থেকে বেরোলেও তুমুল বৃষ্টি শরীরের নিচের অংশকে বাঁচাতে পারেনি।”
সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ফার্মগেট এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিলেন রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, “অফিসের নতুন শিডিউল হওয়ার পর প্রতিদিন সকাল সোয়া সাতটার দিকে বাসে উঠে মতিঝিল যাই। বৃষ্টির কারণে আজ ঘুম ভাঙতে একটি দেরি হয়েছে। দ্রুত বের হয়ে আটটায় এসে দেখি গাড়ির দীর্ঘ জট। কতক্ষণ অফিস পৌঁছাব তা নিয়ে টেনশনে আছি।”
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ঢাকার মতো দেশের অনেক স্থানেও বৃষ্টি হচ্ছে। রাজধানীতে সারা দিন মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ভারতের দক্ষিণ মধ্যপ্রদেশ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া ও বিজলি চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
বৃষ্টির প্রভাব থাকলেও সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।