‘নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করছিল চক্রটি’

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২২, ০৯:৩৬ পিএম

দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ভয়াবহ নাশকতা চালাতে একটি প্রতারক চক্র অবৈধ হ্যান্ড সেট বাজারজাতকরণের জন্য কাজ করছিল। এই হ্যান্ডসেটগুলো মূলত ব্যবহারের উদ্দেশে রাজধানীর বিভিন্ন মোবাইল মার্কেটসহ হাতে হাতে পৌছে দেওয়া হতো। এ পুরো প্রক্রিয়ার নেপথ্যে কারিগর ছিলেন মো. স্বপন (২৬)। যিনি নিজে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পার করতে না পারলেও নকল মোবাইল তৈরির মূল কারীগরি রপ্ত করেন ভালোভাবে।

সোমবার (৮ আগস্ট) র‍্যাব ও বিটিআরসির যৌথ উদ্দ্যোগে আভিযানিক দল রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. স্বপনকে গ্রেপ্তার করে।

এ সময় জব্দ করা হয় ভুয়া আইএমইআই নম্বর। ১ হাজার ৪৯৫ টি মোবাইল, ৩ হাজার ৩৭০টি নকল ব্যাটারি, ১২০টি হেড-ফোন, ৩৮৫টি চার্জার ক্যাবল, ১ হাজার ১৫৫টি মোবাইল চার্জার, একটি সিলার মেশিন, একটি হিট গান মেশিন, ৪৩টি এলসিডি মনিটর, ১০টি ইলেকট্রিক সেন্সর, ১৩টি আইএমইআই কাটার মেশিন। বিপুল পরিমাণ আইএমইআই স্টিকার ও ভুয়া বারকোডও জব্দ করেছে র‌্যাব।

সোমবার (৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব’র মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান লেফট্যানেন্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

কর্নেল আরিফ জানান, বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ স্বপনের মোবাইল কিনতেন। এসব মোবাইলে সিম ঢোকালে ‘বিটিআরসির ডাটাবেজে হ্যান্ড সেটটি নিবন্ধিত নয়’ মেসেজ পেতেন গ্রাহকরা। বিভিন্ন ধরনের সমস্যাও দেখা দিত নকল মোবাইলগুলোয়। অভিযোগ আসলে এসব মোবাইল গ্রাহকের কাছ থেকে নিয়ে সার্ভিসিং করে ফিরিয়ে দেওয়া হতো।

তিনি জানান, শো-রুম থেকে কেনার সময় মোবাইলগুলো ঠিক দেখতেন ক্রেতারা। কিন্তু শো-রুম থেকে বের হয়ে আসার পর থেকেই সমস্যা শুরু হতো। অনেক সময় নষ্ট মোবাইল সার্ভিসিংয়ে দিয়ে অনেক গ্রাহক আর সেটি নিতেন না। তখন মোবাইলটি ঠিক করে আরেক কাস্টমারের কাছে বিক্রি করতেন স্বপন।

কর্নেল আরিফ আরও জানান, এ পর্যন্ত স্বপনের চক্রটি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দশ হাজারের বেশি মোবাইল বিক্রি করেছে। এর মাধ্যমে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি।

আটক স্বপন পঞ্চম শ্রেণি পাস; কিন্তু প্রযুক্তিগতভাবে দক্ষ। গত এক বছর ধরে নিজের কারখানা পরিচালনা করছেন তিনি। কোনো লাইসেন্সও নেই তার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা মোবাইলের বিভিন্ন খুচরা যন্ত্রাংশ নিয়ে আসত।

স্বপনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তার অন্যান্য কর্মচারীদেরও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলে জানান লেফট্যানেন্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

এর আগে, দুই বছর আগে জামালপুরের বকশিগঞ্জ এলাকা থেকে কাজের সন্ধানে ঢাকায় আসেন মো. স্বপন। প্রথমে মতিঝিলে একটি অফিসে পিয়নের চাকরি নেন।