সম্পদ দখল করে দেশ ছাড়া করায় হিন্দু কমেছে : ফখরুল

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২২, ০৮:৫৯ পিএম

জনশুমারিতে হিন্দুদের সংখ্যার অনুপাত কমার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আওয়ামী লীগ এই ধর্মের সদস্যদের ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করে। কিন্তু ভোট শেষে অত্যাচার করে, সম্পদ কেড়ে নিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করে। এ কারণেই তাদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।”

সম্প্রতি নড়াইলের সাহাপাড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাটের বিষয়ে বিএনপির প্রতিনিধিদলের তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

এর আগে সদ্য করা জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে পরিসংখ্যান ব্যুরো। এতে জানানো হয়, দেশের জনসংখ্যার ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ এখন হিন্দু ধর্মাবলম্বী। ২০১১ সালের জনশুমারিতে হিন্দু ছিল ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। অর্থাৎ ১১ বছরে জনসংখ্যায় হিন্দুদের অনুপাত কমেছে দশমিক ৫৯ শতাংশ।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে পত্রিকায় এসেছে এবারের আদমশুমারিতে ২০১১ সালের চেয়ে হিন্দু জনসংখ্যা কমে গেছে, যা শতকরা এক ভাগেরও বেশি। হিসাবে দেখা গেছে, প্রায় ৭৫ লাখ।”

হিন্দু জনসংখ্যা কমার পেছনে আওয়ামী লীগকে সরাসরি দায়ী করে বিএনপি এই নেতা বলেন, “এটাকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। পরিকল্পিতভাবে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজনকে তাদের গৃহ থেকে, জমি থেকে উচ্ছেদ করে তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের সম্পদ দখল করা তাদের প্রধান লক্ষ্য হয়ে আছে। গণতন্ত্রের অভাবেই এটা হচ্ছে।”

ফখরুল বলেন, “আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রচারণা যখন থাকে, তখন তারা বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের রক্ষক দাবি করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাদের ওপরই অত্যাচারটা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের ওপর ক্রমান্বয়ে এবং ক্রমাগতভাবে অত্যাচার-নির্যাতন বেড়েই চলছে। দেখা যায় যে সম্পূর্ণভাবে তাদের লোকেরাই এ ঘটনাগুলোর সঙ্গে সরাসরি জড়িত।”

সাংবাদিকদের নিরপেক্ষভাবে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন, বাড়িঘর, সম্পত্তি দখলের পরিসংখ্যানগুলো দেখার আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে আসে, তখনই নড়াইলের মতো এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনা বাড়ে এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের জমিজমা, বাড়িঘর দখল করে। এমনকি ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের সময়টাতেও তাদের ওপর বেশি অত্যাচার হয়েছে ধর্মের ভিত্তিতে, তাদের জমিজমা দখল করে নিয়েছে।”

এ প্রসঙ্গে বান্দরবানের রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর, কুমিল্লা, দিনাজপুর, ঝিনাইদহ, পাবনা, যশোরের অভয়নগর, নাটোর ও নিজের এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন এবং তাদের বাড়িঘর, উপাসনালয়ে হামলার কথা উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সংবাদ সম্মেলনে নড়াইলের ঘটনার তদন্ত টিমের সদস্য অনিন্দ্য ইসলাম, জয়ন্ত কুমার কণ্ডু, ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা, অমলেন্দু দাস ও নিপুণ রায় চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।