রাজধানীতে চলন্ত বাসে এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে বিকাশ পরিবহনের চালক মো. মাহবুবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে লালবাগ থানা পুলিশ। সেই সঙ্গে বাসটি (ঢাকা-মেট্রো-ব-১২-০৬০৫) জব্দ করা হয়েছে।
বুধবার (২৭ জুলাই) রাতে আশুলিয়া থেকে চালক মাহবুবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে এ ঘটনায় লালবাগ থানায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা একটি মামলা করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনায় বাসের চালককে গ্রেপ্তার হয়। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত হেলপারকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. কুদরত-ই-খুদা।
কুদরত-ই-খুদা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “গত ২৪ জুলাই ভুক্তভোগী রাত পৌনে ৯টার দিকে ধানমন্ডি থেকে আজিমপুরে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে বিকাশ পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসে উঠে কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনতে শুনতে এক পর্যায়ে তিনি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। পরে রাত আনুমানিক ৯টা ১০ মিনিটের দিকে ভুক্তভোগী অনুভব করেন, তার শরীরে কেউ যেন হাত দিয়েছে। তাৎক্ষণিক তিনি তাকিয়ে দেখেন বাসে কোনো যাত্রী নেই এবং তার পাশের সিটে বাসটির হেলপার বসা। তখন ওই ছাত্রী বিপদ আঁচ করতে পেরে বাসের হেলপারকে তার পাশ থেকে ধাক্কা দিয়ে সরানোর চেষ্টা করেন। সিট থেকে দাঁড়িয়ে নামার চেষ্টা করলে হেলপার তাকে পেছন থেকে এক হাতে মুখ চেপে ধরেন। ওই ছাত্রী নিজেকে বাঁচানোর জন্য সর্বশক্তি দিয়ে হেলপারের কাছ থেকে ছুটে চালককে চিৎকার করে বাস থামাতে বলেন। কিন্তু চালক তখন বাস না থামিয়ে দ্রুতগতিতে ইডেন কলেজের সামনে দিয়ে আজিমপুরের দিকে যেতে থাকেন। এক পর্যায়ে আজিমপুর গার্লস স্কুলের কাছে বাসটির কিছুটা গতি কমলে ওই ছাত্রী লাফ দিয়ে বাস থেকে নেমে আত্মরক্ষা করেন।”
অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আরো বলেন, “ভুক্তভোগী ছাত্রী ঘটনাটি ফেসবুকে শেয়ার করে একটি পোস্ট দেন। এরপর লালবাগ থানা পুলিশ প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর ভুক্তভোগীকে চিহ্নিত করে তথ্য সংগ্রহ করে। সেখানে থাকা সিসি ফুটেজ পর্যালোচনা এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে বিকাশ পরিবহনের বাসটি শনাক্ত করা হয়। এরপর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাসের চালক মাহবুবুর রহমানের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে বুধবার ঢাকার আশুলিয়া থানায় লালবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার কে এন রায় নিয়তির নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।”
এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চেষ্টায় থাকা ওই শিক্ষার্থীর বাসা ঢাকার আজিমপুর এলাকায়। এদিকে গ্রেপ্তার মাহবুবুর রহমানকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।