দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক থাকার পর ২০১৪ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মালেকা আক্তার ও মো. ফেরদৌস আহমেদ। তাদের দাম্পত্যজীবনে পাঁচ বছরের একটি সন্তানও রয়েছে। মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার একই এলাকার বাসিন্দা তারা। এরই মধ্যে দুই বছর আগে পিংকী নামের এক নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে ফেরদৌসের। এই পরকীয়া সম্পর্ককে কেন্দ্র করে প্রতিদিন পারিবারিক কলহ লেগে থাকত মালেকা ও ফেরদৌসের মধ্যে। এরই জের ধরে ১৯ জুলাই পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে লাথি মেরে হত্যা করেন ফেরদৌস।
ঘটনায় পরের দিন (২০ জুলাই) মালেকা আক্তারের ভগ্নিপতি মো. তোতা মিয়া সাটুরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর থানাধীন বেগুন টিউরী এলাকা থেকে ফেরদৌসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন ফেরদৌস।
সোমবার (২৫ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।
এসএসপি মুক্তা ধর বলেন, “গত দুই বছর আগে মানিকগঞ্জ সদরে পিংকী নামের এক নারীর সঙ্গে ফেরদৌসের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি মালেকা জানতে পারলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়। এই কলহের জের ধরে ফেরদৌস প্রায় সাত মাস আগে মালেকাকে ডিভোর্স দেন।
মুক্তা ধর আরও বলেন, “ডিভোর্সের এক মাস পর স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যস্থতায় ফেসদৌস আবার মালেকা আক্তারকে বিয়ে করে সংসার করতে থাকেন। এরই মধ্যে মালেকা প্রায় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। কিন্তু ফেরদৌসের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক বজায় থাকায় তাদের মধ্যে পুনরায় দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। ১৯ জুলাই রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় একই বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে আবারও কলহের সৃষ্টি হয়। কলহের একপর্যায়ে ফেরদৌস অন্তঃসত্ত্বা মালেকার পেটে উপর্যুপরি লাথি-ঘুষি মারলে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে ফেরদৌস চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর বাড়ির লোকজন তাদের কোনো সাড়া না পেয়ে ঘরে গিয়ে মালেকাকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসককে ডেকে নিয়ে আসেন। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মালেকাকে মৃত ঘোষণা করেন।”