বাসের কাগজপত্র চুরি করে চাঁদাবাজি, গ্রেপ্তার ৪

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০২২, ০১:২৮ পিএম

যাত্রীবেশে বাসে উঠে গাড়ির মূল কাগজপত্র চুরি করার পর হুমকির মাধ্যমে চাঁদা আদায় করার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শনিবার (১৬ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার বসিলা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন রাকিব মিয়া ওরফে তুফান (২৭), মো. শুকুর আলী (২৮), মো. হৃদয় হোসেন (২১) ও মো. শামীম (২৫)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত সিমসহ ২টি মোবাইল সেট, বিভিন্ন বাসের রেজিস্ট্রেশন সনদ, ফিটনেস সনদ ও ট্যাক্স টোকেনের মূল কপি জব্দ করা হয়।

সিআইডি জানায়, আটকে রাখা গাড়ির কাগজপত্র ফেরত দেওয়ার শর্তে মিরপুর লিংক, খাজাবাবা ও বিকল্প পরিবহন বাসের মালিকদের মাসিক চাঁদা দিতে বাধ্য করা হতো। বাসের মালিকরা মাসিক চাঁদা দিতে রাজি না হলে চক্রের মূল হোতা তুফান নাম পরিচয় দিয়ে মালিকদের হুমকি দিতেন। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গাড়ির মালিকরা রাজধানীর বিভিন্ন থানায় বিষয়টি অবহিত করে সাধারণ ডায়েরি করেন। কিন্তু তাতেও কোনো ফল না পাওয়ায় বাসমালিকরা বিষয়টি সিআইডিকে অবহিত করেন।

রোববার (১৭ জুলাই) সকাল ১১টায় সিআইডির সদর দপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির ঢাকা মেট্রোর অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন।

অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ইমাম হোসেন জানান, একটি সংঘবদ্ধ চক্র ২০২০ সাল থেকে ঢাকা শহরে চলাচলরত মিরপুর লিংক, শিকড় পরিবহন, খাজাবাবা পরিবহন, প্রজাপতি পরিবহন, রবরব পরিবহনসহ অন্যান্য পরিবহনের বাসে যাত্রীবেশে উঠে অভিনব কায়দায় বাসের ব্লু-বুক ও রেজিস্ট্রেশন সনদসহ অন্যান্য কাগজপত্র চুরি করে। এরপর তারা গাড়ির মালিক, ম্যানেজার ও ড্রাইভারদের নম্বর সংগ্রহ করে চোরাইকৃত প্রতিটি গাড়ির কাগজের জন্য ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করে।

ইমাম হোসেন আরও জানান, মালিকরা প্রথম দিকে চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে চক্রটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ক্ষতিসাধন ও চালকদের প্রাণনাশের হুমকি দিত। কাগজপত্রবিহীন অবস্থায় রাস্তায় বাস চালাতে না পারায় বাসের মালিকরা চক্রের দেওয়া মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা বলে বিকাশের মাধ্যমে চাঁদা দিতেন। তখন চক্রটি টাকা পেয়ে কিছু গাড়ির কাগজপত্র ফেরত দিত এবং কিছু কাগজপত্র আটকে রাখত।

অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের পরিচয় গোপন করার লক্ষ্যে ঢাকা শহরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকা থেকে মোবাইল চুরি করে এবং ওই মোবাইল নিয়ে ফোন করে বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয়।

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে শাহ আলী থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।