সপ্তাহের ব্যবধানে বন্যার অযুহাত দেখিয়ে বাজারে বাড়তে শুরু করেছে সবজির দাম। বিক্রেতাদের দাবি, দেশের প্রায় এলাকায় বন্যা সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষেতেই সবজি নষ্ট হচ্ছে। তাই কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
শুক্রবার (১ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও আশে-পাশের বেশ কিছু বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৪০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া দাম কমানোর ঘোষণা দিলেও কমেনি সয়াবিনের তেলের দাম। আগের মতো চালের বাজারও চড়া। তবে, দাম বাড়েনি ব্রয়লার মুরগি, পাকিস্তান মুরগী, ও গরুর মাংসের। মাছের দাম অপরিবর্তিত আছে।
বন্যার কারণ দেখিয়ে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় অধিকাংশ সবজির দামই কেজি প্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীরা। বাজারে টমেটো প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেককে ১৩০ টাকা, বরবটি শিম ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৫০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস আকারভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, মিষ্টিকুমড়ার কেজি ৪০ টাকা।
এ ছাড়া আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি, পটল ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ৭০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, শসা ৬০ টাকা। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, রসুন মানভেদে ৬০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, আদা ১০০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি। গরুর মাংস ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, খাসির মাংস ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুদি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি মসুর ডাল ১৩০ টাকা কেজি, মুগ ডাল কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১৩৫-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম অপরিবর্তিত আছে বোতলজাত সয়াবিন তেলের। আগের দামেই বোতলজাত সয়াবিন তেল ২০৭ টাকা লিটারে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ সরকার সপ্তাহ আগে লিটারে ৭ টাকা কমিয়েছে সয়াবিন তেলের দাম। কিন্তু ব্যবসায়ীরা সরকারের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আগের দামে বিক্রি করছে।
চালের বাজারে দেখা যায়, মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ থেকে ৭০ টাকা কেজি, আটাশ চাল ৫৫ টাকা কেজি, নাজিরশাইল ৭০ টাকা থেকে ৭৫ টাকায়, পাইজাম ৫৩ টাকা কেজি এবং আতপ চাল ৫০ টাকা কেজি। এছাড়া প্যাকেটজাত পোলাও চাল ১৪০ টাকা, খোলা পোলাও চালের দাম ১২০ টাকা কেজি।
মাছের বাজারে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত আছে মাছের দাম। বাজারে ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৩৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। রুই মাছ ২২০ টাকা থেকে শুরু করে ৩৫০ টাকা, শিং মাছ ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি, কাতল ২২০-৪০০, তেলাপিয়া ১৬০-২২০, পাঙ্গাস ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দাম বাড়ার বিষয়ে মুদি দোকানি মোজাম্মেল হক সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “আমরা যে দামেই পণ্য কিনি সীমিত লাভে তা বিক্রি করতে হয়। অতিরিক্ত লাভ করেন বড় ব্যবসায়ীরা। তারা বিভিন্ন অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়ানোর ফলে আমাদের ব্যবসা করতেও সমস্যায় পড়তে হয়। দাম বাড়লে কাস্টমারদের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়।”
মনোয়ারুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “যেভাবে ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে, সে তুলনায় আয় বাড়েনি। এতে করে পরিবারের চাহিদা পূরণে বাড়ছে ঋণের বোঝা। আগে একাধিক খাবারের আইটেম থাকত। এখন খাদ্যপণ্যের দাম বেশি হওয়ায় খাবারের সেই আইটেম কমানো হয়েছে “
বাজার করতে আসা জুনায়েদ সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চাল-ডাল-তেল-মসলাসহ সব ধরনের জিনিপত্রের দাম বেড়েছে। এতে করে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। এখন নতুন করে বন্যার অযুহাত দেখিয়ে সবজির বাড়ানো হচ্ছে।”