স্ত্রীকে ছাড়িয়ে নেওয়ায় শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যা

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২২, ০৪:৪৯ পিএম

সাতক্ষীরার দেবহাটায় স্ত্রীকে ছাড়িয়ে নেওয়ায় ক্ষোভে শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যা করেছে জামাতা। গত ২১ জুন দিবাগত রাত একটার দিকে উপজেলার মাটি কুমড়া গ্রামে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম- আজগার আলী সরদার (৫৫)। তিনি দেবহাটা উপজেলার মাটি কুমড়া গ্রামের মৃত সুরত আলী সরদারের ছেলে।

এ ঘটনায় সিআইডির এলআইসি’র একটি চৌকস টিম অভিযান চালিয়ে ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে মামলার মূল আসামি সালাউদ্দিন সানাকে (২৮) গ্রেপ্তার করে।

সিআইডি জানায়, নিজ ঘরের বারান্দায় ঘুমন্ত অবস্থায় সাবেক শ্বশুর আজগর আলীকে মেয়ের জামাই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পরে আশপাশের লোকজন তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করলে তাকে সেখানে নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরে চিকিসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যায়।

বুধবার (২৯ জুন) দুপুর ১২টায় রাজধানীর মালিবাগের সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।

গ্রেপ্তার আসামির বরাত দিয়ে এসএসপি মুক্তা ধর বলেন, “আজগর আলী তার আপন খালু এবং দ্বিতীয় শ্বশুর। ইতোপূর্বে তিনি ২০১৫ সালে আশাশুনি থানাধীন পাইতলী এলাকার খোকন শেখের মেয়েকে প্রথম বিয়ে করে। এই সংসারে ৫ বছরের একটি শিশু সন্তান আছে। পরবর্তীতে তিনি তার খালাতো বোন শিল্পী পারভীনকে (২২) ২০১৮ সালে বিয়ে করেন। তাদের বর্তমান সংসারে কোনো সন্তানাদি নেই। তিনি মাঝে মাঝে ক্ষেত-খামারে দিনমজুরের কাজ করতেন। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে তার স্ত্রী শিল্পী পারভীনকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করছিলেন।”

বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, “গত ৮ জুন রাতে শিল্পী পারভীনকে যৌতুকের দাবিতে মারপিট করার খবর পেয়ে তার বাবা আজগর আলী মোটরসাইকেল ভাড়া করে দেবহাটা থেকে কালিগঞ্জ থানাধীন তার মেয়ের শ্বশুর বাড়ি গিয়ে তাদের কাছে বিস্তারিত ঘটনা জানতে চায়। তখন আসামি মো. সালাউদ্দিন সানার দাবিকৃত যৌতুকের এক লাখ টাকা দিতে আজগর আলী রাজি হয়। কিন্তু রাতেই নগদ টাকা দিতে হবে, না দিলে তার মেয়ে শিল্পী পারভীনের সঙ্গে ঘর-সংসার করবে না মর্মে হুমকি দেয়। তখন মো. সালাউদ্দিন সানার পরিবারের সদস্যদের দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় কাজী সাহেবের মাধ্যমে শিল্পী পারভীনকে ডিভোর্স করে আজগর আলী তাকে সঙ্গে করে দেবহাটাস্থ তার নিজ বাড়িতে চলে যায়।”

এসএসপি মুক্তা ধর বলেন, “সালাউদ্দিন সানা তার সঙ্গে শিল্পী পারভীনকে ডিভোর্স করে নিয়ে যাওয়ায় আজগর আলীর ওপর কঠিন প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। তার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দুই বন্ধুর সঙ্গে পরামর্শ করে দিন তারিখ চূড়ান্ত করেন।”

এ ঘটনায় আজগর আলীর ছেলে মো. মিজানুর রহমান (২৮) কর্তৃক সালাউদ্দিন সানাকে প্রধান আসামি করে এজাহারনামীয় ২ ও অজ্ঞাতনামা ২/৩ আসামির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা থানায় মামলা দায়ের করা হয় বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।