আগামী ১ জুলাই থেকে ঢাকা শহর রাত ৮টার পর বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেছেন, “পৃথিবীর সব শহরেই একটি সময়সীমা আছে, ঢাকা শহরের কোনো সময়সীমা নেই। আমরা এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।”
শুক্রবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এবং বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা (ইউআরপি) বিভাগ কর্তৃক এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
শৈশবের স্মৃতি বিনিময় করে মেয়র বলেন, “ছোটবেলায় আমি বৃষ্টি পছন্দ করতাম। বৃষ্টিতে ভিজে আনন্দ করতাম। আমার মনে হয়, বৃষ্টির সঙ্গে বাঙালি জাতিসত্তার অন্তর্নিহিত একটা সম্পর্ক আছে। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে বৃষ্টি হলে আমার ভয় লাগে, জলাবদ্ধতা ও ডেঙ্গু বিস্তারের কারণে।
তিনি বলেন, “৩৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে ঢাকা শহর নিমজ্জিত হয়ে যায়। সুন্দর ঢাকার জন্যে আমরা ১০টি খেলার মাঠ তৈরি করেছি। খালগুলো দখলমুক্ত করা হয়েছে ও নান্দনিকভাবে অবকাঠামো স্থাপনার কাজ শুরু হবে। আইন অনুযায়ী, সব জলাশয়, খাল, পুকুরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। ঢাকায় ৩টি গাছ লাগালে ১টি কদমফুল গাছ লাগাবেন। কদমফুল এমন ১টি গাছ যেখানে বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ এসে বসে। জীববৈচিত্র্য দিকে খেয়াল রেখে আমরা মশার ওষুধ দিয়ে থাকি।”
লকডাউনের সময়ের কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, “করোনার সময় জনজীবন যখন স্তব্ধ ছিল তখন আমরা প্রকৃতিতে সজীবতা জেগে ওঠতে দেখেছি। কারণ প্রকৃতির বিশ্রাম করার সময় লাগে। আমরা সারাদিনই ঢাকার ওপর অত্যাচার করব আর ঢাকা আমাকে সুন্দর পরিবেশ উপহার দেবে, তা আশা করা ঠিক নয়।”
মেয়র বলেন, “ঢাকা সিটি করপোরেশনের যে নর্দমাগুলো আছে সেগুলো পানি নিষ্কাশনের জন্য; পয়ঃবর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য নয়। পয়ঃবর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করবে ঢাকা ওয়াসা। কিন্তু ওয়াসা পয়ঃবর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করে এগুলো আমাদের নর্দমায় দিয়ে দেয়। ফলে নর্দমাগুলো থেকে পয়ঃবর্জ্য খালে চলে যায়। এ বিষয়ে ১ জুলাই থেকে কঠোর বাস্তবায়নে যাব।”
তিনি আরও বলেন, “ঢাকা শহরে ইমারত নির্মাণ করলে অবশ্যই সেখানে সোক ওয়েল ও সেপটিক ট্যাংক থাকতে হবে। ইমারতে এগুলো না থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের খালগুলোর যে পানি তা দেখলে আপনাদের কারো ভালো লাগবে না। কারণ আমাদের সকল পয়ঃবর্জ্য নিষ্কাশন হয় এসব খাল দিয়ে। অথচ খালগুলো দিয়ে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের কথা। কিন্তু সেখানে বৃষ্টির পানির সঙ্গে পয়ঃবর্জ্য যোগ হয়ে খালগুলো এখন পয়ঃনিষ্কাশনের হয়ে গেছে।”