আগামী অর্থবছরে (২০২২–২৩) ল্যাপটপের দাম বাড়ছে না কমছে এ নিয়ে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) উত্থাপিত বাজেটে আমদানি করা ল্যাপটপের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ল্যাপটপ কিনতে গুনতে হবে বাড়তি অর্থ। অপরদিকে বলা হয়েছে দেশে উৎপাদিত কম্পিউটার ও আইসিটি পণ্যের দাম কমতে পারে।
এ বিষয়টি নিয়ে দেশে একটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া চলছে। ল্যাপটপের দাম কমবে না বাড়বে বিষয়টি অনেকেই বুঝতে পারছে না।
এর আগে, বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, “ল্যাপটপ কম্পিউটার আমদানিতে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) অব্যাহতি রয়েছে। ফলে দেশীয় কম্পিউটার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে। তাই ল্যাপটপ কম্পিউটার আমদানিতে ১৫ শতাংশ মূসক আরোপ করার প্রস্তাব করছি।”
আরেক বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে কম্পিউটার সামগ্রীর মধ্যে ডেস্কটপ, প্রিন্টার ও অন্যান্য কম্পিউটার ও আইসিটি পণ্যে ৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে স্থানীয় শিল্পের বিকাশে ওই শুল্ক প্রত্যাহারের প্রস্তাব আসছে। ফলে দেশে উৎপাদিত কম্পিউটার ও আইসিটি পণ্যের দাম কমতে পারে।”
‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামের এই বাজেটে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে করোনা মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের অভিঘাতের বিষয়টি। বিশেষ করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, কর্মসংস্থান সৃজন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় নিয়ে আসা, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা— এই বিষয়গুলোকে বাজেটে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। নতুন বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এতে মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। আগামী অর্থবছরের বাজেটে বড় ব্যয়ের বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যেখানে বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি থাকবে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
২০২২-২৩ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি।
প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের আয়ের খাতগুলো থেকে কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা।
নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আর কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।