তিন ধরনের সিগারেটের সম্পূরক শুল্ক অপরিবর্তিত থাকছে। তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমানো ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ফলে সিগারেট কিনতে ধূমপায়ীদের এখন আগের চেয়ে বেশি খরচ করতে হবে।
তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমানো ও রাজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
চার প্রকারের সিগারেটের মধ্যে অতি উচ্চস্তরের সবচেয়ে দামি সিগারেটের দাম বাড়বে সবচেয়ে বেশি। অতি উচ্চস্তরের ১০ শলাকার সিগারেটের দাম ১৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নিম্নমানের ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৩৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়েছে। তবে সম্পূরক শুল্ক ৫৭ শতাংশই থাকছে।
উঁচুমানের ১০ কাঠির দাম ১০২ টাকা থেকে ১১১, মাঝারি মানের ১০ কাঠি সিগারেটের দাম ৬৩ টাকা থেকে ৬৫, সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের ১০ কাঠি সিগারেটের দাম ১৪২ টাকা ধার্য করা হয়েছে। এই তিন ধরনের সিগারেটের সম্পূরক মূল্য ৬৫ শতাংশ অপরিবর্তিত থাকছে। তবে বিড়ি ও জর্দার দাম পূর্ববর্তী বছরের মতোই অপরিবর্তিত থাকছে।
এর আগে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার এ বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে বেলা ১২টার পর জাতীয় সংসদ ভবনে এ বৈঠক শুরু হয়। এতে অর্থমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা অংশ নেন।
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। আগামী অর্থবছরের বাজেটে বড় ব্যয়ের বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যেখানে বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি থাকবে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
২০২২-২৩ অর্থবছরে আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা, যা চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের তুলনায় ৪৪ হাজার ৭৯ কোটি টাকা বেশি।
প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের আয়ের খাতগুলো থেকে কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার।
এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।