যৌতুকের জন্য রোজিনাকে হত্যা করে শফিকুল

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: মে ৩০, ২০২২, ০২:১৮ পিএম

সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ উপজেলার বাজার গ্রামের শেখ রায়হান আলীর মেয়ে রোজিনা খাতুনের (৩৩) সঙ্গে বছর দেড়েক আগে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর থানার মোহনপুর এলাকার তাইজুল ইসলামের ছেলে শফিকুল ইসলামের (৩২) বিয়ে হয়। কালিগঞ্জ থানা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে ভ্যান চালানোর কাজ করতেন শফিকুল। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে তার স্ত্রী রোজিনাকে প্রায়শই শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করছিল বলে জানায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি জানায়, শনিবার (১৪ মে) বিকেল ৪টায় রোজিনাকে যৌতুকের দাবিতে মারধর করার খবর পায় তার বাবার বাড়ির লোকজন। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত জেনে স্বামী শফিকুলের দাবিকৃত যৌতুকের এক লাখ টাকা দিতে রাজি হয়। কিন্তু রাত সাড়ে ১১টার সময় যৌতুকের টাকা নিয়ে ফের কথা-কাটাকাটি হলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রোজিনাকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায় শফিকুল।

রোববার (২৯ মে) দিবাগত রাতে সিআইডির এলআইসি শাখার একটি টিম অভিযান চালিয়ে সিএমপির আকবর শাহ থানাধীন এলাকা থেকে শফিকুল ইসলামকে (৩২) গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শফিকুল সিআইডিকে জানায়, এ পর্যন্ত সে (শফিকুল) ৪টি বিয়ে করেছে। প্রথম বিয়ে, ২০০৯ সালে তার নিজ এলাকার কোহিনুর খাতুনকে (১৮)। সংসার মাত্র ২ মাস স্থায়ী হয়। দ্বিতীয় বিয়ে, ২০১১ সালে একই থানাধীন ফুলবাড়ী এলাকার শাহিদা খাতুনকে (২১)। এ সংসারের স্থায়ীত্ব ছিল ১ বছর ২ মাস। তাদের দাম্পত্য জীবনে জান্নাতি (৯) নামে একটি মেয়ে সন্তান ছিল। তৃতীয় বিয়ে ২০১৪ সালে চট্টগ্রামের ফয়েজ লেক এলাকায় ড্রাইভিং পেশায় নিয়োজিত থাকাকালে রাশেদা বেগমকে (৩১)। তাদের দাম্পত্য জীবনে খাদিজা আক্তার সুমাইয়া (৭) নামে একটি মেয়ে আছে। সংসার বর্তমান থাকাবস্থায় ২০২০ সালে চতুর্থ বিয়ে করে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থানাধীন রোজিনা বেগমকে (৩৩)। তাদের সংসারে কোনো সন্তানাদি নেই।

সোমবার (৩০ মে) বেলা ১১টায় রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।

বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, “শফিকুল ইসলাম ইতোপূর্বে তার সব স্ত্রীকেই যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে তাদের পরিবারের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের যৌতুক আদায় করেছে।”

এ ঘটনার বিষয়ে ভিকটিম রোজিনা বেগমের ভাই মো. আবু হাসান (২৯) শফিকুলসহ আরও অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনের বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

মুক্তা ধর আরও বলেন, “গ্রেপ্তার শফিকুলের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আরেকটি মামলা চলমান আছে।”