রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে গ্যাস সংকটের সুরাহা হয়নি ৯ দিনেও। এ নিয়ে আয়োজিত গণশুনানিতে গিয়ে গ্রাহকদের তোপের মুখে পড়েন তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। এসময় সংস্থার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ তোলেন গ্রাহকরা।
কামরাঙ্গীরচরে কয়েক লাখ মানুষের বাস। এ এলাকায় গ্যাসের বৈধ গ্রাহক সাড়ে ১২ হাজার হলেও অবৈধ গ্রাহক এক লাখেরও বেশি। গত ১০ মে পুরো এলাকার সংযোগই বিচ্ছিন্ন করে তিতাস। আর এতে সমস্যা পোহাচ্ছেন সবাই।
গত ৯ দিন দুর্ভোগের পর বৃহস্পতিবার (১৯ মে) স্থানীয় অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজন করা হয় গণশুনানির। এতে অংশ নিয়ে বৈধ গ্রাহকরা গ্যাস না পাওয়ার অভিযোগ করেন।
এক গ্রাহক বলেন, “আমাদের মা-বোনের কত কষ্ট করে এলপিজি গ্যাসে রান্না করে। আর অনেকের গ্যাস কেনার সামর্থ্য নেই তারা চুলায় রান্না করে। রাত ১২টার দিকে গ্যাস আসে আবার ফজরের সময় চলে যায়। বকেয়া বিল তুলতে এসে জিম্মি করে টাকা তোলেন কর্মকর্তারা। ঘুষ নিয়ে লাইন পাওয়া গেলেও পাওয়া যায় না গ্যাস।”
আরেক গ্রাহক বলেন, “১০ দিন ধরে গ্যাস নেই। কোনো রকম পারমিশন ছাড়াই গ্যাস বন্ধ করা হয়েছে। এখানে তিতাসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা এবং কিছু কন্ট্রাকটরও আছে, তারা প্রতি বাড়ি বাড়ি গিয়ে গোপনে আঁতাত করে মাসিক বিল দেন ও মাসিক বিল নিয়ে তারা গ্যাস দেন।”
সবার অভিযোগ শোনার পর বক্তব্য দেন তিতাসের তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. হারুনুর রশীদ মোল্লাহ্। এ সময় ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা শুরু করেন হট্টগোল।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিতাসের এমডি বলেন, “সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিতাসের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী যদি জড়িত থাকে, আমাকে খালি তার নামটা দেবেন। আমি তার শাস্তি দেই কি দেইনা সেটা দেইখেন।”
বকেয়া টাকার অন্তত অর্ধেক পরিশোধ হলেও আবার সংযোগ দেবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি। তবে এর আগে শুরু হবে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান।
তিতাসের এমডি আরও বলেন, “অবৈধ, আমাদের সঙ্গে কোনো বৈধতা নেই। এগুলো নিজেরা বিচ্ছিন্ন করবে। না করলে আমার টিম যদি যায় তারা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেবে, পরে আর বৈধ চুলার পারমিশন পাবেন না।”
কামরাঙ্গীরচরে শুধু বাসা বাড়ি নয় বহু কারখানাও চলে অবৈধ সংযোগে। এমন অভিযোগ করেন বাসিন্দারাই। মোট গ্যাসের বড় অংশই এ কারখানা পায় বলে বঞ্চিত হন গ্রাহক।