পথচারী নন, ব্যবসায়ীদের পক্ষে সংঘর্ষে ছিলেন নাহিদ

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২২, ০৯:১৯ পিএম

নিউমার্কেটে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত নাহিদ মিয়াকে নিয়ে ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। ঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, নিরীহ পথচারী হিসেবে সংঘর্ষে নিহত হন তিনি। নাহিদের পরিবারও দাবি করে, বাসা থেকে দোকানে যাওয়ার সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন নাহিদ। অথচ বিভিন্ন ভিডিও ও আলোকচিত্রে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। সেগুলোতে দেখা যায়, ব্যবসায়ীদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সংঘর্ষে সরাসরি অংশ নেন নাহিদ। তিনি কখনও ছাত্রদের দিকে ইট ছুড়ছেন, কখনও বড় ছাতার আশ্রয় নিয়ে ছাত্রদের ছোড়া ইট থেকে নিজেকে রক্ষা করছিলেন।

একপর্যায়ে বিপরীত দিকে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের পক্ষে থাকা একদল হেলমেটধারী তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। নুরজাহান মার্কেটের সামনে মারধরের শিকার হন নাহিদ। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে রাত সোয়া ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বেলা ১টার দিকে ব্যবসায়ীরা ছাত্রদের ধাওয়ার মুখে কিছুটা পিছু হটলে নুরজাহান মার্কেটের সামনে আটকে পড়েন নাহিদ। সকাল থেকেই ঢাকা কলেজের ছাত্রদের পক্ষে সংঘর্ষে অংশগ্রহণকারী হেলমেটধারীরা এ সময় তাকে বেদম মারধর করেন। আঘাতে ফুটপাতে লুটিয়ে পড়েন নাহিদ।

জানা যায়, নিহত নাহিদ মিয়ার বাসা কামরাঙ্গীরচরের মধ্য রসুলপুর এলাকায়। কাজ করতেন এলিফেন্ট রোডের মাসুমা প্লাজার দ্বিতীয় তলায় ‘ডেটাটেক’ নামের একটি কম্পিউটার বিক্রির প্রতিষ্ঠানের ডেলিভারিম্যান হিসেবে।

ডেটাটেকের ইনচার্জ ‍রেজাউল করিম সংঘর্ষের সময়ের ভিডিও ও ছবি দেখে নাহিদকে শনাক্ত করে বলেন, “ছবিতে যে টি-শার্টটি দেখা যাচ্ছে, তা রাউটার কোম্পানি ডি-লিংকের। ওই টি-শার্ট আমরাই ওকে দিয়েছিলাম।”

একই বর্ণনা দিয়ে নাহিদের খালা মনিকা আক্তার বলেন, “সকালে অফিসে যাওয়ার কথা বলে এই টি-শার্ট পরেই নাহিদ বাসা থেকে বের হয়। যাওয়ার পথে মারামারি মধ্যে পড়ে। কারা মারছে আমরা জানি না।”

এ দিকে বুধবার (২০ এপ্রিল) রাতে নাহিদ হত্যার ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় হত্যা মামলা করেন তার চাচা মো. সাইদ। এতে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাত প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ জনকে।

এর আগে, মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ হয়। এতে বেধড়ক মারধরে জ্ঞান হারিয়ে দীর্ঘ সময় রাস্তায় পড়েছিলেন নাহিদ। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।