সংসদের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২২, ০৭:৩৭ পিএম

জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের রফিকুল ইসলাম নামে এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। ওই কর্মকর্তার শাখায় তার অধীনে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত একজন নারী সহকর্মী লিখিতভাবে এই অভিযোগ করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর রফিকুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সংসদ সচিবালয়।

সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, গত ২৮ মার্চ ওই নারী সংসদ সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ডিসিপ্লিন অ্যান্ড প্রিভিলেজ শাখা।

অবশ্য ওই কর্মকর্তা পবিত্র ওমরাহ পালনের জন্য ছুটিতে রয়েছেন। রোববার দুপুরে তার সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনের নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, রফিকুল ইসলাম বেশ কিছু দিন ধরে ভুক্তভোগী নারী সহকর্মীকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও আপত্তিকর কথাবার্তা বলে আসছেন। অফিসকক্ষ ফাঁকা থাকলে অফিস সহায়ককে অন্য কোথাও পাঠিয়ে দিয়ে ওই নারী কর্মকর্তাকে আপত্তিকর কথাবার্তা বলতেন। ওই নারীকে কক্ষে ডেকে নিয়ে গিয়ে কম্পিউটারে আপত্তিকর ছবি বের করে বলেন, এগুলো দেখলে মনে প্রশান্তি আসবে। ওই কর্মকর্তা ওই নারীকে মার্কেটে এবং বন্ধুর বাসায় যাওয়ারও প্রস্তাব দেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ওই নারী ওয়াশরুমে যাওয়ার পথে মাঝে মাঝে ওই কর্মকর্তা পথরোধ করার চেষ্টা করেন। ইজ্জত রক্ষার কথা ভেবে ওই নারী চুপ ছিলেন। কিছুদিন আগে ওই কর্মকর্তা অফিসকক্ষ ফাঁকা পেয়ে ওই নারী সহকর্মীর গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন, চিৎকার করলে তার মুখ চেপে ধরেন এবং ঘটনা কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকি দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, “ওই কর্মকর্তা (রফিকুল ইসলাম) জোর করে অনেকবার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছেন। অনেক অনুনয়-বিনয়, অনুরোধেও তাকে থামাতে পারিনি। চাকরি আর লোকলজ্জার ভয়ে দিনের পর দিন সহ্য করে গেছি। শুধু আমি নই, এখানে যেসব নারী বদলি হয়ে আসেন তাদের সঙ্গেও একই রকম ব্যবহার করা হয়। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে সবাই চুপ থাকেন।”

ভুক্তভোগী নারীর স্বামীও সংসদের একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, “নিরাপত্তাহীনতায় আমরা সংসদ সচিব মহোদয়কে অবহিত করেছি। তার (রফিকুল ইসলাম) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে লিখিত অভিযোগও করেছি। আসলে আমরা দুজনই ভেঙে পড়েছি মানসিকভাবে। লোকলজ্জার ভয়ে আর কতদিন এ ধরনের নির্যাতন সহ্য করা যায়। আশাকরি স্পিকার মহোদয় এর সুষ্ঠু বিচার করবেন।”