অটোরিকশার চালক সেজে আসামি ধরলো পুলিশ

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২২, ১১:২২ পিএম

ঘটনাটি গত ১০ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। রাজধানীর কলাবাগানের বাসা থেকে ক্যাম্পাসে যাচ্ছিলেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। পথে সেন্ট্রাল রোডের ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের সামনের রাস্তায় দিনদুপুরে শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন এক অটোরিকশাচালক। এ সময় ওই শিক্ষার্থীর চিৎকারে আশপাশের কয়েকজন এগিয়ে এলে দ্রুত পালিয়ে যায় অটোচালক।

ঘটনার পরপরই ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী ছুটে যান ধানমন্ডি থানায়। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় কলাবাগান থানায়। ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। পরে ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজে লাঞ্ছনার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় গত ১৩ মার্চ লিখিত অভিযোগটিকেই মামলায় রূপান্তরিত করা হয়। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় কলাবাগান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমানকে। অভিযুক্ত চালক ও অটোরিকশাটিকে শনাক্ত করতে মাঠে নামেন এসআই সাইদুর। ২২ দিনের চেষ্টায় আসামি ধরতে সফল হন তিনি।

এসআই সাইদুর রহমান বলেন, “ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ পাওয়ার পরে প্রথমে সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করি। তখন ঘটনার সত্যতা পাই। সেইসঙ্গে অটোরিকশাটির নম্বর পাই। কিন্তু অটোরিকশাটি শনাক্ত করতে পারছিলাম না। এরপর নিজেই অটোরিকশাচালক সেজে মিরপুর, খিলগাঁও, উত্তরা, ধানমন্ডি, হাজারিবাগ এলাকায় ঘুরতে থাকি। এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে যে গ্যারেজে সন্দেহ হতো সেখানে যেতাম।”

এসআই সাইদুর আরো বলেন, “শুক্রবার (৮ এপ্রিল) রাতে যাত্রাবাড়ী থানার ধোলাইপাড় এলাকার একটি গ্যারেজে গিয়ে অটোরিকশাটি শনাক্ত করি। এরপর কৌশলে চালককে ডেকে এনে গ্রেপ্তার করা হয়। চালকের নাম মো. সুজন তালুকদার (২৯)। বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলায়। সে গত এক বছর ধরে অটোরিকশা চালাচ্ছেন।”

গ্রেপ্তারের পর চালক সুজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন বলে জানান এসআই সাইদুর।

কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিতোষ চন্দ্র পাল বলেন, “ঘটনার পরপরই আমরা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অটোরিকশাচালকের ছদ্মবেশে অভিনব উপায়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে।

শ্লীলতাহানির ঘটনায় জড়িত চালককে গ্রেপ্তারে খুশি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মা বলেন, “অনেকদিন ধরেই বিষয়টির কোনো সমাধান হচ্ছিল না। এ নিয়ে প্রতিবাদ করেছি। আমরা লেগে ছিলাম।” তিনি আরো বলেন, “আমার মেয়ে ঘটনার পরে একাই থানায় গিয়েছে। পরে আমি মেয়েকে নিয়ে গিয়ে কলাবাগান থানায় অভিযোগ দিয়েছি। আমি আমার মেয়েকে ভেঙে পড়তে দিইনি।”