আকাশ পর্যন্ত দূষিত হচ্ছে

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২২, ০৭:৫৫ পিএম

শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ, মাটি দূষণ এমনকি আকাশ পর্যন্ত দূষিত হয়ে যাচ্ছে। দূষণে দূষণে একাকার। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে পরিবেশ নিয়ে ভাবতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটসের উদ্যোগে ‘পরিবেশ-প্রতিবেশ দূষণে হুমকিতে জনজীবন’ শীর্ষক ওয়েবিনারে তারা এ কথা বলেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিবিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ এইচ এম সাদাত বলেন, “দেশের উন্নয়ন দর্শন নিয়ে চিন্তার সময় এসেছে। আমরা কি শুধুই অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকটি দেখবো না সার্বিক পরিবেশ-প্রতিবেশকে মূল্যায়ন করবো? বর্তমানে সেই জায়গায় হাত দেয়ার কথা ভাবতে হবে। কেননা যে উন্নয়ন জীবনকে, অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে তা কি সত্যিই উন্নয়ন?”

অধ্যাপক সাদাত আরো বলেন, “শুধু ঢাকা বা শহরাঞ্চলের উন্নয়ন পুরো দেশের উন্নয়ন নয়। এই উন্নয়নে পরিবেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করছে তাকে কিভাবে উন্নয়ন বলা যায়। অতএব উন্নয়ন হতে হবে সার্বিক কল্যাণে।”

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নাক-কান-গলা সার্জারি বিভাগের প্রধান এবং অ্যাসোসিয়েশন অব সার্জনস ফর স্লিপ অ্যাপনিয়া বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু বলেন, “পৃথিবীতে মানুষের বসবাসের বয়স ৪ মিলিয়ন বছর। আমাদের জীবনধারণটি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কেননা আমরা সূর্য ডুবলে ঘুমিয়ে যাই ও সূর্য উঠলে জেগে উঠি। পৃথিবীতে এটির সময় ২৪ ঘণ্টা ও মঙ্গলগ্রহে ২৪.২ ঘণ্টা। সেভাবেই আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্য গঠিত ও পরিচালিত হয়। ২০ হাজার বছর আগে আমরা বনজঙ্গল, পাহাড়-পর্বত ও নদী বা সাগরের কাছে বসবাস করতাম। সে কারণেই আমরা অবসরে সেসব জায়গায় চলে যাই।”

ডা. মনিলাল আরো বলেন, “বিদ্যুৎ আবিষ্কারের আগে জীবন ছিল প্রকৃতিনির্ভর। লাইট ইমভেশনের কারণে জীবনে ডিপ্রেশন ও ম্যানিয়া দেখা দিয়েছে। ঘুম কম হচ্ছে, মানসিক বৈকল্য দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় আমরা শিল্প-কলকারখানা, বিদ্যুৎ, মোবাইল, তথ্য-প্রযুক্তিকে অস্বীকার করতে পারি না। তবে এসবের ভালো ব্যবহার করতে পারি।”

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যায়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, “জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া শব্দের পরিমাপ আমরা অনেক আগেই অতিক্রম করেছি। দেশের শব্দ ও বাতাসের দূষণ এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, তা থেকে সহজে ফিরে আসাটা কঠিন। এ নিয়ে পথেঘাটে কাজ করতে গিয়ে আমার নিজের কানই সমস্যা দেখা দিয়েছে। দুটি কানের শ্রবণ সমস্যা প্রকটাকার ধারণ করেছে।”

অধ্যাপক ড. এ এইচ এম সাদাত এতে সভাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু প্রধান অতিথি ও অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখবেন। পরিবেশচিন্তক নিয়ন মতিয়ুলের উপস্থাপনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির আহ্বায়ক ফারুক আহমাদ আরিফ। আরো অংশ নেন ড. মাহমুদা পারভিন ও ড. গুলশান আরা লতিফা ও গণমাধ্যমে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা।