এবার মানুষ শুনবে না, রুখে দাঁড়াবে : ফখরুল

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২২, ০৪:০১ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

আগের মতো নির্বাচন করার জন্য এ সরকার আরেকটি নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। এবার মানুষ আর সেটা শুনবে না, এবার তারা রুখে দাঁড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আপনারা জানেন তারা গণতন্ত্র ও নির্বাচন সম্পর্কে কী করছে। নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে, যাতে আরেকটা সে ধরনের নির্বাচন করা যায়। এবার মানুষ আর সেটা শুনবে না। এবার মানুষ রুখে দাঁড়াচ্ছে ও দাঁড়াবে ইনশা আল্লাহ। আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের মানুষ কখনো পরাজিত হয়নি। এ দেশের মানুষ রুখে দাঁড়াবে, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করবে।”

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় গৃহবন্দী করে রেখেছে। তাকে মুক্ত করতে হবে। আমাদের নেতা তারেক রহমান মিথ্যা মামলা নিয়ে বিদেশে নির্বাসিত অবস্থায় আছেন। তাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তাদের মুক্ত করতে হবে।”

এ সময় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ একজন আপাদমস্তক গণতান্ত্রিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “অনেকে বলেন তিনি (মওদুদ) এরশাদের মন্ত্রিসভায় গিয়েছিলেন। সেটাও তিনি গণতন্ত্রের স্বার্থেই গিয়েছিলেন। গণতন্ত্র কীভাবে রক্ষা করা যায়, কীভাবে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা যায়, সে স্বার্থে তিনি গিয়েছিলেন। আজকে আওয়ামী লীগের সরকার কাউকে মূল্য দিতে জানে না।”

ফখরুল আরও বলেন, “দেশের স্বাধীনতার ব্যাপারে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের যে কী অবদান রয়েছে, সে অবদান আমরা জানি। ছাত্রজীবন থেকে তিনি মানুষের কল্যাণের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি জেলে গিয়েছেন। এরপরে প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি অবদান রেখেছেন। আজকে আমরা যখন তার স্মরণসভা করছি, তখন বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। এ গণতন্ত্রের জন্য তিনি (মওদুদ আহমদ) সংগ্রাম করেছেন, এ গণতন্ত্রের জন্য তাকে বাসভবন থেকে উৎখাত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তিনি কখনো মাথানত করেননি।”

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, দ্রব্যমূল্যের জন্য মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে গেছে। সরকার সেটাকে অস্বীকার করছে। মন্ত্রীরা হেসে হেসে বলেন, দাম যেমন বেড়েছে আয়ও বেড়েছে। কার আয় বেড়েছে? এরা জিডিপির শুভঙ্করের ফাঁকি দেখায়। জিডিপি কাকে বলে। সবকিছু মিলিয়ে যেটা আসে তাকে বলে জিডিপি। তারপরে বলে পার কেপিটা ইনকাম (মাথাপিছু আয়) এত হয়েছে। কীভাবে হিসাব করে। আমি আয় করি মাসে ৫০ হাজার টাকা, আর আমার যে ভাই আয় করে মাসে পাঁচ হাজার টাকা। দুটো কি এক? দুটো মিলিয়ে যদি হিসাব করেন তাহলে তো ওর আসবে ২৫ হাজার, আমার আসবে ২৫ হাজার। এই দেশের ৯০ ভাগ মানুষের আয় কম। দরিদ্রের সংখ্যা শতকরা দুই ভাগ বেড়েছে।”

এ সময় স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার এম আজিজুল ইসলামের পরিচালনায় স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সহধর্মিণী পল্লীকবি জসীমউদ্‌দীনের কন্যা হাসনা মওদুদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, ঢাবির সাবেক ভিসি প্রফেসর আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী, তাঁতী দলের যুগ্ম আহবায়ক কাজী মনিরুজ্জামান প্রমুখ।