টিকাপ্রত্যাশী মানুষের ভিড়ে হুড়োহুড়ি ও বিশৃঙ্খলা

আবদুল্লাহ আল মামুন প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২, ০৪:২৮ পিএম

টিকা দিতে লাগছে না কোনো নিবন্ধন। জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধন না থাকলেও শুধু মোবাইল নম্বর থাকলেই টিকা দেওয়া যাচ্ছে। সেজন্য টিকার প্রথম ডোজ নিতে নির্ধারিত কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ঢল নেমেছে।

দেশের সব মানুষকে করোনা টিকার আওতায় আনতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারিত কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অস্থায়ী কেন্দ্রগুলোতে টিকা দেওয়া হচ্ছে। শনিবার সারা দেশে এক কোটি ডোজ টিকার দেওয়া লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। 

আগ্রহী টিকাপ্রত্যাশীর তুলনায় বুথের সংখ্যা কম ও খোলামেলা জায়গায় না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

সকাল থেকে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে বিভিন্ন টিকা কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘ লাইনে টিকা নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন শত শত মানুষ। কেউ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে, কেউবা আবার একাই এসেছেন টিকা নিতে। নারী-পুরুষের আলাদা সারি তৈরি করা হয়েছে।

কেন্দ্রগুলোতে দেখা গেছে, অনেকেই মাস্ক ছাড়াই এসেছেন টিকা নিতে। কিছু কেন্দ্র থেকে তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে মাস্ক। কিছু কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ানো নিয়েও সৃষ্টি হচ্ছে বাকবিতণ্ডার। তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছেন দায়িত্বরতরা।

এদিকে অনেকেই জন্মনিবন্ধন কার্ড বা এনআইডি কার্ড ছাড়াই এসেছেন টিকা নিতে। তবে তাদের ক্ষেত্রে টিকা দেওয়া শেষে একটি টিকা কার্ড দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই কার্ড দেখিয়ে দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করতে হবে এবং কার্ডটি ভালোভাবে সংরক্ষণের পরামর্শও দিচ্ছেন তারা।

টিকা কেন্দ্রর কর্মরত কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সকাল ৮টা থেকে টিকা দেওয়া শুরু করলেও সকাল ৬টার পর পর সাধারণ মানুষ এসে লাইন ধরেছেন। টিকা কেন্দ্রে আরও বুথ বাড়ানোর দরকার ছিল বলে জানান টিকা নিতে আসা লোকজন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মানুষের বিপুল আগ্রহে গণটিকার মেয়াদ আরও দুদিন বাড়ছে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ক্যাম্পেইনের আওতায় টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

চলমান টিকা কর্মসূচি ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চললেও স্বাভাবিক টিকা কার্যক্রম চলমান থাকবে। তখন দ্বিতীয় ডোজ আর বুস্টার ডোজের পাশাপাশি কেউ প্রথম ডোজের জন্য এলেও তাদের টিকা দেবে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র।

দেশে করোনার গণটিকাদান শুরু হয় গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি। এরপর থেকে বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত করোনার প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন ১০ কোটি ৮ লাখের বেশি মানুষ। আর এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছেন ৮ কোটি ১৭ লাখের বেশি মানুষ।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশিদ আলম জানিয়েছিলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারির পর প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া বন্ধ থাকবে। পরে অবশ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, ২৬ ফেব্রুয়ারির পরও প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া বন্ধ হবে না। তবে প্রথম ডোজের চেয়ে দ্বিতীয় ও বুস্টার (তৃতীয়) ডোজকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে।