ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নৌ-নিরাপত্তা অধ্যাদেশের মামলায় অভিযান-১০-এর আরো দুই চালককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন হলেন— লঞ্চের ইনচার্জ ড্রাইভার মাসুম বিল্লাহ ও সেকেন্ড ড্রাইভার আবুল কালাম।
রোববার রাজধানীর মতিঝিলে স্থাপিত বিশেষ বিচারক (যুগ্ম জজ) জয়নব বেগমের নৌ-আদালতে আসামিরা হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন।
তবে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন শুনানিতে বলেন, “দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সাধ্যমতো চেষ্টা করেও সফল হননি তারা। তাদের কোনো অবহেলা ছিল না।”
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রসিকিউটিং অফিসার বেল্লাল হোসাইন জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, “ইঞ্জিনরুম থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। তারা যদি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তদারকি করে সঠিকভাবে ইঞ্জিনরুম পরিচালনা করতেন তাহলে হয়তো স্মরণকালের এই ভয়াবহ ট্রাজেডি এড়ানো যেত।”
প্রসিকিউটিং অফিসার আরো বলেন, “ইঞ্জিনরুমের সার্বিক দায়িত্ব ইঞ্জিন ড্রাইভারদের ওপর বর্তায়। কিন্তু তারা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেননি। কেবল দায়িত্বে অবহেলাই নয়, অগ্নিকাণ্ডের পরও তাদের ভূমিকা ছিল ধৃষ্টতাপূর্ণ ও পলায়নপর।”
২৩ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা থেকে যাত্রী নিয়ে বরগুনায় যাওয়ার পথে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায় অভিযান-১০। ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছে পুলিশ। আহত ও দগ্ধ হয়েছেন অন্তত ৮০ জন।
সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান পরিদর্শক শফিকুর রহমান বাদী হয়ে রোববার মতিঝিলের নৌ আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় লঞ্চের মাস্টার ইনচার্জ রিয়াজ সিকদার ও দ্বিতীয় মাস্টার খলিলুর রহমান আত্মসমর্পণ করার পর জামিন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখ বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার হলেও তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ।
মামলায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-নিরাপত্তা অধ্যাদেশ ১৯৭৬ (সংশোধিত ২০০৫)-এর ৫৬, ৬৬, ৬৯ ও ৭০ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এসব ধারায় আসামিদের সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।