স্বামীর অবৈধ সম্পদে ফাঁসলেন স্ত্রী

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২১, ০৯:৩৬ পিএম

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং কমিশনে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের মতিঝিল শাখার ব্যবস্থাপক মো. মহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই মামলায় এই তিতাস কর্মকর্তার স্ত্রী সাফিয়া শাহানাকেও আসামি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান সরকার বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলাটি করেন।

মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে দুদকের জনসংযোগ দপ্তর জানিয়েছে, দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তাদের বিরুদ্ধে এ মামলা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সম্পদ বিবরণীর তলবি নোটিশের জবাবে আসামি সাফিয়া শাহানা দুই কোটি ৮৫ লাখ ৪৩ হাজার ৬৬১ টাকার সম্পদের হিসাব উপস্থাপন করেন। যার মধ্যে ঢাকার গুলশান থানাধীন উলন মৌজায় ১.৫০ কাঠা জমিতে ৬ তলা নির্মিত বাড়ি, ঢাকার খিলগাঁও থানাধীন শহর-খিলগাঁও মৌজায় জমি, ঢাকার দক্ষিণখানে ২ কাঠা জমি, টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ৩৭ শতাংশ জমি ও বারিধারায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

এছাড়া গাজীপুরের বড়বাড়ীতে জ্যারোমা সিএনজি অ্যান্ড ফিলিং স্টেশনের ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ অংশীদারত্ব, আরেক সিএনজি স্টেশনের ৪৫ শতাংশ অংশীদারত্ব, একটি ব্যক্তিগত গাড়ি ও ফার্নিচারসহ মোট ৪ কোটি ৪ লাখ ৪৪ হাজার ১৩২ টাকার সম্পদ দেখানো হয়। অন্যদিকে তার ব্যাংক ঋণ/দায় পাওয়া যায় এক কোটি ১৯ লাখ ৪৭১ টাকা।

ঋণ বা দায় বাদে আসামি সাফিয়া শাহানার নামে অর্জিত নিট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় দুই কোটি ৮৫ লাখ ৪৩ হাজার ৬৬১ টাকা।

দুদক জানায়, সাফিয়া শাহানার আয়-ব্যয়ের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় এক কোটি ৯০ হাজার ৫০০ টাকা ও পারিবারিক ব্যয় ১৮ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা। কাজেই পারিবারিক ব্যয়সহ নিট সম্পদ অর্জনে ব্যয়িত মোট (দুই কোটি ৮৫ লাখ ৪৩ হাজার ৬৬১ ও ১৮ লাখ ৩৭ হাজার ৮০০) তিন কোটি তিন লাখ ৮১ হাজার ৪৬১ টাকার বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় এক কোটি ৯০ হাজার ৫০০ টাকা।

আয় অপেক্ষা অতিরিক্ত (তিন কোটি তিন লাখ ৮১ হাজার ৪৬১ টাকা ও ১ কোটি ৯০ লাখ ৫০০) ২ কোটি ২ লাখ ৯০ হাজার ৯৬১ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের স্বপক্ষে আয়ের গ্রহণযোগ্য কোনো উৎস অনুসন্ধান বা সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই অবৈধ সম্পদ তার স্বামী তিতাস কর্মকর্তা আসামি মো. মহিদুর রহমানের অবৈধভাবে অর্জিত। 

তবে স্ত্রী সাফিয়া শাহানা দুদকে এক কোটি ৪৫ লাখ ৩৬ হাজার ৬৬৮ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করায় এ দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।