ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান ছাত্রদল করতেন বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তবে পরে অবশ্য মুরাদ ছাত্রলীগে যোগ দেন বলেও জানান তিনি।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীতে স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ফখরুল এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মুরাদ হাসানের বক্তব্য–সংবলিত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। মুরাদের সেসব বক্তব্যের সমালোচনা করতে গিয়েই এ তথ্য দেন বিএনপির মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, “দুর্ভাগ্যের কথা, সে নাকি ছাত্রদল করত। সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ছিল। পরবর্তীকালে অবশ্য সে ছাত্রলীগে যোগদান করেছে। ধিক্কার দিই আমি তাকে।”
এদিকে ফখরুল যখন এ কথা বলেন, তখন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় তলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুবদলের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহিন দাঁড়িয়ে ছিলেন।
তখন তিনি বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের দ্বিমত পোষণ করে যুবদলের ওই নেতা বলেন, “ প্রতিমন্ত্রী মুরাদ কখনো ছাত্রদল করেননি।”
একপর্যায়ে ফখরুলের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন এই যুবদল নেতা। এ সময় মির্জা ফখরুল তাকে থামিয়ে বলেন, “ইউ ডোন্ট নো। তুমি বাজে কথা বলবে না। তুমি জানো না। চুপ করো।
এসময় মঞ্চে থাকা নেতাদের দিকে তাকিয়ে মির্জা ফখরুল জিজ্ঞেস করেন, ‘কে এটা? হো ইজ দিজ বয়?’
তারপরও যুবদল নেতা শাহিন পুনরায় মহাসচিবের সঙ্গে তর্ক শুরু করলে পুরো মিলনায়তনে কর্মীরা ক্ষুব্ধ হন। এসময় মহাসচিব তাকে চুপ করতে বলেন এবং নিচে নেমে মঞ্চে আসার জন্য বলেন। তখন মিলনায়তনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন।
এই সময়ে মঞ্চে থাকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ, দক্ষিণের আবদুস সালাম হাত উঠিয়ে তাকে চুপ করতে বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সম্প্রতি মুরাদ হাসান তার এক বক্তব্যে বলছেন, ‘যা কিছু করছি, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করছি এবং তিনি সবকিছু জানেন।’ এই বক্তব্যটুকু অত্যন্ত মারাত্মক।”
এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দ্যেশ করে ফখরুল বলেন, “এই কথা সত্য কি মিথ্যা আপনাকে জানাতে হবে। কারণ আপনি প্রধানমন্ত্রী। এই দেশের মানুষের নিরাপত্তা এবং নিজের মর্যাদাকে রক্ষা করা ও একই সঙ্গে এই ভয়াবহ উক্তি যদি দেশের একজন মন্ত্রী করতে পারে, আপনার সরকারের অবস্থান কী, আমরা জানতে চাই। এটার উত্তর দিতে হবে। কারণ এতে আপনাকে জড়িয়ে কথা বলা হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নব্বইয়ের সাবেক ছাত্র নেতার মধ্যে আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নাজিম উদ্দিন আলম, জহির উদ্দিন স্বপন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাইফুদ্দিন মনি, খন্দকার লুৎফুর রহমান, আসাদুর রহমান খান, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, শ্রমিক দলের মুস্তাফিজুল করীম মজমুদার, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।