মার্চে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৬৩ জন

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৫, ০৫:১৬ পিএম
সংবাদ সম্মেলন। ছবি : সংগৃহীত

চলতি বছরের মার্চে ৪৪২ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তারমধ্যে ধর্ষণ ১৬৩ এবং ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়েছেন ৭০ জন।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৫টি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে সাম্প্রতিক নারীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মার্চে মোট ৪৪২ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১২৫ জন শিশুসহ ১৬৩ জন। তার মধ্যে ১৮ জন শিশুসহ ৩৬ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে, ২ শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে, ২ শিশু ধর্ষণের কারণে আত্মহত্যা করেছে। এ ছাড়া ৫৫ জন শিশুসহ ৭০ জন ধর্ষণের চেষ্টার শিকার হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নারী ও কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতার মাত্রা পূর্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে। কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। মাত্রা ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে ১৮ বছরের নিচে কন্যাশিশুদের ওপর।

বক্তারা অভিযোগ করেন, ধর্ষণ ও নারীর প্রতি যৌন সহিংসতার বিচারের দীর্ঘসূত্রতা হ্রাসের ক্ষেত্রে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বাতিল প্রসঙ্গে বক্তারা বলেন, “নারীর জন্য ৬০ শতাংশ কোটা বহাল ছিল। কিন্তু আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে লক্ষ্য করছি যে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ খসড়া প্রজ্ঞাপনে এ বিধান রহিত করা হয়েছে। এ পদক্ষেপ নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী শিক্ষাকে অগ্রসর করার জন্য অসংগতিপূর্ণ।”

এ সময় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫-এ নারী কোটা বহাল রাখার দাবি জানায় সংগঠনটি।

বাংলাদেশে মহিলা পরিষদ জানায়, আমরা দেখতে পাচ্ছি অতীতের মতো সুপারিশ পেশের সঙ্গে সঙ্গে মৌলবাদী, নারী বিদ্বেষী গোষ্ঠী ধর্মের দোহাই দিয়ে নারীর অধিকার এবং নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছে। আমরা আশা করব, এ অপতৎপরতা, অপকৌশল রোধে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর মানবাধিকার রক্ষা করার ক্ষেত্রে সরকার, সব রাজনৈতিক দল ও সমাজ এগিয়ে আসবে।

সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রতিক নারীর মানবাধিকার পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে ৭টি সুপারিশ করা হয়।

সেগুলো হলো,
১. নারীবিদ্বেষী প্রচার-প্রচারণা বন্ধের লক্ষ্যে এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
২. নারীর প্রতি সব প্রকার সহিংসতার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
৩. মব সহিংসতার অবসানে যাবতীয় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে।
৫. নারী নির্যাতন ও সহিংসতার বিষয়ে বাস্তব তথ্য প্রদানে গণমাধ্যমকে আরও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

[114300]
৬. মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির প্রয়াস প্রতিহত করতে হবে।
৭. সমতাপূর্ণ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় নীতিমালাবিরোধী অপতৎপরতা প্রতিহত করতে হবে।