মাগুরার সেই শিশুটির আরও বিপদ, যা জানালেন চিকিৎসকেরা

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৫, ০২:৫১ পিএম
ছবি : সংগৃহীত

মাগুরার সেই শিশুর শারীরিক অবস্থার আবারও অবনতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। বুধবার (১২ মার্চ) সকালে সে দুবার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (হঠাৎ হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যাওয়া) আক্রান্ত হয়। চিকিৎসকদের হস্তক্ষেপে তার হৃৎস্পন্দন ফিরিয়ে আনা সম্ভব হলেও শিশুটি এখনো সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে।

শিশুটি বর্তমানে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) শিশু বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।

সিএমএইচে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের এক চিকিৎসক জানান, শিশুটির অবস্থা চরম সংকটাপন্ন। বুধবার সকাল আটটার দিকে প্রথমবার তার হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যায়, চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় হৃৎস্পন্দন ফিরলেও কিছুক্ষণ পর আবারও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। দ্বিতীয়বারও চিকিৎসার মাধ্যমে তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়। তবে শিশুটির মস্তিষ্ক কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না, তার গ্লাসগো কোমা স্কেল (জিসিএস) মাত্র ৩, যা মস্তিষ্কের সম্পূর্ণ অচেতন অবস্থার ইঙ্গিত দেয় (স্বাভাবিক মানুষের জন্য এই মাত্রা ১৫)।

চিকিৎসকেরা আরও জানান, ঘটনার সময় শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়, যার ফলে তার মস্তিষ্কে দীর্ঘসময় অক্সিজেনের অভাব ঘটে। ঘটনার পরপরই তাকে হাসপাতালে এনে অক্সিজেন দিলে এতটা গুরুতর ক্ষতি নাও হতে পারত।

গত ১ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে তার মা অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান তার বোনের শাশুড়ি। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। পরদিন সন্ধ্যায় তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়।

সিএমএইচে শিশুটির চিকিৎসায় আট সদস্যের বিশেষ মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, যেখানে সার্জিক্যাল, নিউরোলজি, হৃদরোগ, প্রসূতি, অ্যানেসথেসিয়া, ইউরোলজি ও থোরাসিক সার্জনসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রয়েছেন।

মাগুরার এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সারা দেশে। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। এর মধ্যেই দেশের আরও ছয় স্থানে নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে জনমনে ক্ষোভ আরও বাড়ছে।