বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সংঘাত ও ক্ষমতার পালাবদলের পর বিদেশি দাতা সংস্থা থেকে ঋণের মৌখিক আশ্বাস মিললেও তার সুফল মিলছে না। বিদেশি অর্থ ছাড়েও গতি ফেরেনি, ফলে এ সময়ে দেশে যত বিদেশি ঋণ এসেছে, সুদ ও আসল মিলিয়ে পরিশোধ করা হয়েছে তার চেয়ে বেশি।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরের বিদেশি অর্থ ছাড় ও বিদেশি ঋণের তথ্য প্রকাশ করেছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম চারমাসে বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯৩ শতাংশ।
গত অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে যেখানে ৩৬২ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি মিলেছে, সেখানে চলতি অর্থবছরের একই সময়ে পাওয়া গেছে ২৫ কোটি ৪৫ ডলারের; যা শতাংশে ৯৩ শতাংশ কম।
হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় দাতা সংস্থা ও দেশ প্রতিশ্রুতি দেওয়া বিদেশি ঋণ ও অনুদানের মধ্যে ১২০ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করেছে।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে অর্থ ছাড়ের পরিমাণ ছিল ১৬২ কোটি ৬১ লাখ ডলার। এ হিসেবে ৪২ কোটি ৪১ লাখ ডলারের অর্থ ছাড় কম হয়েছে, শতাংশের হিসেবে ২৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ কম।
[105474]
একই সময়ে সুদ ও আসল মিলিয়ে ১৪৩ কোটি ৭৯ লাখ ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ এই তিন মাসে ঋণ ছাড়ের চেয়ে ঋণ পরিশোধ ২৩ কোটি ডলারের বেশি ছিল; যা দেশে ছাড় হওয়া বৈদেশিক ঋণের তুলনায় ১৯ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি।
সাধারণত অর্থ ছাড়ের তুলনায় ঋণ পরিশোধের পরিমাণ কমই থাকে, আগের দুই অর্থবছরের চিত্র এমনটাই ছিল।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৯৮৬ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। এ সময় বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল মিলিয়ে বাংলাদেশকে প্রায় ৩৩৬ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়।
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের মধ্যে জুলাই ও অগাস্টের বড় অংশজুড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সরকার পতনের উত্তাল সময় দেখেছে দেশ। আন্দোলনে সহিংসতায় বাধাগ্রস্ত হয়েছে প্রকল্পের কার্যক্রম। কর্মকর্তারা বলছেন, এর প্রভাব পড়েছে অর্থ ছাড়ে।