কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজে বহিরাগতদের হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কলেজে চলমান অনার্স প্রথম বর্ষের ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ঘেরাও করতে আসা শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এর একপর্যায়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা-ভাঙচুর চালানো হয়।
এর আগে দুপুর ২টায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়া শুরু হওয়া। পরে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা পিছু হটলে অপরপক্ষের শিক্ষার্থীরা সোহরাওয়ার্দী কলেজে ঢুকে পড়ে। এ সময় কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের ইতিহাস বিভাগে পরীক্ষা চলছিল। কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এই কলেজে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় শুরু হওয়া পরীক্ষা দুই ঘণ্টা পর নিরাপত্তার স্বার্থে স্থগিত করা হয়।
এদিকে কলেজে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ঢুকে পড়ায় পরীক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এ সময় কলেজের উপাধ্যক্ষের রুমসহ অধিকাংশ কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়। কলেজ প্রাঙ্গণে থাকা একটি প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও অ্যাম্বুলেন্সে, দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। শিক্ষার্থীদের কলেজের ট্রফি, চেয়ারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে যেতেও দেখা যায়। পরে শিক্ষক ও স্টাফদের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রাঙ্গণ ছেড়ে যান। এরপর কলেজে থাকা পরীক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে বের হন।
জানা গেছে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিতের মৃত্যু অপচিকিৎসার কারণে হয়েছে, এমন দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের ওপর সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হামলা চালান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার কলেজগুলোর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজে ভাঙচুর চালান ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। সোহরাওয়ার্দী কলেজের প্রায় সব বিভাগ ও ক্লাসরুম আসবাবপত্র ভাঙচুর হয়েছে। তবে বিষয়টি সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কাকলী মুখোপাধ্যায় প্রশাসনের অসহযোগিতার অভিযোগ করে বলেন, “এখন পর্যন্ত কেউ এগিয়ে আসেনি। একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের বড় ক্ষতি হয়ে গেল। একটি পাবলিক পরীক্ষা চলমান ছিল। তারপরও কেন হামলার ঘটনা ঘটেছে সে ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না।”
এর আগে, রাজধানীর ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের অভিজিৎ হালদার (১৮) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় ভুল চিকিৎসা ও অনিয়মের অভিযোগ হাসপাতালের প্রধান ফটক আটকে ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর পুরান ঢাকায় অবস্থিত এ হাসপাতালের সামনে লাঠিসোঁটা হাতে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।