মহিলা ও শিশুবিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, “নারীর প্রতি সহিংসতা একটি সামাজিক ব্যাধি। পরিসংখ্যান মতে, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও এটা ক্রমশ বাড়ছে। যখন কেউ নারী নির্যাতন করে এবং যদি কেউ দিনের পর দিন তা সহ্য করতে থাকে, তাহলে দুইজনের কেউই মানুষ থাকে না। সমাজ থেকে এ ব্যাধি দুর করতে হবে।”
শনিবার (২৬ অক্টোবর) সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ হালনাগাদকরণ বিষয়ে অংশীজনের অংশগ্রহণে পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ ছিদ্দীকীর সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক ও মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) কেয়া খান।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তাসলিমা নাসরিন।
নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুকে উদ্ধার ও সুস্থ অবস্থায় পরিবারে ফিরিয়ে দেওয়া একটি জটিল প্রক্রিয়া উল্লেখ করে শারমীন এস মুরশিদ বলেন, “নির্যাতনের যে ঘটনাগুলো ঘটে, তা বেশিরভাগই সঠিকভাবে চিহ্নিত করা যায় না এবং শারীরিক নির্যাতন দমনের পাশাপাশি মানসিক ও আর্থিক ক্ষতির জন্য যে মামলা হতে পারে, তা অনেকেরই অজানা।”
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, “তরুণ সমাজ জেগেছে, তাদের সঙ্গে নিয়ে প্রচলিত ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে সকল অংশীজনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।”
পারিবারিক সহিংসতার ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে জানানোর নির্দেশ দিয়ে শারমীন এস মুরশিদ বলেন, “নির্যাতনের শিকার নারী বা শিশুকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিতে এ মন্ত্রণালয়ের কাজ করে যাচ্ছে।”
[102468]
শারমীন এস মুরশিদ আরও বলেন, “বাংলাদেশেও ছেলেদের মধ্যে সংবেদনশীল সুপুরুষ আছেন। পারিবারিক সহিংসতা সম্পর্কিত সেমিনার, কর্মশালাসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতায় নারীদের সঙ্গে পুরুষদেরও অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। বিদ্যমান সমাজ কাঠামোতে একটি ছেলে পরিবার থেকেই শিক্ষা নেয়, নারীকে নির্যাতন করলে সমাজ তা খারাপ চোখে দেখে। আসুন আমরা আমাদের সমাজ থেকে সকল অন্যায়, নির্যাতন দূর করার মানসিকতা নিয়ে সুন্দর আগামী গড়ি।”