ডিজেল-কেরোসিনের দাম বাড়ানো ভুল সিদ্ধান্ত: সিপিডি

সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২১, ০৮:০২ পিএম

ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো সরকারের সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এ সময় সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে জ্বালানি তেলের বর্ধিতমূল্য প্রত্যাহার করে আগের দরে ফেরত আনার আহ্বান জানায় সংস্থাটি।

বুধবার (১০ নভেম্বর) ‘জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি কতটুকু প্রয়োজন ছিল?’ শীর্ষক একটি সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির পক্ষ থেকে এমন আহ্বান জানানো হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “২০২২ অর্থবছরে প্রক্ষেপণ হচ্ছে বিপিসি থেকে আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ সরকার ৭ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা আয় করার কথা লিখেছে। সুতরাং ৭ হাজার দুইশ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার জন্য এ আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার করলে আর বাড়তি টাকার প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট সমন্বয় করেই সরকার লোকসানের টাকা সমন্বয় করতে পারে।”

এক প্রশ্নের উত্তরে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, “প্রতিদিন ২০ কোটি টাকা ধরলে বছরে ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এই ৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া খুব কঠিন বিষয় মনে হয় না।” 

এ সময় মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সিপিডির মূল প্রবন্ধ তুলে ধরে ফাহমিদা খাতুন বলেন, “জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ফলে সামগ্রিকভাবে অর্থনীতি ও মানুষের জীবনযাত্রার ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। এ মূল্যবৃদ্ধির ফলে হয়তো বিত্তবানদের ওপর খুব একটা প্রভাব পড়বে না। কিন্তু যারা দরিদ্র এবং যারা নতুন করে দরিদ্র হয়েছে, যারা কোভিড আক্রান্ত অর্থনীতিতে নতুন করে রিকভারির চেষ্টার মধ্যে রয়েছে, তাদের ওপর প্রভাব পড়বে। আমরা যদি ন্যায্যতার কথা বলি সেই ন্যায্যতার দিক থেকেও এটা একটা অন্যায্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”

ফাহমিদা খাতুন বলেন, “দাম বাড়ানো হচ্ছে বিপিসির লোকসানের কথা বলে। বিপিসির লোকসানের কারণ কী? আমরা জানি এখানে সুশাসনের অভাব রয়েছে। বিপিসির তেল সংগ্রহ, বিক্রি, মার্কেটিংয়ে সিস্টেমের ব্যবস্থাপনা ও সুশাসনের অনেক অভিযোগ রয়েছে। তারা বিভিন্ন মার্কেটিং কোম্পানিকে দিয়ে তেল মার্কেটিং করে। সেখানেও আমরা দেখি দুর্নীতির খবর এসেছে।”

এছাড়া যে হারে দাম বাড়ানো হয় বাজারে তার থেকে বেশি হারে প্রভাব পড়ে এমন অভিযোগ করে ফাহমিদা বলেন, “যখন কোনো একটা জিনিসের মূল্য ৫, ১০ বা ২০ শতাংশ বাড়ান হলো, তখন আমরা বাজারে গিয়ে দেখব মূল্য অনেক বেশি। এই যে এখন তেলের দাম ২৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, সেখানে বাসের ভাড়া প্রকৃতপক্ষে ৫০ শতাংশ বেশি নেওয়া হচ্ছে।”

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জম, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।