কবিতা

শরীফা বুলবুলের কবিতা

শরীফা বুলবুল প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৪, ০৩:০৩ পিএম

পারবে না 

আমি তো কাঁটা তারেই শুয়ে আছি
রক্ত জলের ইতিহাসে
বেড়ে ওঠা জীবন আমার।
শত আঘাতের লালচে আশীর্বাদ
বুকের ভেতর অন্ধকার 
     অরণ্যের নির্জনতা 
নিয়ে শুয়ে আছে।
যাবতীয় ক্ষতি
এখন নির্মেদ স্মৃতি!

আমাকে তুমি ভেঙে দিতে পারবে না।

স্বপ্নবৃত্তান্তের মতো শরীরে আমার 
আফ্রিকা নামে
নিঃশ্বাসে সুপ্ত আগ্নেয়গিরি
বিস্ফারিত হয়ে ওঠে।

ক্ষোভের বারুদ ছড়িয়ে দিতে পারি
ইস্পাত কাঠিন্যে।

ঝরাপাতার সাথে ঘুমুতে ঘুমুতে
মাটির খুব আপন হয়ে গেছি।
আমার ভেতরে তুমি দুঃখবোঝাই জাহাজ
ঢুকিয়ে দিতে পারবে না।

ওদের গতি বাজেয়াপ্ত করো

তিনশ বিঘা জমি নয়
ওরা বাংলাদেশকে বলাৎকার করেছে!
উত্তর থেকে দক্ষিণ ওদেরই
গুলশান থেকে বনানী ওদেরই
নারী থেকে শিল্প ওদেরই
কক্সবাজার থেকে কারওয়ানবাজার 
সবকিছু হজম করে ফেলেছে ওরা!

শুয়োরের বাচ্চাদের জ্যান্ত গেড়ে ফেলো।
ওরা ভুলেও যেন বঙ্গবন্ধুর নাম
উচ্চারণ না করে
লাখো শহীদের রক্তমাখা এই দেশে
ওদের গতি বাজেয়াপ্ত করো

তুমি তো মৃত্যুকে পরোয়া করো না
তুমি মানেই তো বাংলাদেশ
শত বিরোধ প্রতিরোধে তোমাকে দেখি 
                ইস্পাত কঠিন
যে তোমার আস্থা
সত্যি ও সততায়
ভয় কি তোমার?

তোমার চোখে বিশ্বজনীন মাতৃত্ব 
      খেলা করে দেখে ওরা ভেবেছে

তুমি সুবর্ণরেখার হৃদয়...

সমাজের এইসব লুটেরা অন্ধকার 
সুদর্শন কলংকিত খলদের

পিঁপড়ের মতো পিষে ফেলো
ওরা এদেশের কেউ নয়,
               কেউই নয়।

স্তব্ধতার মানচিত্রে 
    তুমি তো ফুল ফোটাতে এসেছ
জয় পরাজয় পেছনে ভুলে

তুমি উৎসমুখে ফিরে এসো,
তুমি তো এই বাংলার 
    আবহমান ভালোবাসা

পঁচাত্তরের অব্যয় শোক
যে শোকে আজও আমরা কাঁদি...

তার স্মৃতি বুকের ভেতর 
ঝড়ো হাওয়ার মতো উদাস করে 
                     ফিরে যায়।

কোনো লুটেরার হতে পারে না
ক্ষোভের বারুদ হয়ে ওদের দগ্ধ করো
কেউ প্রতিবাদ করবে না।
বরং পীড়িত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে
তোমাকে কুর্নিশ জানাবে।  

তুমি জানো এখনও মধ্যবিত্তের জীবন মিথ 
           ঠান্ডা হয় চায়ের কাপে
এখনও কোটি জনতা অন্নহীন

এই দেশ কৃষকের
অসমাপ্ত আত্মজীবনীর...

সাম্প্রদায়িক ছুরি

তোমরা যতই আমাকে 
সাম্প্রদায়িক ছুরিতে আঘাত করো
আমি ততোই তীব্র আর শাণিত হই।

জেনে রেখো, আমার ভেতরে জ্বলছে
তীব্র এক অসাম্প্রদায়িকতার ভিসুভিয়াস...

তোমাদের হিংসার পৃথিবী
জ্বালিয়ে দেবো
অহিংস মানবিকতায়...

তোমাদের তথাকথিত সামাজিক
পরিহাস আর ঘৃণা 
বুকের ফুটপাথে ছুঁড়ে ফেলে

আমি বাংলাদেশকেই ফের
অঙ্গীকারের মালা পরালাম।

যাও তোমাদের ক্ষমা করে দিলাম।