মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল

সাদাত উল্লাহ খান প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৩, ০৮:১৬ পিএম

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জল ইতিহাসে যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম স্বর্নাক্ষরে লিখিত থাকবে শেখ কামাল তাদের অন্যতম। -সুলতান মাহমুদ শরীফ

ইতিহাস কথা বলে। সত্য উম্মোচিত হবেই হবে। মানুষ সত্যের সন্ধানে নেমেছে। শেখ কামালের (১৯৪৯-১৯৭৫) সুঘ্রাণ প্রবাহিত হচ্ছে। ইতিহাসের পাতায় পাতায় তল্লাশি শুরু হয়েছে। তাই শেখ কামালের জীবনচরিত জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। তাঁর নির্মল ও সাহসী জীবনযাত্রার ন্যায্য সম্মান প্রদান করা সময়ে দাবি।

বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ কামাল অদ্বিতীয়। তাঁর চরিত্র এমনই উজ্জ্বল যে তা সবাইকে অভিভূত করবে, উদ্দীপ্ত করবে ও আলোর পথে আহবান করবে। তরুণসমাজকে সাহস, সত্য ও বিনয়ের পথ দেখাবে। কারণ শেখ কামাল মানে সাহস ও বিনয়, নিরহংকার ও সাধনা। সময় ও সত্য আজ তাই সাক্ষ্য প্রদান করে।

শেখ কামাল সম্পূর্ণ ভিন্ন এক চরিত্রের অধিকারী ও বৈশিষ্ট্যের মানুষ। অনন্য ও অনুসরণীয় শেখ কামাল তাঁর স্বল্প আয়ুর জীবনে যে কীর্তি রেখে গেছেন, তা তাঁকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তিনি নিজেকে পরিণত করেছেন সম্পূর্ণ ভিন্ন মানুষে যা বর্তমান দুনিয়ায় ক্ষমতাবান পরিবারে পৃথিবীর কোথাও দেখা যায় না। সত্যই যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। সত্য চিরকালই সত্য। তাই শেখ কামাল মানে সত্য, সুন্দর, সাহস ও ভদ্রতার ব্যাকরণ। সহজাত প্রতিভাগুণে শেখ কামাল আসলেই বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি।

অকালে শহিদ হবার পর রাজনৈতিক কারণে শেখ কামাল দৃশ্যপটের অন্তরালে চলে যান। ইতিহাসের দপর্ণে তিনি আবার দৃশ্যমান হয়েছেন। বাংলাদেশের বিশিষ্ট অধ্যাপক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, ক্রীড়াবিদ, সংগঠক, নাট্যকার, অভিনেতা, রাজনীতিবিদ, সহপাঠী, আত্মীয়স্বজন, অনুজ, অগ্রজ ও সাধারণ মানুষ যারাই জীবনে শেখ কামালের কাছাকাছি এসেছিলেন তাদের অনেকেই মতামত ব্যক্ত করেছেন। সকলেই শেখ কামালের আদবকায়দা ও বহুমাত্রিক প্রতিভার প্রশংসা করেছেন।

 

শেখ কামাল কেন জরুরি?

বহুমাত্রিক শেখ কামাল বর্তমান প্রজন্মের কাছে তেমন সুপরিচিত নয়। নানা কারণে তিনি জনগণের দর্পণে উপস্থাপিত হন নাই। বাংলাদেশের ইতিহাসে, স্বাধীনতা সংগ্রামে, সংস্কৃতিতে, শিল্পে, সাহিত্যে, সংগীতে, নাটকে, অভিনয়ে এবং ক্রীড়াজগতে যে অনন্যসাধারণ অবদান শেখ কামাল রেখেছেন তার যথার্থ মূল্যায়ন, সম্মান, স্বীকৃতি বাঙালি জাতি প্রদান করে নাই। তবে ইতিহাস কথা বলে। ইতিহাস সবাক, শেখ কামালের প্রকৃত রূপ, আলো-প্রতিভা, দক্ষতা, সাধনা এবং কৃতিত্বের পরিসর প্রকাশ, প্রচার ও প্রসারিত হচ্ছে।

 

শেখ কামাল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের অগ্রযোদ্ধা

মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আজীবন লালিত স্বপ্ন ধারণ করেছিলেন জাতির পিতার বড় ছেলে শেখ কামাল। তিনি ছিলেন জাতির পিতার স্বপ্ন ও আদর্শ বাস্তবায়নের একজন অগ্রযোদ্ধা। রাষ্ট্রপতির সন্তান হয়েও তিনি অতি সাদামাটা জীবনযাপন করেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, খুব ছোটবেলা থেকেই সব ধরনের খেলাধুলায় তাঁর আগ্রহ ছিল প্রচণ্ড। ক্রিকেটই তাঁকে টানতো সবচেয়ে বেশি। নিখুঁত লাইন লেন্থ আর প্রচণ্ড গতির দীর্ঘদেহী ফাস্ট বোলার ছিলেন। আজাদ বয়েজ ক্লাবের হয়ে শেখ কামাল প্রথম বিভাগে ক্রিকেট খেলেছেন দীর্ঘদিন। শুধু খেলাধুলাই নয়, পড়াশোনা, সংগীতচর্চা, অভিনয়, বিতর্ক, উপস্থিত বক্তৃতা থেকে শুরু করে বাঙালির সংস্কৃতিকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার চেষ্টা কোথায় নাই শেখ কামাল?  ক্ষমতা ও ভদ্রতার ব্যাকরণ বিষয়ে শেখ কামালের অসাধারণ জ্ঞান ছিল।

বর্তমান আমলে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা ব্যতীত সমাজে, সংস্কৃতিতে এবং সর্বোপরি জাতীয় রাজনীতিতে দক্ষ নেতৃত্ব গড়ে তোলা সম্ভব নয়। ক্ষমতার সাথে জ্ঞানের সমন্বয় না হলে জাতির বিকাশ ঘটবে না— শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রগতি হবে না। তাই জ্ঞানগরিমা ও ক্ষমতা বিষয়ে ফরাসি চিন্তাবিদ মিশেল ফুকোর (১৯২৬-১৯৮৪) সাহায্য নিতে পারি। ‘ফুকোর মতে এই দুনিয়ায় ক্ষমতা বা দুনিয়াদারির সহিত জ্ঞানগরিমা বা সত্যসাধনার সম্পর্ক নিবিড়  (সলিমুল্লাহ খান, প্রার্থনা, মধুপোক, ঢাকা, ২০১৯, পৃ. ১১৬)। প্রিয় পাঠিকা ও পাঠক ঠিক এই প্রশ্নের জবাব দেয়ার জন্যও শেখ কামালকে জানা জরুরি। জাতির সামনে তাঁর কর্মকাণ্ড ও চিন্তাধারার সাথে পরিচয় তুলে ধরা দরকার।


শেখ কামাল পথপ্রদর্শক

কল্পনা করুন শেখ কামাল একজন পথপ্রদর্শক। সারাবিশ্বের শ্রেষ্ঠ কৃতী মানব যাঁরা স্বল্পায়ু কর্মজীবন লাভ করেছেন—তাঁদের একজন আমাদের শেখ কামাল। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম কীর্তিমানদেরও অনেকে এমনতর বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী ছিলেন না যা আমরা শেখ কামালের স্বল্পায়ুর জীবনে দেখতে পাই। ক্রীড়া, সংগীত, রাজনীতি, সংগঠন, নাটক, অভিনয়, উপস্থিত বক্তৃতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং সেনাবাহিনী নানা ক্ষেত্রে শেখ কামাল সংক্ষিপ্ত জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। সত্যি যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল। তাই বলা যায় শেখ কামালের জীবনী বর্তমান প্রজন্মের অনেক দিশেহারা মানুষের পথপ্রদর্শক হতে পারে।

 

শেখ কামাল প্রজন্মের প্রেরণার শিক্ষক

অনন্য ও অনুসরণীয় শেখ কামাল তাঁর যাপিত জীবনে যে কীর্তি রেখে গেছেন, সঠিকভাবে সেই কীর্তি যদি বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা যায়, তিনি আজও তরুণসমাজের প্রতীকী নেতা হিসেবে তাদের মন ও মগজে উত্তম আসন পাবেন। আর তাঁর আদর্শ, কর্ম ও নীতি অনুসরণ করে তরুণসমাজ উন্নয়নের মহাসড়কে সামিল হতে পারবে। আলোচনা, পর্যালোচনা ও মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে শেখ কামাল হতে পারেন নব প্রজন্মের নব প্রেরণার উৎস ও শিক্ষক। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রবাহিত হোক শেখ কামালের কীর্তি, আদর্শ, অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় নীতি।


শেখ কামাল: বেদনা ও সংগ্রামের বিষাদ সিন্ধু

শেখ কামালের জীবন ছিল এক ধরনের বেদনার, দুঃখের, সংগ্রামের বিক্ষুব্ধ সাগর। তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কখনই সুখের মুখ দেখেছেন বলে মনে হয় না। সমগ্র জীবনটাই ছিল চ্যালেঞ্জিং, দুঃখ-বেদনা আর ঝড়ঝঞ্ঝাপূর্ণ। এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক আ.ব.ম. ফারুক বলেন, ‘বরং কারণ ছিল, কামাল ভাইয়ের স্কুলজীবনের প্রায় পুরো সময়টাই বঙ্গবন্ধুকে জেলে কাটাতে হয়েছে (আ.ব.ম. ফারুক, ‘শেখ কামাল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাসংস্কার আন্দোলন, শহীদ শেখ কামাল:  আলোমুখী এক প্রাণ, সম্পাদক : মো জাহিদ আহসান রাসেল, এমপি, পৃ. ৫৬)।

এই ঝঞ্ঝাপূর্ণ জীবনের মাঝেই স্বপ্ন বুনেছেন, স্বপ্ন দেখিয়েছেন দেশের তরুণসমাজকে জীবনের বাঁকে বাঁকে যুদ্ধ  জয়ের। তিনি ঠিকই যুদ্ধে জয় লাভ করেছেন। দুঃখজনক হলো তিনি অকালেই জীবন থেকে, পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। অধিকতর দুঃখের, বেদনার ও যন্ত্রণার বিষয় হলো বিনয়ী, ভদ্র, সৎ, নিষ্ঠাবান আবার বাংলাদেশকে বদলে দেয়ার স্বপ্নে বিভোর ক্রীড়া ও সংস্কৃতিপাগল শেখ কামালকে পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হলো মিথ্যা অপপ্রচারের শিকার হয়ে। তবে আজ সত্য উদ্ভাসিত। কারণ সত্য চিরকালই সত্য। দিন দিন ক্রমশ শেখ কামালের অসাধারণ গুণাবলির কথা প্রকাশমান। এই অকাল প্রয়াত অসাধারণ জ্ঞানশীল মানুষটির কর্মকাণ্ড জাতির সামনে তুলে ধরা সময়ের দাবি।

 

মুক্তিযুদ্ধে শেখ কামাল

শেখ কামাল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত, সংগ্রামী, আদর্শবাদী কর্মী হিসেবে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুথান ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যথোচিত ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁকে নানাভাবে ও নানা দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা করা যায়। আমরা এখানে শেখ কামালকে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আলোচনা করব। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি কর্নেল ওসমানীর এডিসি (এইড দ্য-ক্যাম্প)  হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর শেখ কামাল ক্যাপটেন হিসেবে সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় আবার ফিরে আসেন।

বহুমাত্রিক প্রতিভাবান ছিলেন শেখ কামাল। তাঁকে বহু নামে চিহ্নিত করা যায়। তবে অনেক গুণের অধিকারী হলেও সবার কপালে অথবা জীবনে মুক্তিযোদ্ধা হবার ভাগ্য বা সুযোগ আসে না। জনকল্যাণমূলক অনেক গুণের বাইরেও সর্বাধিক সাহসী ও সংগ্রামী কাজ হল মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ। অতীব দুঃখের বিষয় শেখ কামাল মাত্র ২৬ বছর বেঁচেছিলেন। শেখ কামাল প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. মো. আলাউদ্দিন বলেন: এই ছোট্ট জীবনকালে তিনি একাধারে অসংখ্য জনকল্যাণমুখী এবং উন্নয়নমূলক কাজ করে গিয়েছেন। নিজেও ছিলেন প্রতিভাবান,  যে কাজেই হাত দিতেন সফলতার পাল্লা শেখ কামালের দিকেই ঝুঁকে পড়ত বিশেষ করে অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও সাহসিক মনোভাবের কারণে। তিনি একাধারে ছিলেন তরুণ সংগঠক, ফুটবলের দিশারী, মেধাবী ক্রিকেটার, নাট্যকর্মী, প্রতিভাবান সেতারবাধক, অভিনেতা ও সর্বোপরী একজন মুক্তিযোদ্ধা ( প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন, যদি শেখ কামালকে  না হারাতাম,  একজন শেখ কামাল, সুজাত মনসুর সম্পাদিত, চৈতন্য,  সিলেট, ২০১৮, পৃ.৬৯)।

 

মুক্তিযুদ্ধে শেখ কামাল: সামরিক প্রশিক্ষণ

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য শারীরিকভাবে সক্ষম বাংলাদেশের ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভারত সরকার। ভারতের ব্যারাকপুর সেনানিবাস ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের একটি অন্যতম কেন্দ্র। ব্যারাকপুর সেনানিবাসের নিকটবর্তী মুর্তি নামক স্থানে স্থাপন করা হয়েছিল  অস্থায়ী সামরিক একাডেমি। সেই সামরিক একাডেমি  থেকে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধার সাথে শেখ কামাল ১৪ সপ্তাহের সামরিক প্রশিক্ষণ কোর্স সফলতার সাথে সমাপ্ত করেন।  সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে যোগ্যতা অনুসারে মুক্তিযোদ্ধাদের কমিশন প্রদান করা হয় এবং শেখ কামালকে মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রধান সেনাপতি এমএজি ওসমানীর এডিসি (এইড দ্য-ক্যাম্প) হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়।

 

মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল: বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সেলিমের বয়ান

মাতৃভূমির টানে অনেকে মুক্তিযুদ্ধকে মনেপ্রাণে সহায়তা করেছেন। অনেকে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছে।  এমন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হলেন কাজী  সেলিম। তিনি শেখ কামাল ও  মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বলেন : আমরা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মেলাঘর প্রধান হেডকোয়াটার্সে যখন বিভিন্ন জেলার প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, ঠিক সেই সময়ে একদিন মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি কর্নেল ওসমানীর সঙ্গে তাঁর এডিসি হিসেবে এসেছিলেন কামাল ভাই। কামাল ভাইয়ের পরনে ছিল সামরিক খাকি  পোশাক ও মাথায় টুপি,  চেহারার মধ্যে ছিল একজন বাঙালি তরুণ টগবগে  সামরিক অফিসারে উদ্দীপ্ত ও সংকল্পে অঙ্গীকারবদ্ধ বীর যোদ্ধার উপস্থিতি। প্রধান সেনাপতির সঙ্গে শেখ কামালের উপস্থিতি যেন সমবেত মুক্তিযোদ্ধাদের আলাদা প্রেরণা ও শক্তি সঞ্চার করেছিল। সেদিন কর্নেল ওসমানীর পেছনে দাঁড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধা গেরিলাদের মুহূর্মুহূ করতালির জবাবে শেখ কামাল তাঁর দু’হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে উচিয়ে অভিবাদন জানালেন (কাজী সেলিম, লড়াকু শেখ কামাল, একজন শেখ কামাল, সুজাত মনসুর সম্পাদিত, চৈতন্য,  সিলেট, ২০১৮, পৃ. ১০২)।

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী সেলিম আরো বলেন : ১০ জানুয়ারি, ১৯৭২ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পাকিস্তানের কারাগার থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করলে ঢাকার  তেজগাঁও  বিমানবন্দর থেকে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পথে লাখ লাখ জনতার মধ্য দিয়ে অতিক্রমকারী বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী সুউচ্চ ট্রাকটির ওপর বঙ্গবন্ধুর পেছনে  সেদিন দেখে ছিলাম স্বাধীন বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর একজন অনুগত, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালকে সামরিক পোশাক পরিহিত দণ্ডায়মান (কাজী সেলিম, লড়াকু শেখ কামাল, একজন শেখ কামাল, সুজাত মনসুর সম্পাদিত, চৈতন্য,  সিলেট, ২০১৮, পৃ. ১০৩)।

মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, বিশেষ করে আহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি শেখ কামাল ঐসব পরিবারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। কারণ তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁদের দেশপ্রেম ও আবেগ নিয়ে অবগত  ছিলেন (প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন, যদি শেখ কামালকে  না হারাতাম,  একজন শেখ কামাল, সুজাত মনসুর সম্পাদিত, চৈতন্য,  সিলেট, ২০১৮, পৃ. ৭১)।