স্বাধীন বাংলাদেশ তথা ভারত উপমহাদেশের রাজনীতিতে বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের ভারপ্রাপ্ত ও উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের নাম অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে ও সম্মানের সাথে উচ্চারিত হয়। বঙ্গবন্ধু তাঁর নিজ কর্মগুণে নিজেকে বিশ্ব নেতায় উন্নীত করেছিলেন। হয়ে উঠেছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। ব্যক্তি জীবনের অপরিসীম আত্মত্যাগের কল্যাণেই তিনি আজ বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছেন। সেই মহান মানুষটির অন্যতম প্রিয় ও বিশ্বস্ত বন্ধু ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তাঁরা একই আদর্শ লালন করতেন। তাঁদের প্রথম পরিচয় হয় সিলেটে। ১৯৪৭ সালে বৃহত্তর সিলেট ভারত না পাকিস্তান, কোন দেশের অন্তর্ভুক্ত হবে— এ সিদ্ধান্ত গ্রহণে গণভোটের আয়োজন করা হয়। এ সময় পাকিস্তানের পক্ষে প্রচারণা চালাতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম একদল ছাত্র নিয়ে সিলেট যান। একই সময়ে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের তখনকার তুখোড় ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমানও পাকিস্তানের পক্ষে জনমত গড়ে তুলতে সিলেট আসেন। সেখানেই ঘটে এই দুই উদীয়মান নেতার পরিচয়। তারপর পরিচয় থেকে বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব থেকে আজীবনের রাজনৈতিক সহকর্মী। এরপর লড়াই সংগ্রামে কিংবা ব্যক্তিজীবনে দুজনে হেঁটেছেন পাশাপাশি বন্ধুর মতো।
সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাঁর প্রিয় বন্ধু ও নেতার প্রতি জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত আনুগত্য প্রদর্শন করেছেন। এমনকি পনেরই আগস্ট ট্রাজেডির পরও তিনি নিজ আদর্শে অবিচল ছিলেন, অকাতরে নিজ প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছেন, তবু শত্রুদের সাথে হাত মেলাননি। সুযোগ যে আসেনি তা নয়, বরং অনেক সুযোগ এসেছিল তাঁর সামনে। কিন্তু কোনো কিছুতেই তিনি সাড়া দেননি। করেননি দল কিংবা আদর্শ বদল। বঙ্গবন্ধু আর আওয়ামী লীগেই নিজেকে বিলীন করে দিয়েছেন। আইয়ুব সরকারের আমলেও মোনায়েম খান এবং এনএসএফ তাঁর পরিবারের ওপর বিভিন্ন রকমভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। তবু তিনি তাঁর বিশ্বাস ও সিদ্ধান্তে অটল থেকেছেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সামনে রেখে বাংলার মানুষের মুক্তির জন্য, কল্যাণের কাজ করেছেন সাহসের সাথে।
সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কটা যে খুবই আন্তরিক ছিল তার প্রমাণ আমরা বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক ইউসূফ আলীর বক্তব্যে পাই : “১৩ই কিংবা ১৪ই আগস্ট ১৯৭৫ তারিখে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সাহেবের বাসায় যাই। উনি ভাইস প্রেসিডেন্ট। পুরাতন গণভবনে থাকেন। তখন সন্ধ্যা হয়েছে। আমি দেখি উনি পাঞ্জাবি-লুঙ্গি পরে পায়চারি করছেন। সালাম দিলাম। কোনো উত্তর দিলেন না। খুব গম্ভীর। উনি তো এমনি একটু কানে কম শুনতেন। আর একবার সালাম দিলাম। তারও কোনো উত্তর নেই। বুঝলাম খুবই উত্তেজিত। নজরুল ভাইয়ের বাসায় প্রায় ডেইলি যেতাম। যখন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ ছিল, রোজ বিকেলে গণভবনে গিয়ে ৪৫ মিনিট তাঁকে নিয়ে পায়চারি করতে হবে। সেখানেও যেতাম। শেষের দিকে তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এটা মনে হয় ১৩ তারিখ দিনগত রাত্রে। চৌদ্দ তারিখ তো ওনার সঙ্গে আমার দেখা হয়নি।
এদিকে সেদিন নজরুল ভাই গম্ভীর হয়ে চুপচাপ করে পায়চারি করছেন। আমিও উনার সঙ্গে পায়চারি করছি। কোনো কথা বললেন না। নজরুল ইসলাম সাহেবকে আমরা সবাই শ্রদ্ধা করতাম। বঙ্গবন্ধুও উনাকে ‘স্যার’ বলতেন। মোশতাক, তাজউদ্দীন, কামারুজ্জামান বা মনসুর আলী সাহেবদের বঙ্গবন্ধু ‘তুমি’ করে বলতেন। কিন্তু সৈয়দ সাহেবকে তিনি ‘আপনি’ করে বলতেন, আমরাও ‘স্যার’ বলতাম। তিনি খুব লার্নেড লোক ছিলেন।’ [ এম আর আখতার মুকুল, মুজিবের রক্ত লাল, পৃষ্ঠা—২৫৪]
সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাঁর সারা জীবনে যখন যেখানে বক্তব্য রেখেছেন সবখানে প্রবলভাবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর কথায়-ভাষণে বারবার উদ্ধৃত হয়েছে প্রিয় বন্ধু, প্রিয় নেতা শেখ মুজিবের কথা। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৬ জুলাই ১৯৭১ বাংলাদেশ পরিষদ সদস্যবর্গের সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের ভারপ্রাপ্ত ও উপরাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম যে দীর্ঘ ভাষণ প্রদান করেন সেখানে একাধিকবার উত্থাপন করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম। উপস্থিত সবাইকে সংগ্রামী অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে সৈয়দ নজরুল বলেন— “বন্ধুরা আমার, নির্বাচন উত্তরকালে রমনার রেসকোর্স ময়দানে আমাদের মহান নেতা আমাদেরকে শপথবাণী উচ্চারণ করিয়েছিলেন। সেদিন সাক্ষী ছিল রেসকোর্স ময়দানের লক্ষ লক্ষ সংগ্রামী জনতা আর বাংলার নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষ। আমি আজ গর্বের সঙ্গে বলব, মহান নেতার হাত ধরে আমরা যে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম সে প্রতিজ্ঞায় আমরা অটুট এবং অটল রয়েছি।” তিনি আবারও বলছেন, “...বাংলার সৈনিকেরা যখন বুকের তাজা রক্ত মাতৃভূমির জন্য ঢেলে দিচ্ছেন। এরপরে বাংলার স্বাধীনতা ঘোষণা না করে আর কি পথ ছিল? স্বাধীনতার জন্য লড়াই না করে আর কি উপায় ছিল? মূলত এবং বাহ্যত বঙ্গবন্ধু গ্রেপ্তার হওয়ার মুহূর্তে স্বাধীনতা ঘোষণার বাণী রেখে যান। আমরা জানতাম, বঙ্গবন্ধু যদি গ্রেপ্তার হন, তবে স্বাধীনতা ঘোষণা তিনিই করে যাবেন। আর এই স্বাধীনতা রক্ষা করার জন্যই আমাদের সংগ্রাম করে যেতে হবে। ...২৫শে মার্চের রাতের পরে আমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলাম। তাই স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার গঠনের ঘোষণা করতে আমাদের একটু বিলম্ব হয়েছিল। আমরা যে পাঁচজন শেখ সাহেবের পাশে ছিলাম এবং যাদের কাছে কথিত, লিখিত, অলিখিত সর্বপ্রকারের দায়িত্ব বঙ্গবন্ধু দিয়ে গিয়েছিলেন, ১৩ই এপ্রিল তারিখে বাংলার পূর্ব অঞ্চলে সর্বপ্রথমে একত্রিত হলাম। পরিষদের সদস্যবৃন্দ যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের সামনে সেদিন আমি আমার সহকর্মীবৃন্দের তরফ থেকে স্বাধীনতা কার্যকরী করার জন্য পরিকল্পনা পেশ করেছিলাম। তখন যোগাযোগহীন অবস্থায় আপনাদের বেশির ভাগই ছিলেন বাংলাদেশে শত্রুর দখলীকৃত এলাকার অভ্যন্তরে। অথচ একটা সরকার গঠন না করলে স্বাধীনতা সংগ্রামকে পরিচালনা করা যাচ্ছিল না। সেই হেতু সেদিনের উপস্থিত বন্ধুদের কাছেই আমরা পরিকল্পনা পেশ করেছিলাম। ১৭৫৭ সালে পলাশীর আম্রকাননে আমাদের স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। আর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের আর একটি আম্রকাননে দাঁড়িয়ে আমরা বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি মানুষ এবং বঙ্গবন্ধুর তরফ থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছি। ...নারীর ইজ্জত লুণ্ঠিত হচ্ছে আজ আমার বাংলাদেশে, হত্যা করা হয়েছে দশ লক্ষ নারী, পুরুষ আর শিশুকে। মসজিদ, মন্দির আর গির্জা ধ্বংস হয়েছে। বাংলার ফসল আজকে মাঠে মাঠে লুটিয়ে পড়েছে। আমাদের তরুণদেরকে আজকে হত্যা করা হচ্ছে, গুলি করে মারা হচ্ছে। এই কাহিনীর মর্মবেদনা আপনাদের বুকের ভেতর যেমন বাজে, আমার বুকে যেমন বাজে আর সকলের বুকেও তেমনি বাজে। যদি বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মধ্যে উপস্থিত থাকতেন, তার প্রিয় দেশবাসীর এই মর্মন্তুদ দুঃখে তিনি অধীর হয়ে যেতেন তাদের মুক্তির জন্য। ...মনে রাখবেন বর্তমান মুহূর্তে যুদ্ধের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন ঐক্যের। সারা পৃথিবীর মানুষ যেন দেখতে পায় আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধুর সহকর্মীরা, বঙ্গবন্ধুর শিষ্যরা, বাঙলার স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়করা এক প্রাণ এক মন হয়ে বাঙলার স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। ...তাই বন্ধুরা, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা, আমাদের নীতি-আদর্শে আপনারা অটল থাকবেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হচ্ছে আমাদের আদর্শ। বিশ বছরের ক্রমাগত সংগ্রামের মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভিতর দিয়ে এই আদর্শকে আমরা আজকে পৃথিবীর সামনে তুলে ধরছি। ...মনে রাখতে হবে আমাদের স্বাধীনতা অন্য কেউ এনে দেবে না। নিজেদের স্বাধীনতা নিজেদেরকেই অর্জন করতে হবে। বাইরের কোনো রাষ্ট্র স্বাধীনতার ফল এনে দেবে, এ ধারণা ভুল। দশ লক্ষ বাঙ্গালী রক্ত দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, রক্ত যখন আমরা দিতে শিখেছি তখন আরো রক্ত দেবো, বাংলার মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব। দশ লক্ষ বাঙ্গালী বীর যারা প্রাণ দিয়েছে তাদের কসম দিয়ে আপনাদেরকে বলছি, আজকে স্বাধীনতার লড়াই-এ প্রয়োজন পড়লে আরো আমরা প্রাণ বিসর্জন দিব। তবু আপস করব না। ...দীর্ঘকাল বহু সুখে-দুঃখে আমরা আপনাদের পাশে পাশে ছিলাম। আমার প্রিয়তম নেতা জনাব শেখ মুজিবুর রহমান স্নেহ করতেন, ভালোবাসতেন, আপনারা দীর্ঘকাল আমাদের ভালোবাসা দিয়েছেন, স্নেহ দিয়েছেন, কোনো দিন কি আমরা আপনাদের বিশ্বাসের অমর্যাদা করেছি? বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস, আপনাদের স্নেহ, ভালোবাসার বিনিময়ে আমরা কি কোনো দিন আপনাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছি? ২০—২২ বছরের ইতিহাস যদি একথা বলে সুখে দুঃখে, জয় পরাজয়ে, গৌরবে-অগৌরবে আপনাদের পাশে পাশে ছিলাম। আপনাদের বিশ্বাসের অমর্যাদা করি নাই। আজ আপনাদের কাছে আকুল আবেদন জানাব আবার আপনারা বিশ্বাস করুন। ...১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৬৯ সাল এই তিন বছর আমি আপনাদের পরিচালনা করার দায়িত্বলাভ করেছিলাম। বঙ্গবন্ধু এই তিন বছর কারাগারে ছিলেন। আইয়ুব শাহীর দাপট আর অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমি দেখেছি তখনও আপনারা অধৈর্য হন নাই। আমি কোনো দিন ধৈর্য হারাই নাই। বহুবার আপনাদের বলেছি, সংগ্রামে জয়ী হতে হলে ধৈর্যের প্রয়োজন। বহুবার সংগ্রামের বহু কৌশল নিয়ে আপনাদের সাথে আমার মতবিরোধ হয়েছে। আজ আমি গর্বের সাথে বলতে পারি আমার প্রবর্তিত কৌশলের ফলে আমরা ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত তথা আইয়ূব শাহীকে খতম করেছিলাম। বিশ্বাসের বলে আপনারা আমাকে আবার বঙ্গবন্ধুর সহকর্মী হিসেবে প্রধান সহ-সভাপতি করেছিলেন। এই বিশ্বাসের বলে আপনারা আমাকে জাতীয় পরিষদে ডেপুটি নেতা করেছিলেন। আমি জানি, এই বিশ্বাসের বলে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে আবার আপনারা আমাকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দিয়েছেন। আমার ভাগ্য এই যে, আমার নেতা, আমার ভাই, আমার প্রিয়তম বন্ধু শেখ সাহেব যখনই যান, তার অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব ঘাড়ে পড়ে যায়। সেই কাজ চিরকাল আপনাদের পাশে পাশে থেকে করেছি। আজও আপনাদেরকে আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যদি বিশ্বাসঘাতকতা করি, যদি সঙ্কল্পে কোনো রকম মলিনতা দেখেন, যদি আপনাদের নীতি ও আদর্শ থেকে কোনো দিন বিচ্যুতি দেখেন, আপনারা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করবেন।
একইভাবে প্রিয় মাতৃভূমি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন হওয়ার আগ মুহূর্তে ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে বলেন, বন্ধুরা আমার, রক্তের আখরে লেখা, এই সংগ্রামের ইতিহাসের সাফল্যের এ ক্রান্তিলগ্নে আজ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি বাঙালি জাতির পিতা জনাব শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্বাধীনতার এ ঊষালগ্নে আজ তিনি আমাদের মধ্যে নেই। বর্বর জঙ্গীশাহীর কারাগারে আজ তিনি আবদ্ধ। আমরা জানি না, অন্ধকার কারাগারে কি দুঃসহ জীবন তিনি যাপন করছেন। বাংলাদেশের মানুষ, বাংলাদেশের বীর মুক্তিবাহিনী, আমরা সবাই যাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত, আর যাঁর আদর্শকে রূপ দেওয়ার জন্য আজকের এই সংগ্রাম চলছে এবং চলবে, সেই মহান নেতাকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা চেষ্টা করছি এবং করে যাবো। যে হানাদার দস্যুরা বাংলার নয়নমণিকে কারাগারে আজও আবদ্ধ রেখেছেন, তাদের কাছে আমি বলতে চাই, সাড়ে সাত কোটি বাঙালির দুর্জয় সাহস আর প্রতিজ্ঞা যেমন অস্ত্রের ভাষায় রুদ্ধ করা যায়নি, তেমনি করে বাংলার অবিসংবাদিত নেতাকে কারাগারে রেখেও তারা নিস্তার পাবেন না।
প্রিয় দেশবাসীর কাছে আমি, আমার সরকারের তরফ থেকে আশ্বাস দিচ্ছি, বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য চেষ্টা করছি, সেই চেষ্টা চালিয়ে যাবো। কেননা আমরা মনে করি, বঙ্গবন্ধুকে ফেরত না পেলে বাংলাদেশের মানুষের কাছে এই স্বাধীনতার আনন্দ উপভোগ করা সম্ভবপর হবে না।”
এইভাবে সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সভা-সমাবেশে দেওয়া অগনিত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করেছেন। নানা প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে সামনে এনেছেন। কারণ বঙ্গবন্ধুই ছিলেন তাঁর প্রথম ও শেষ নেতা।