বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের আনন্দ-বেদনামাখা স্মৃতিগুলো হাতড়াতে হাতড়াতে শুভ্র বিছানায় নিজেকে ছড়িয়ে দিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম। মনে পড়ে, তেতাল্লিশ-চুয়াল্লিশ সালের কোনো এক শীতের সকালে প্রথম পা রেখেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ঘাসে। ইতিহাস পড়তে এসে নিজেই হয়ে গেলেন তার অংশ। অগণিত দিন-রাত কেটেছে নিউ মার্কেট, শাহবাগ, রমনা, রেসকোর্স ময়দানকে ঘিরে। সলিমুল্লাহ্ মুসলিম হল হয়ে উঠেছিল নিজ বাড়ির মতো অতি আপন। হল ছাত্রসংসদে বন্ধুদের ভালোবাসায় নির্বাচিত ভিপি। সড়কে উত্তাল মিছিলে সহযোদ্ধাদের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে তেজোদ্বীপ্ত স্লোগান—‘আমাদের দাবি, আমাদের দাবি, মানতে হবে, মানতে হবে’। ‘রাষ্ট্রভাষা, রাষ্ট্রভাষা, বাংলা চাই, বাংলা চাই’। ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’র ব্যানারে যশোদলের বীর দামপাড়ার সহজ-সরল ছেলেটি লড়াই করে যাচ্ছে শাসক শ্রেণির বিরুদ্ধে। বুলেট-বেয়নেট কোনো কিছুই যেনো দমাতে পারেনি গাঁয়ে কাঁদা-মাটির গন্ধ লেগে থাকা সদ্য কৈশোর পার হওয়া তরুণ ছেলেটিকে। রাজনীতির পাশাপাশি খেলার মাঠেও সক্রিয় সময়। ক্রিকেট, ফুটবল, হকি ও লন টেনিসের তুখোড় খেলোয়াড়। বরাবরই চ্যাম্পিয়ন ছিলেন এসব খেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট দলের সফল অধিনায়ক। কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ব্লু’ পদক জয়। সে ছিল কী ভীষণ এক আনন্দের স্মৃতি! কিন্তু অবাক করার মতো বিষয় হলো, এসবেই কোনো কিছুই এতদিন মনে পড়েনি. মনে আসেনি। কেন জানি আজ তাঁর শরীর রাজ্যের আলস্যকে ঝাপটে ধরেছে। এমনটা শেষ কবে হয়েছিল মনে পড়ে না। সারাদিনের বিরতিহীন কাজের ক্লান্তি তাঁকে পেয়ে বসেছে। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে?—প্রশ্নটা নিজের মনের মধ্যে থাকলেও স্ত্রী নাফিসা ইসলাম ঠিক উত্তরটাই দিয়ে দিলেন। এতে খানিকটা অবাকও হলেন তিনি।
—জীবনের প্রায় বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে দিলাম আপনার সাথেই, আর সেই আমি আপনাকে বুঝবো না, চিনবো না, তা কী করে হয়? শুধু কাজ আর কাজ। এভাবে আর কত? এবার একটু শরীরের দিকে নজর দিন। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুও কিন্তু আপনার শরীর নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমাকে বিশেষভাবে আপনার সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। যেনো আমি তৎপর থাকি।
—সেটা আমিও জানি, মুজিব ভাই আমাকে নিয়ে বিশেষ ভাবেন। আমার শরীর-স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে তিনি সবসময় খেয়াল রাখেন। আমি এও জানি তিনি মন্ত্রীসভার কাউকে কাউকে আমার স্বাস্থ্যের প্রতি নজর রাখতে দায়িত্বও দিয়েছেন। তিনি কখনো আমার বন্ধু, কখনো অভিবাবক হয়ে পরম মমতায় পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। সত্যি বলতে কী এমন পরম বন্ধু আমার জীবনে এই একজনই। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ, সেদিন সিলেটের পবিত্র ভূমিতে তাঁর সাথে আমার সাক্ষাৎ ঘটিয়েছিলেন। না হয় আমার ভাগ্যরেখা হয়তো অন্য পথেই হাঁটতো—বললেন সৈয়দ নজরুল।
—ঠিক বলেছেন। আমিও মাঝে মাঝে ভাবি, সাতচল্লিশের গণভোটের সময় সিলেটে বঙ্গবন্ধুর সাথে আপনার দেখা না হলে, এমন বিরল বন্ধুত্বের সাক্ষী হয়তো জীবনেও হতে পারতাম না। একে অপরের প্রতি কী গভীর শ্রদ্ধাভরা নিখাদ ভালোবাসা!...
—নাফিসা তুমি যথার্থই বলেছো। আমাদের দুজনেরই সিলেটে যাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল একই। সেখানে বিরাট জনসভায় আমরা বক্তৃতা দিয়েছি। অগণিত মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। শুধু আমরা নই, সে সময় ছাত্রনেতাদের পাশাপশি বেশ কয়েকজন শীর্ষ রাজনীতিকও উপস্থিত ছিলেন। অন্য অনেকের মধ্যে তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিবই আমাকে আকর্ষণ করেছিল। কেন জানি না, তিনিও আমাকে গ্রহণ করেছিলেন আন্তরিকতার সঙ্গে। আজ প্রায় আঠাশ-উনত্রিশ বছর হতে চললো, লড়াই-সংগ্রামে, সুখে-দুখে আমরা একসাথে আছি। তিনি যেনো ছায়া হয়ে আমার পাশে আছেন।
পাশে বসে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে নাফিসা ইসলাম বললেন— এবার একটু ঘুমানোর চেষ্টা করুণ। কাল অনেক কাজ আপনার। বঙ্গবন্ধু পৌঁছাবার আগেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যেতে হবে, সমাবর্তনে বক্তব্যও রাখতে হবে। আমি কি আপনার মাথায় একটু নারিকেল তেল দিয়ে দেবো?
—না, আলোটা নিবিয়ে দাও, আমি ঘুমানোর চেষ্টা করি বলে কাত হয়ে উলটো দিকে ঘুরলেন সৈয়দ নজরুল।
দুই.
ঠিক তখনো রাতের আধাঁর পুরোপুরি কাটেনি। মুহুর্মুহু গুলির শব্দে ঘুম ভেঙে যায় নাফিসা ইসলামের। ধীরে ধীরে মশারির ভেতর থেকে হাত বাড়িয়ে বিছানার পাশে থাকা ল্যাম্পটির সুইচ অন করে সৈয়দ সাহেবের মাথায় হাত দিয়ে ডাকলেন—শুনছেন? বাইরে কিসের যেন প্রচণ্ড আওয়াজ হচ্ছে। একের পর এক বিকট শব্দ!
চোখ মেলে তাকানোর পর আরও একটি বিকট শব্দে বিছানা থেকে উঠে বসলেন সৈয়দ নজরুল। এবার নাফিসা ইসলামকে উলটো প্রশ্ন করলেন, কিসের শব্দ কিছু বুঝতে পারছো? ছেলে-মেয়েরা কোথায়?
—না।
—বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন উপলক্ষে ছেলেরা বোম-পটকা ফোটাচ্ছে বোধ হয়। অবশ্য বোম-পটকার শব্দ এত তীব্র হয় না। মনে হয় অন্যকিছু..!
—অন্যকিছু! বুঝতে পারছি না, কী হতে পারে।
এরমধ্যে শিশুকন্যা লিপি আর রুপা ভয়ার্ত অবস্থায় দৌড়ে রুমে ঢুকে। আম্মা কীসের শব্দ হচ্ছে, তীব্র শব্দে ঘুমাতে পারছি না—কন্যা লিপির কথা শুনে তাঁরা দুজনেই একে অপরের দিকে আবার তাকালেন।
তেমন কিছু নয়, তোমরা ভয় পেও না, আমার কাছে আসো, বললেন সৈয়দ সাহেব।
নাফিসা ইসলাম বললেন, আপনি একটু পুলিশকে ফোন করুন, তাহলেই সব জানা যাবে, বলেই টেলিফোনটি এগিয়ে দিলেন তাঁর দিকে। কয়েকবার চেষ্টা করে সংযোগ না পাওয়ায় সন্দেহ হলো টেলিফোন লাইনটি কাটা পড়েছে। কিন্তু এত নিরাপত্তার মধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্টের বাসার লাইনটি কাটা পড়লো কীভাবে, কারাই বা কাটলো? কিংবা লাইনটি সত্যিই কাটা পড়েছে কিনা সেটাও ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। বিষয়টি ঝটিল মনে হচ্ছে। নজরুল ইসলামের মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে নানা কিছু, কিন্তু মুখে তা প্রকাশ করছেন না। হঠাৎই তাঁর মনে হলো, বাইরের পুলিশকে ফোন কেন, বাড়ির নিরাপত্তায় থাকা পুলিশ সদস্যদের কাউকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেইতো হয়। সে ভাবনায় উঠে দাঁড়িয়েছেন, এমন সময় কম্পাউন্ডের ভেতরে দায়িত্বে নিয়োজিত একজন কর্মচারি এসে বাসার দরজায় জোরে জোরে কড়া নাড়লেন। শব্দ শুনে সৈয়দ সাহেব একটু দ্রুতই এগিয়ে গেলেন, সঙ্গে বেগম নজরুল। দরজা খুলতেই লোকটি জানালেন, স্যার, আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায় হামলা হয়েছে। ওদের বাসার ভেতর থেকে রক্তের স্রোত বেড়িয়ে আসছে, বলেই অতি দ্রুত তিনি আবার চলেও গেলেন। তাঁর ধারণার ঠিক বিপরীত এবং অপ্রত্যাশিত সংবাদটি শোনার পর সৈয়দ সাহেব কিছুটা ভড়কে গেলেন। সেরনিয়াবাতের বাসায় হামলা! এ কী করে সম্ভব? বিস্তারিত জানতে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাকে ডাকতেই, একজন এসে জানালেন, স্যার পুরো বাড়ি আর্মি ঘিরে রেখেছে। তারা অবস্থান নিয়ে আদেশ জারি করেছে, এই ভবন থেকে কেউ আর এখন বেরুতে পারবে না, ঢুকতেও পারবে না। তবে, তাদের নিজেদের আলাপে শুনেছি, বত্রিশ নম্বরে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে হামলা হয়েছে। বেশ কয়েকজন মারা গেছেন।
বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হামলা! কার এত বড় দুঃসাহস? এসবের পেছনে কারা?
জানি না স্যার, আমি গেলাম স্যার।
এসব হচ্ছেটা কী? সেরনিয়াবাতের বাসায় হামলা, বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হামলা! আবার আমাকেও নজরবন্দি করেছে! তাহলে কী.....!
কিছু কি বুঝতে পারছেন, কী হচ্ছে এসব? নাফিসা ইসলামের এমন প্রশ্নে সৈয়দ সাহেব বললেন—যদি বঙ্গবন্ধুর কিছু হয়ে থাকে, তাহলে আমাদেরতো বেঁচে থাকার প্রশ্নই আসে না। জানি না আসলে কী হয়েছে, হতে যাচ্ছে, সব আল্লাহ্ জানেন।
দুপুরের আগেই জানা গেলো, ঘাতকেরা বত্রিশ নম্বরে হামলা করে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। কিন্তু ঠিক কারা এর পেছনে এর কোনো সঠিক তথ্য সৈয়দ সাহেবের জানা নেই। তবে এর পেছনে যে সেনাবাহিনী জড়িত, তা ঠিক ঠিক অনুমান করতে পারছেন তিনি। এরমধ্যে বাড়ির পেছন দিক থেকে ঢুকে পরিচিত কয়েকজনসহ তাঁর এলাকার ছেলে, দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত পিয়ন কামরুল সৈয়দ সাহেবকে অনুরোধ জানালেন, পালিয়ে যেতে। তারা সব ব্যবস্থা করবেন। তিনি তাদের বললেন— একটা কথা জেনে রেখো তোমরা, কাপুরুষের মতো পালিয়ে যাওয়ার মানুষ আমি নই। জীবন-মৃত্যুর পরওয়া না করে পাকিস্তানী সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে তেইশ বছর লড়াই করেছি, মুক্তিযুদ্ধ করেছি। না, সৈয়দ নজরুল পালিয়ে যাবে না। আমি সব মোকাবেলা করবো। তোমরা কি ভুলে গেছো? পাকিস্তানী সামরিকজান্তার হাতে নিশ্চিত মৃত্যু হতে পারে জেনেও আমার নেতা একাত্তরের পঁচিশ মার্চ পালিয়ে যাননি, আমি যে তাঁরই সহযোদ্ধা সৈনিক। আমি মৃত্যুকে পরোয়া করি না।
তাদেরকে বিদায় করে দিয়ে কিছুক্ষণ পর স্ত্রী নাফিসা ইসলামের কাছে জানতে চাইলেন— ছেলে মেয়েদের দেখছি না!?
—কামরুল ওদের নিয়ে গেছে।
—কোথায়?
—পেছনের স্টাফ কোর্য়াটারে। বললো, ‘কখন কী হয়, বলা তো যায় না। অন্তত বাচ্চাদের নিরাপদে রাখি’। আমি বাধা দেইনি।
তিন.
কালো রংয়ের মোটা ফ্রেমের চশমাটা খুলে পড়নের সাদা পাঞ্জাবির নিচের অংশ দিয়ে বারবার চোখ মুছছেন। পানি যেনো বাধাহীন গড়িয়ে পড়ছে। একের পর এক সিগারেট ফুকে যাচ্ছেন। জানালার পাশে দাঁড়িয়ে মাথা ঘুড়িয়ে রুমটাকে দেখে নিলেন একপলক। ভাবছেন.... ভাইস প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত এই খাস-কামরাটিতে অন্যান্য দিনের মতো আজ কোনো লোকেদের ভীড় নেই, কোলাহল নেই, কারো কোনো দাবি নেই, কেমন যেনো নিস্প্রাণ সব। নিশ্চয়ই এখন এমনই হাহাকার ধানমণ্ডির বত্রিশ নম্বরের বাড়িটিতে। নিত্য হাজারো মানুষের পদভারে মুখরিত বাড়িটিতে রক্তের স্রোত বইছে। বাড়িটির প্রতিটি দেয়াল, গাছ, কবুতর, পাখি, সাদা বিড়ালের ছানাগুলো চিৎকার করে কাঁদছে বঙ্গবন্ধু, বেগম মুজিব, শেখ কামাল, শেখ জামাল, সুলতানা কামাল, রোজী জামাল, শিশু রাসেলের জন্য। তারা কেউ বেঁচে নেই! আর কখনো তাদের সাথে দেখা হবে না। আমরা কত দুর্ভাগা জাতি। যে মানুষটির তর্জনীর আদেশে সাত কোটি বাঙালি উঠতো-বসতো। যাঁর নেতৃত্বে আমাদের একটি স্বাধীন ভূখণ্ড হলো। লাল-সবুজের পতাকা হলো। বিশ্বের বুকে স্বাধীন জাতি হিসেবে পরিচয় দেওয়ার সুযোগ তৈরি করলেন যিনি, তাঁকেই কী না আমরা হত্যা করলাম। আমরা কত জঘন্য, ঘৃণিত! ঘাতকদের হাত একবারও কি কেঁপে ওঠলো না? মনে হলো না, পিতাকে হত্যার মধ্যে দিয়ে নিজেদেরকে চিরতরে নিঃশেষ করে দেওয়া হবে। কবর হবে বাংলার শান্তির, সম্প্রীতির, ভালোবাসার, সাহসের, হাসি-আনন্দের। যার পরিণাম হবে ভয়ংকর।
চার.
ক্রিং ক্রিং ক্রিং শব্দে টেলিফোনটা বেজে চলছে। কে ফোন করেছে, কেন করেছে? হঠাৎ মনে হলো, ফোনটা তো কাজ করছিল না সে সময়, তাহলে এখন সচল হলো কীভাবে? অজানা এক শঙ্কায় রিসিভারটা তুললেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
—হ্যালো, আমি খন্দকার মোশতাক বলছি। এতক্ষণে নিশ্চয়ই শুনেছেন, শেখ মুজিব মৃত্যুবরণ করেছেন। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছে। আমি তাদের সাথে আছি, আপনিও যোগ দেন। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদ দেওয়া হবে আপনাকে। আপনি রাষ্ট্রপতি হইবেন। আমরা আপনারে পাশে চাই। আর না হয় কখন কী হয়ে যায়, আমি কইতে পারবো না।
কথাগুলো শুনে ধীর-স্থির শান্ত স্বভাবের সৈয়দ সাহেব হঠাৎ ক্ষেপে গেলেন— বেঈমান, এসবের পেছনে তাহলে তুই জড়িত! কত বড় শয়তান তুই! আমাকে ক্ষমতার লোভ দেখাস! আর কখনো তুই আমাকে ফোন করবি না। দেশের মানুষের সাথে বেঈমানী করলি! মুজিব ভাইয়ের লাশের উপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতার মোহে অমানুষ হয়ে গেলি। অথচ, তিনি তোকে কতই না ভালোবাসতেন!—বলেই প্রচণ্ড রাগে কাঁপতে কাঁপতে টেলিফোনটাকে সজোরে আছড়ে ফেললেন মেঝেতে।