দরজায় কড়া নাড়ছে দীপাবলি। আলোর উৎসবে মেতে উঠবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। প্রতিটি ঘর রাঙিয়ে উঠবে রাঙ্গুলি বা আলোর ঝলকানিতে। সেই সঙ্গে থাকবে খাবারের আয়োজনও। নানা পদের আয়োজন হবে। পরিবারের সদস্যদের পছন্দের খাবার বানাতে দিনভর ব্যস্ত থাকেন বাড়ির গৃহিণীরাও। দীপাবলির খাবারে নিত্য পদের বাইরে নতুন কিছু রান্না করতে পারেন। যা খেয়ে আপনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হবে ছোট-বড় সবাই।
রোজ ব্লসম লাড্ডু
যা যা লাগবে_
যেভাবে বানাবেন_
প্রথমে একটি কড়াইতে সামান্য ঘি গরম করে নিন। তাতে বেসন দিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকুন। ঘি’এর সঙ্গে বেসন মিশে বাদামি রঙ হলে চুলা থেকে নামিয়ে রাখুন। এবার অন্য একটি কড়াইয়ে কাঠবাদাম হালকা ভেজে নিয়ে ছোট ছোট টুকরো করে নিন।
অন্য একটি নন-স্টিকিতে পরিমাণ মতো চিনির শিরা তৈরি করুন। শিরা আঠালো হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। শিরা ঘন হয়ে এলে কাঠবাদামের টুকরো দিয়ে দিন। কিছুক্ষণ নেড়ে এরমধ্যে বেসন দিয়ে দিন। মিশ্রণটি ঘন হলে নামিয়ে নিন। হাতে মধু মাখিয়ে লাড্ডুর আকার দিন। তারপর লাড্ডু তৈরি হয়ে গেলে তার গায়ে গোলাপ ফুলের পাপড়ি কুঁচি মাখিয়ে দিন। রোজ ব্লসম এই লাড্ডু দেখতেও যেমন সুন্দর খেতেও সুস্বাদু।
অ্যাভোক্যাডো-আলুর চাট
যা যা লাগবে_
যেভাবে বানাবেন
প্রথমে অ্যাভোক্যাডো পাতলা করে কেটে নিন। আলু সিদ্ধ করে নিন। সেদ্ধ আলু টুকরো করে কাটুন। ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করে আলুগুলো লালচে করে ভেজে নিন। একটি পাত্রে ভাজা আলু, পুদিনা পাতার চাটনি, মিষ্টি চাটনি, মিষ্টি দই, পেঁয়াজ কুঁচি, টমেটো কুঁচি, ধনেপাতা কুঁচি, লবণ একসঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
একটি পাত্রে গোল করে পাতলা করে কাটা অ্যাভোক্যাডোর টুকরোগুলো সাজিয়ে দিন। খেয়াল রাখবেন, অ্য়াভোক্যাডোর টুকরো সাজানোর পর মাঝে বেশ খানিকটা জায়গা খালি থাকে। এবার তৈরি করে রাখা আলুর চাট মাঝখানে দিয়ে দিন। এবার এর উপরে বেদানা এবং অল্প ধনেপাতা কুঁচি ছিটিয়ে দিন। তৈরি হয়ে যাবে অ্যাভোক্যাডো-আলুর চাট।
সুগার ফ্রি আঞ্জির সুলতানে
যা যা লাগবে_
যেভাবে বানাবেন_
প্রথমে শুকনো ডুমুর অন্তত ১২ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ১২ ঘণ্টা পর পানি থেকে তুলে পেস্ট তৈরি করুন। এবার সব ড্রাই ফ্রুটসগুলো ছোট টুকরো করে আলাদা পাত্রে রাখুন। এরপর চুলায় কড়াই বসিয়ে ডুমুরের পেস্ট ও খেঁজুরের টুকরো দিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকুন। লক্ষ্য রাখবেন, যেন চুলার আঁচ বেড়ে না যায়। হালকা আঁচে সময় নিয়ে রান্না করতে হবে।
ডুমুরের পেস্ট ও খেজুরের টুকরা ভালোভাবে মিশতে মিনিট দশেক সময় দিন। তারপর এতে কেটে রাখা সব ড্রাই ফ্রুটস এবং এলাচ গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
সব উপকরণ ভালোভাবে মিশে গেলে একটি পাত্রে ঢেলে সমানভাবে বিছিয়ে নিন। এর উপর পোস্ত ছিটিয়ে দিন। অন্তত দুই ঘণ্টা ফ্রিজে রাখুন। ঠান্ডা হওয়ার পর ইচ্ছেমতো আকার দিয়ে কেটে ফেলুন।
প্রদীপ সন্দেশ
যা যা লাগবে
যেভাবে বানাবেন_
প্রথমে দুধ ফুটিয়ে নিয়ে এর মধ্যে দুই টেবিল চামচ লেবুর রস দিন। লেবুর রস গরম দুধে দিলে সেটা ছানা হয়ে যাবে। এবার এই ছানাতে যে বাড়তি পানি আছে তা ছেঁকে নিন। তারপর ছানা এক ঘণ্টা জন্য রেখে দিন।
এরপরন ছানাটাকে নরম করার জন্য একটু ফেটিয়ে নিন। মাঝারি আঁচে ছানা রান্না করতে থাকুন। এবার অন্য চুলায় ছানা থেকে অর্ধেক পরিমাণ ছানা নিয়ে তারমধ্যে দুই টেবিল চামচ কোকো পাউডার আর এক কাপ চিনি মেশান। মোটামুটি সবটা মিশে গেলে আঁচ বন্ধ করে দিতে হবে।
এবার অবশিষ্ট ছানার মধ্যে হাফ কাপ কুড়ানো নারিকেল এবং হাফ কাপ চিনি ভালোভাবে মেশান। এই মিশ্রণের মধ্যে হলুদ রঙ মেশান। মাঝারি আঁচে খানিকক্ষণ এই ছানা রান্না করুন। এখন দু'টো ছানাই সমান ছয় ভাগে ভাগ করুন। এবার কাঠবাদাম ছয়টা নিয়ে হলুদ আর লাল রঙে রাঙিয়ে নিন।
ছানার যে অংশে কোকো পাউডার মেশানো হয়েছে সেই চকোলেট অংশ দিয়ার মতো আকার দিন। যদি ছাঁচ থাকে তাহলে সেটাও ব্যবহার করা যায়। তারপর প্রদীপ বা দিয়ার যে মাঝখানের ফাঁকা অংশ সেখানে হলুদ রঙের ছানা দিয়ে ভরে দিন। যে কাঠবাদামগুলো লাল ও হলুদ রঙ করা হয়েছিল সেগুলো দিয়া আকারের সন্দেশের সঙ্গে এমনভাবে রাখুন যেন মনে হয় প্রদীপের শিখা। সবশেষে একটি বক্সে করে এই সন্দেশ শক্ত হতে ফ্রিজে রাখুন। ঘণ্টাখানেক পর প্রদীপ সন্দেশ খাওয়ার উপযুক্ত হয়ে যাবে।