ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক পোশাক!

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২১, ০৪:০৮ পিএম

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ফ্যাশনে এসেছে নানা পরিবর্তন। শুধুমাত্র ফ্যাশনের জন্যেই স্বীকার করতে হয় অনেক কষ্ট। নিজেদের অসাবধাণতার ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ে আমাদের স্বাস্থ্য। এই ফ্যাশন ট্রেন্ডের স্রোতে গা ভাসিয়ে শরীরের ক্ষতি করা একদম ঠিক নয়। তবে আমরা ইতিহাস ঘুরলে দেখতে পাবো, শুধুমাত্র সৌন্দর্যের খাতিরে নিজের জীবন বিপন্ন করেছেন অনেক নারী।

সুন্দরের প্রতি দুর্বলতা সবার থাকে। তাই যুগে যুগে পৃথিবীতে আবিষ্কৃত হয়েছে, ব্যক্তিকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্যে নানা ধরনের ফ্যাশন। মাঝেমধ্যে যা মানুষের জন্য খুবই বিপজ্জনক। অতীতে এমন কিছু পোশাক ছিল নারীদের ফ্যাশনের তালিকায় যা ভয়াবহ বিপজ্জনক। সে পোশাক পরিধানের ফলে অতীতে অনেক নারীর মৃত্যু হয়েছে! এজন্যই এই ফ্যাশনকে ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক ফ্যাশন ট্রেন্ড বলে অভিহিত করা হয়।

করসেট

সুন্দর নারী মানেই তাকে হতে হবে স্লিম, এমন একটা ধারনা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। বিশেষ করে নারী শরীরের কোমরের দিকটা পাতলা হলে তা বেশি আকর্ষণীয় মনে করা হয়। সেই বিশ্বাস থেকেই অতীতে নারীরা চেষ্টা করতেন পেট ও কোমরের অংশ পাতলা করতে।

এ কারণে উদ্ভাবিত হয় করসেট। যা পরলে কোমরের অংশটা বেশ চিকন দেখায়। তৎকালীন সময়ে এই কারসেট পরার প্রবণতা বেড়ে যায় নারীদের মধ্যে। তবে অনেক বিপজ্জনক এক ফ্যাশন ট্রেন্ড এটি। কারণ করসেট অনেক টাইট হয়ে শরীরের সঙ্গে লেগে থাকে। এটি পরলে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিকভাবে নেওয়া যায় না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, করসেট পরলে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে অনেকেরই অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হতে পারে। সেইসঙ্গে ভাঙা পাঁজর, হজমের সমস্যা, হিস্টিরিয়া, বিষণ্নতা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যসহ মোট ১০০টি রোগ হতে পারে করসেট পরলে।

পাঁজরের হাড় অপসারণ

নিজেকে সুন্দর দেখাতে অতীতে পাঁজরের হাড় অপসারণ করার একটা চলন ছিল। কোমরের কাছাকাছি পাঁজরের নিচের হাড় সার্জারের মাধ্যমে কেটে বাদ দেয়া হতো। ভিক্টোরিয়ান যুগে এই ট্রেন্ড চালু ছিল। এক্ষেত্রে সার্জনরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পাঁজরের হাড় অপসারণ করতেন। যা পরবর্তীতে সংক্রমণ ও মৃত্যুর কারণ হতো তৎকালীন সময়ে।

ক্রিনোলিন

১৮৫৬ সালে আরসি মিলিয়েট এই ভয়ঙ্কর পোশাকটির উদ্ভাবক। ভিক্টোরিয়ান পোশাক ক্রিনোলিন ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক ফ্যাশন ট্রেন্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম। ইতিহাস বলছে, ভয়ঙ্কর এই পোশাক পরে প্রায় ৩০০০ নারী মারা যান।

যার মধ্যে ছিলেন উইলিয়াম ওয়াইল্ডের কন্যা এমিলি এবং মেরি। যারা ক্রিনোলিন গাউন পরিহিত অবস্থায় পোশাকে আগুন লেগে পুড়ে মারা যান। ক্রিনোলিন পোশাকগুলো অনেক ঘের ও কয়েক স্তরের হয়ে থাকে। এ জাতীয় পোশাকের কাপড় সাধারণত টিস্যু বা সিল্কের হয়ে থাকে। যাতে সহজেই আগুন লেগে যেতে পারে।

এ ছাড়াও এ পোশাক পরে হাঁটতে গিয়ে অনেকেই পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এমনকি যানবাহনের গাড়ির চাকায় জড়িয়েও অঘটন ঘটেছে অনেক। ক্রিনোলিন গাউন পরলে তা বাতাসে উড়তে থাকে। ফলে এটি পরে বাইরে বের হলে চলাচল করার সময় যেকোনো বিপদ ঘটতে পারে।

সূত্র: দ্য ভিনটেজ নিউজ