আসছে শীত। শুষ্ক আবহাওয়ায় চুলের রুক্ষতা বাড়বে। রুক্ষ চুলের প্রধান সমস্যা আগা ফাটা। অপুষ্টি এবং অযত্নের কারণেও চুলের আগা ফাটা শুরু হয়। এতে চুলের চাকচিক্য নষ্ট হয়। তাই শীতের সময় চুলের আর্দ্রতা ঠিক রাখতে প্রয়োজন কিছু বাড়তি যত্নের।
প্রাকৃতিক অনেক উপাদান চুলের আগা ফাটা সমাধানে কার্যকর। নিয়মিত যত্ন এবং সঠিক খাওয়া-দাওয়া করে সহজে এই সমস্যার সমাধান পাওয়া যাবে। চুলের আগা ফাটা কমাতে বা ঠেকাতে ঘরেই হেয়ার মাস্ক তৈরি করে নিন। নিয়মিত ব্যবহারে পাবেন সমাধান।
হট অয়েল ট্রিটমেন্ট
চুলের যত্নে তেলের ব্যবহার অনেক আগে থেকেই হয়ে আসছে। চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে অলিভ অয়েল অথবা নারকেল তেল নিন। হালকা গরম করে তা মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন। সবসময় চুলের গোড়ার দিক থেকে আগার দিকে তেল মালিশ করা উচিত। খুব জোরে কখনই চুল ঘষবেন না।
কলা
পাকা কলা চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার। এটি চুলের ইলাস্টিসিটি বাড়ায় এবং চুল পড়াও রোধ করে। দুইটি পাকা কলা ব্লেন্ড করুন। তা সরাসরি চুলে লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট রেখে ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এছাড়া কলার সঙ্গে মধু ও টক দইয়ের পেস্ট বানিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। এটি চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াবে।
মরোক্কান অয়েল
নরম ও স্বাস্থ্য-উজ্জ্বল চুলের জন্য এই তেল দারুণ কার্যকর। মরোক্কান অয়েলে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, ওমেগা-৩ এবং ওমেগা-৬-ফ্যাটি অ্যাসিড। শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহারের পর চুলে তোয়ালে জড়িয়ে রাখুন, যাতে অতিরিক্ত পানি শুষে নেয়। অল্প মরোক্কান অয়েল হাতে নিয়ে ভেজা চুলের মাঝামাঝি থেকে ডগা অবধি ম্যাসাজ করুন। প্রতিবার শ্যাম্পু করার পর এভাবে মরোক্কান অয়েল ব্যবহার করুন। উপকার পাবেন।
জবা ফুলের হেয়ার প্যাক
চুলের যত্নে জবা ফুল অত্যন্ত কার্যকরী। চুলের আগা ফাটা রোধ করে চুলকে ঘন, মজবুত ও ঝলমলে করবে জবাফুলের হেয়ার প্যাক। ৩টি জবা ফুল, আধ কাপ নারিকেল তেল এবং ৪০টি সতেজ নিমপাতা হালকা গরম করে ছেঁকে নিন। এরপর ঠান্ডা করে বোতলে ভরে রাখুন। এটি নিয়মিত চুলে ব্যবহার করুন। চুলের আগা ফাটা কমে যাবে।
মধু
প্রাকৃতিক গুণে সমৃদ্ধ মধু চুলের আগা ফাটায় অত্যন্ত উপকারী। টক দই ও মধু মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি চুলের ডগায় লাগিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে দিন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
আর্গান অয়েল
আর্গান অয়েল ‘লিক্যুইড গোল্ড’ নামে পরিচিত। আর্গান বীজ থেকে এই তেল তৈরি করা হয়। এটি ভিটামিন ই, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। যা চুলের আগা ফাটা রোধ করে। শ্যাম্পু করার পর ভেজা চুলে আর্গান অয়েল লাগালে উপকার পাবেন।
কোকোনাট মিল্ক মাস্ক
টাটকা নারকেলের দুধ নিয়ে পুরো মাথার তালুতে এবং চুলের ডগায় ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। এরপর শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন। একঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
অ্যাভোকাডো প্রোটিন মাস্ক
একটি অ্যাভোকাডোর পেস্ট তৈরি করুন। এর সঙ্গে একটা ডিম ফেটিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর এতে এমনভাবে অলিভ অয়েল মেশাতে হবে, যাতে এটি কন্ডিশনারের মতো ঘন হয়। মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে ১০-২০ মিনিট রেখে দিন। সবশেষে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
ডিপ কন্ডিশনিং হেয়ার মাস্ক
শীতের সময় সপ্তাহে একবার ‘ডিপ কন্ডিশনিং হেয়ার মাস্ক’ ব্যবহার করুন। আর্গান তেলসমৃদ্ধ চুলের মাস্ক চুলকে আর্দ্র ও মসৃণ রাখতে সহায়তা করে।
বাতাসে চুল শুকিয়ে নিন
তাপীয় যন্ত্র চুলে কম ব্যবহার করুন। চুলের শুকানো কিংবা স্টাইল করতে যন্ত্রের সাহায্যে হিট দিয়ে স্ট্রেট বা কার্ল করা ক্ষতিকর। স্বাভাবিক বাতাসে চুল শুকিয়ে নিন। এতে দীর্ঘসময় চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।