জীবনের সঞ্চয় থেকে একটি বাড়ি বানানোর স্বপ্ন সবারই থাকে। ছোট হোক কিংবা বড়, নিজের বাড়িতে প্রশান্তিই আলাদা। কষ্টের টাকা দিয়ে বাড়ি বানাবেন। তাই টেকসই ও মানসম্পন্ন বাড়ি বানাতে কোনও কম্প্রোমাইজ করা যাবে না। সেই সঙ্গে কতটা সাশ্রয়ে বাড়ি বানানো যাবে এর জন্য় পূর্ব পরিকল্পনা দরকার।
বাড়ি বানাতে বেশ খরচ হয়। সেই সঙ্গে বাড়ি তৈরি হলে বছর বছর বাড়ি ও তার যন্ত্রপাতি মেরামতির খরচও লেগেই থাকে। তাই বাড়ির নির্মাণের সময়ই খরচ সাশ্রয়ের বিষয়টা নজরে রাখতে হবে। তাই বাড়িকে আরও টেকসই এবং নির্মাণ খরচের ভার কমাতে কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখুন_
সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি
বাড়ির জন্য শক্তি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করুন। ফ্রিজ, এসি, মাইক্রোওয়েভের মতো আরও অন্য গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি চালাতে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। এই সব যন্ত্রপাতি আদৌ শক্তি সাশ্রয়ী কি না, তা দেখে কিনুন। শক্তি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতিগুলিতে এক ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এতে কম বিদ্যুতে এগুলো চলবে। বিদ্যুতের খরচও সাশ্রয় হবে।
আলোর ব্যবস্থা
নতুন বাড়ির আলোকিত ও ডেকোরেশন করতে চারপাশে অনেক বাতি লাগাতে হয়। এতে বিদ্যুতের খরচ বাড়ে। তাই বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে বাড়িতে সৌর প্যানেল লাগাতে পারেন। সৌর প্যানেলের মাধ্যমে সূর্যরশ্মি থেকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। বসার ঘরে বা লিভিং রুমে অপ্রচলিত শক্তির মাধ্যমে উৎপন্ন বিদ্যুৎ ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে খরচ কমবে। বাড়িতে এলইডি আলো ব্যবহার করুন। এই আলো অনেকটাই বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে।
রঙ
ঘরের দেওয়ালে রং করবেন? পরিবেশ-বান্ধব রঙ ব্যবহার করুন। এই ধরনের রঙে বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি কম থাকে। এটি বায়ুদূষণ কমাতেও সক্ষম।
ঠাণ্ডা ছাদ
বাড়ি বানানোর সময় ‘কুল রুফ’-এর মাধ্যমে ছাদ বানিয়ে নিন। এটি সূর্যরশ্মি শোষণ না করে, তা প্রতিফলিত করে দেয়। এতে ছাদ ঠাণ্ডা থাকে এবং ঘরও ঠাণ্ডা রাখবে। যার ফলে অতিরিক্ত গরমেও এয়ারকন্ডিশনের প্রয়োজন হয় না। খরচ অনেকটাই কমে যায়। সেই সঙ্গে গরমের স্থায়ী সমাধান পাওয়া যায়।
ইনস্যুলেশন
ইনস্যুলেশন হলো এমন একটি বস্তু, যা তাপ এবং শব্দ চলাচল রোধ করে। বাড়ি বানানোর সময় ইনস্যুলেশন ব্যবহারের উপর জোর দিন। এটি খরচ সাশ্রয় করবে।
পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা
বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির পাইপ নিয়মিত পরিস্কার করুন। কোনও যন্ত্রের পাইপে নোংরা ও ধুলো জমলে তা বেশি শক্তি খরচ করে। তাই নিয়মিত পরিস্কার করা হলে তা বেশি পরিমাণ শক্তি খরচ করবে না।
পরিবেশ-বান্ধব জিনিস
ঘরের জন্য পরিবেশ-বান্ধব জিনিস কিনুন। পরিবেশের ক্ষতি করে, এমন জিনিস কেনা উচিত নয়। একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন- রিডিউস, রিইউজ আর রিসাইকল। রিডিউসের অর্থ হল, পরিবেশের জন্য যা ক্ষতিকর, তা ব্যবহারে করা যাবে না। রিইউজ মানে, এমন জিনিস ব্যবহার করুন যা পুনর্ব্যবহারও করা যাবে। রিসাইকলের হচ্ছে কোনও জিনিস ভেঙে অথবা ছিঁড়ে গেলে তা দিয়ে অন্য জিনিস বানিয়ে নেওয়া। এগুলো মাথায় রেখে বাড়ির জন্য কেনাকাটা করুন।