দরজায় কড়া নাড়ছে দূর্গাপূজা। হিন্দু ধর্মাম্বলীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা। শিউলি ফুলের গন্ধে ভরপুর চারিদিক জানান দিচ্ছে দূর্গাপূজার আগমনী বার্তা। পূজাকে সামনে রেখে শুরু হয়ে গেছে কেনাকাটাও। শপিংমলের দোকানগুলো সাজানো হয়েছে বাহারি শাড়ি ও জামা কাপড়ে। ছোট-বড় নারী-পুরুষদের জন্য় পাওয়া যাচ্ছে বাহারি পোশাক। সারা বছর জিনস-কুর্তা পড়লেও পুজোর কয়েকটা দিন একদমই বাঙালিয়ানায় সাজে নারীরা। এর মধ্যে শাড়িকেই বেশি প্রাধান্য দেন। সিল্কের শাড়ি, হ্যান্ডলুম, জামদানির বাহার দেখা যায়। পুজোর বিশেষ দিনগুলোতে নারীদের আকর্ষণের কথা মাথায় রেখেই রঙ-বেরঙের শাড়ি নিয়ে আসে ফ্যাশন হাউজগুলো।
সুতি শাড়িতেই শুরু ষষ্ঠী
ষষ্ঠীতেই দূর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এই দিন ছাপা প্রিন্টের বা হাতের কাজের সুতির শাড়ি পরা যায়। মোটা পাড়ের গাঢ় রঙের সুতি শাড়ি। আঁচল ও কুচিতে হাতের কাজ বা অ্যামব্রোয়ডারি ডিজাইন করা শাড়ি পাওয়া যায়। সুতি শাড়িতে অনেকে শেইডের ব্যবহারও পছন্দ করেন। ভিন্ন দুইটি রঙের শেড শাড়ি কিংবা তিন-চারটি রঙের মিশ্রণে বাটিকের শাড়ি বেশ ভালো মানায়। আড়ং, রঙ, দেশি-দশসহ দেশের বেশ কয়েকটি ব্যান্ডে সুতি শাড়ির কালেকশন থাকে। সেখান থেকেই পছন্দ মতো পরিবার ও নিজের জন্য় কিনে নিতে পারেন। এছাড়া মার্কেটের দোকানগুলোতে সাধ্যের মধ্যে কিনতে চাইলে প্রাইড টেক্সটাইল, পারফেক্ট, বি-প্লাস-এ হাজার দুই-এর মধ্যেই ভালো কালেকশন পাবেন।
একরঙা চড়া পাড় চড়বে সপ্তমীতে
কাতান, সিল্ক, অ্যান্ডি, তসর, মসলিন কিংবা কোটা যেকোনো শাড়ি সপ্তমীর জন্য় বেছে নিতে পারেন। শাড়ি চড়া পাড়ে কারুকাজ, আর সেই সঙ্গে মিলিয়ে আঁচলও সাজানো হচ্ছে। জর্জেট বা মসলিন শাড়িতে চড়া পাড় বসিয়ে নিলে সৌন্দর্য বেড়ে যাবে। হালের ফ্যাশনে টিস্যু ও মসলিনের ব্যবহার বেড়ে গেছে। কাট ওয়ার্ক বা অ্যামব্রোয়ডারি কাজের চড়া পাড়ের মসলিনের শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। তরুণীরা এই শাড়ি বেশ উপভোগ করবে। এছাড়াও স্ক্রিন প্রিন্টের সঙ্গে হাতের কাজ, জরি, পুঁতি বা চুমকির কাজও রয়েছে। কোটার শাড়িতে আলগা পাড় বসিয়েও ডিজাইন করা হচ্ছে। শাড়ির পাড়ে পাইপিন ও অন্য রঙের পাড় বসিয়েও আনা হয়েছে নতুনত্ব।
সাদা শাড়ি লাল পাড়ে অষ্টমী
দূর্গাপূজার প্রধান শাড়িই মানে সাদা শাড়ি লাল পাড়ের শাড়ি। সঙ্গে আঁচলেও থাকবে টকটকে লাল রঙের ছাপ। জামদানি, কাতান, সিল্ক বা গরদ শাড়িতে পাওয়া যায় এটা। যদিও এখন কম-বেশি সব ফেব্রিকেই লাল-সাদা রঙের ছাপ দিয়ে পূজার আমেজ ফুটিয়ে তোলা হয়। তাই নিজের পছন্দমতো লাল চড়া পাড়ের শাড়ি বেছে নিন। গরদের শাড়ি ক্ল্যাসি হয়। এতে খুব বেশি কাজ থাকে না। তবে কাপড়েই এর বিশেষত্ব ফুটে উঠে। পিওর বা অ্যান্ডি সিল্কের মধ্য়ে সাদা-লাল রঙের শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে। যাতে চুমকি ও অ্যাপ্লিকের কাজ করা থাকে।
জামদানি শাড়িতেই হোক নবমী
দূর্গাপূজার নবম দিন বা নবমী কাটে পূজা, বেড়ানো আর দাওয়াতের মধ্যে। এই দিনে জামদানি শাড়ি হতে পারে সেরা কালেকশন। সোনালি বা রুপালি জরি সুতার কাজ করা জামদানি শাড়ি পরতে পারেন। কটন জামদানির পাশাপাশি এখন সিনথেটিক জামদানিও পাওয়া যায়। হালকা কাজের জামদানিও পরতে পারেন। অনেকে জামদানির পাড়ে অ্যামব্রোয়ডারি বা পছন্দমতো লেস বসিয়ে নতুনত্ব এনে দিতে পারেন।
জমকালো শাড়িতে দশমী
দশমী হচ্ছে দূর্গাপূজার শেষ দিন। মূর্তি বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় পূজার আনুষ্ঠানিকতা। এরপর চলে দাওয়াত ও ঘুরে বেড়ানো। এই দিনে গর্জিয়াস লুক নিতে পারেন। সিকোয়েন্স, পুঁতি বা কারচুপির কাজ করা জমকালো শাড়ি পড়তে পারেন। এখন শাড়িতে জুয়েলারি স্টোনেরও ব্যবহার হয়। এসব পার্টি শাড়ি রাতের উৎসবে পরতে পারেন। ক্রেপ, সিল্ক বা নেটের শাড়িও বেছে নিতে পারেন। যেহেতু দাওয়াত রাতেই বেশি হয় তাই গাঢ় রঙের শাড়ি বেছে নিনু। রঙ, ড্রেসিডেল, ভাসাবিসহ শহরের শপিংমলের দোকানে জমকালো শাড়ির কালেকশন পাওয়া যাবে।