বিজ্ঞানী আর্কিমিডিসের গল্পটা মোটামুটি আমাদের সবারই জানা। গোসলের সময় তিনি পেয়ে গিয়েছিলেন তার জীবন বাঁচানোর উত্তর। আর সাথে সাথে ইউরেকা! ইউরেকা! বলে বাড়ি থেকে রাজপ্রাসাদে ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। এই ঘটনা শুধু আর্কিমিডিসের সাথেই ঘটেনি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও আমরা এমন মুহূর্তের সাক্ষী হই।
আমরা গোসলে গিয়ে গলা ছেড়ে গান গাই, কবিতা আবৃত্তি করি, গায়ে পানি ঢালতে ঢালতে কত ধরনের চিন্তাই না করি! একটা দারুণ প্রশান্তি বোধ হয় আমাদের মনে।
কিন্তু এটা হয় কেন?
আমাদের মস্তিষ্কে সুখের অনুভূতি জাগায় ডোপামিন নামের হরমোন। আর সুখের অনুভূতি পেলে আমাদের মস্তিষ্ক সবচেয়ে ভালোভাবে কাজ করে। আমরা যখন উদ্দমী হয়ে কোনো কাজ করি বা যখন কোনো রোমাঞ্চকর কাজ সম্পন্ন করি বা সফলতার স্বাদ পাই তখন নিঃসৃত হয় ডোপামিন হরমোন।
উদাহরণস্বরুপ বলা যায়, যখন আমরা ব্যায়াম করি, প্রিয় সিনেমা বা অনুষ্ঠান দেখতে বসি, গান শুনি বা রান্না করি, তখন ডোপামিন আমাদের মধ্যে সুখানুভূতি জাগায়। এছাড়াও আরেকটি বিশেষ সময় ডোপামিন পাই আমরা। সেটি হলো গোসলের সময়!
ডোপামিন নিঃসরন হওয়ার পরে শরীরে একধরণের তরঙ্গ বা ঢেউ অনুভূত হয়। একে বলে আলফা ওয়েভ। এই দুয়ের সমন্বয়ে আমরা ভালো চিন্তা করতে পারি। আমরা ধ্যানে বসলে বা দিবাস্বপ্ন দেখার সময় এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাই। ডোপামিন ও আলফা ওয়েভের সম্মিলনে আমাদের সৃজনশীলতা উপচে ওঠে।
তাহলে গোসলের সাথে এর সম্পর্ক হলো কীভাবে?
আমরা গোসলের পর একটা শান্তি অনুভব করি। এই অনুভূতিকে আমরা ফ্রেশনেস বলি। গোসল করার পর আমরা সুখ পাই। দীর্ঘদিন এভাবে চলার পর, আমাদের মস্তিষ্ক এই সুখের অনুভূতিকে মুখস্ত করে নেয়। অর্থাৎ গোসলে যাওয়ার সময় আমাদের মস্তিষ্ক বুঝে যায় আমরা সুখের অনুভূতি পেতে যাচ্ছি। ফলে সে ডোপামিন নিঃসরণ করে এবং আলফা ওয়েভ সৃষ্টি হয়। আর এতেই জেগে ওঠে আমাদের ক্রিয়েটিভিটি। আমরা তখন চিন্তা করতে পারি অসাধারণ সব বিষয়ে, উত্তর পেয়ে যাই অমিমাংসিত সব প্রশ্নের!
সূত্র: রিপলি’স বিলিভ ইট অর নট