সন্তানের স্কুলের ছুটিতে যা যা করতে পারেন

ঝুমকি বসু প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২২, ০৮:৩১ পিএম

তুনতুর স্কুলে প্রায় গরমের ছুটি চলছে। পড়াশোনার চাপও অপেক্ষাকৃত কম। বাবা-মা সকাল হলেই বেরিয়ে পড়েন অফিসে, ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা। খেলার নেই কোনো বন্ধু, টিভির কার্টুন দেখতেও আর ইচ্ছা হয় না। সময় যেন কাটতেই চায় না তুনতুর।  

একটানা এতদিনের ছুটিতে শিশুদের মজা বা স্বাধীনতা কি খুব একটা আছে? ছোট্ট ফ্লাটে বন্দি থাকা, বাইরে রোদে ঘোরা বারণ, স্কুল থেকে দেওয়া হোমওয়ার্ক শেষ করার তাড়া, সব মিলিয়ে ছুটির মজা তেমন একটা পাওয়া হয় না এখনকার শিশুদের। টিভিতে একটানা কার্টুন চ্যানেল চলছে তো চলছেই। ঘরে শিশুদের দুরন্তপনায়ও অতিষ্ঠ সবাই। বাবা-মায়েরাও ছুটির সময় অভিযোগের ঝাঁপি খুলে বসেন। আসলে লম্বা ছুটিতে ঘরবন্দি থেকে শিশুরা তিতিবিরক্ত। আবার তাদের দৌরাত্ম্যে বাবা-মা ক্লান্ত। ছুটির দিনগুলোতে কীভাবে ছোটদের ব্যস্ত এবং আনন্দে রাখা যায়, তা নিয়ে রয়েছে কিছু পরামর্শ।

১. একটা প্রজন্ম পিছিয়ে গেলেই গরমের ছুটির সংজ্ঞাটা কেমন যেন বদলে যায়। মনে করে দেখুন, আপনার ছেলেবেলায় এমন ছুটি মানেই ছিল মামাবাড়ি বা গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কাজিনদের সঙ্গে মিলেমিশে দারুণ মজা করা। আপনার সন্তানকেও এমন আনন্দ থেকে বঞ্চিত করবেন না। সারা বছর হয়তো কাজের চাপে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে ওঠে না। এই সময়ে সেই দূরত্ব ঘুচিয়ে দিন। ছেলেমেয়েদের সঙ্গে মেশার, খেলা করার সুযোগ করে দিন।

২. লম্বা ছুটি পেলেই কোনো দূরের জায়গায় বেড়াতে যেতে হবে, এমন কোনো মানে নেই। যেতে পারেন কাছাকাছি কোথাও, যেখানে ছেলেমেয়েরা মনের আনন্দে সময় কাটাতে পারে।

৩. পড়াশোনার বাইরে আপনার সন্তানের অন্য যেসব বিষয়ে উৎসাহ রয়েছে, তা জানার সুযোগ এখনই। সেই শখের বিষয়ের ওপর নানা বই কিনে দিতে পারেন। দুজনে বসে ইন্টারনেট ঘেঁটে এই বিষয়ের নানা তথ্য সংগ্রহ করুন। খোঁজ নিয়ে দেখুন এই ছুটির মধ্যে কোনো ট্রেনিং ক্লাস চলছে কি না? তাহলে সেখানে ওকে ভর্তি করে দিতে পারেন। নিজস্ব চিন্তা-ভাবনার শরিক পেলে আপনার সন্তান তার শখের কাজে অনেক উৎসাহ পাবে।

৪. ছেলেমেয়েকে সঙ্গে নিয়ে তাদের ঘর, বারান্দা বা ছাদ বাগান কিংবা ঘরের যেকোনো অংশ নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা করুন। প্রথমে এই ব্যাপারে ওদের মতামত নিন। তারপর দায়িত্ব ভাগ করে দিন। রঙিন কাগজ দিয়ে কোলাজ বানিয়ে একটা জায়গা সুন্দর করে সাজাতে ওরা খুব মজা পাবে। আপনি নানা রকম জিনিস এবং চিন্তা-ভাবনা দিয়ে ওদের সাহায্য করুন। কাজ শেষ হয়ে গেলে সন্তানের বন্ধুদের বাড়িতে ডাকুন, যাতে ওরা নিজের সাজানো জায়গাটা দেখাতে পারে। পাশের ফ্ল্যাটের শিশুদের সঙ্গে নিয়ে আঁকা, ক্রিয়েটিভ রাইটিং বা হাতের কাজের প্রদর্শনীও করতে পারেন। এতে ওদের সময় চমৎকার কাটবে।

৫. সব শিশুই বাবা-মায়ের ছেলেবেলার গল্প শুনতে ভালোবাসে। এই ছুটিতে শুধু গল্প বলা নয়, সেই জায়গাগুলো ওদের চাক্ষুষ দেখিয়ে আনতে পারেন। আপনার ছেলেবেলার স্কুল, কলেজ, পার্ক থেকে ওদের ঘুরিয়ে আনেন। সঙ্গে বলুন জায়গা সম্পর্কিত আপনার ছেলেবেলার গল্প। কিনে দিতে পারেন আপনার ছোটবেলার প্রিয় দোকান থেকে টুকিটাকি জিনিস। এই ছোট ছোট জিনিস আপনার সন্তানের ওপর বিস্তার করবে সুপ্রভাব, লম্বা ছুটি সন্তানের জন্য হবে আনন্দময়।