যেভাবে শিশুদের শিষ্টাচার শেখাবেন

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২১, ০১:৩৩ পিএম

শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। পরিবারের বড়দের তারা অনুকরণ করে। ছোট থেকেই শিশুদের তাই ভালো আচার-আচরণ এবং শিষ্টাচার শেখাতে হয়। এর জন্য পরিবারের বড়দের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। শিশুরা একটু বেশি বয়সে কিছু শিখতে যে সময় নেয় তার থেকে অনেক দ্রুত শিখে নেয় অল্প বয়সেই। একসময় শিশুরা বড়দের থেকেই রোল মডেল হয়ে উঠতে শেখে।

শিশুদের মধ্যে ভালো শিষ্টাচারের অভ্যাস করাতে হবে। এতে বাচ্চারা বড় হলে একজন প্রফুল্ল ব্যক্তি, বিনয়ী, দয়ালু এবং জীবনের সব ধরনের সাফল্যকে জয় করে নিতে পারবে।

বাচ্চাদের সঠিক শিষ্টাচার শেখানো সবার ওপরে প্রাধান্য পায়। একাডেমিক শিক্ষা কিংবা সামাজিক বা ঘরোয়াভাবে সব দিক থেকেই তাদের সঠিক শিষ্টাচার শেখাতে হবে। অভিভাবক হিসেবে এই দায়িত্ব আপনার। সন্তানকে ভালো অভ্যাসগুলো শেখাতে এবং সঠিক পথে চালাতে কী করবেন, তা জানাব আজকের আয়োজনে।

  • প্রথমে ভালো অভ্যাসগুলো নিজে আয়ত্ত করুন। যা সন্তানকে শেখাতে চান তা আপনি নিজেও অনুশীলন করুন। এমনকি যেকোনো মুহূর্তে শিশুদের সামনে আপনার শিষ্টাচার, আদব-কায়দা যেন বজায় থাকে, তা খেয়াল রাখুন।
  • নম্র ও বিনয়ী হয়ে উঠতে শেখান। দরজায় নক করে প্রবেশ করা, কাজ হয়ে যাওয়ার পর সব গুছিয়ে রাখা, নিজেকে ফিটফাট ও পরিষ্কার রাখা, খাবার টেবিলের সংযতভাবে খাওয়া এমন আদব-কায়দাগুলো বাড়িতে অনুশীলন করান। যতক্ষণ পর্যন্ত এই অভ্যাসগুলো শিশুর মনের মধ্যে এবং আচরণে স্থায়ীভাবে বসে না যাচ্ছে সে পর্যন্ত অনুশীলন চালিয়ে যান।
  • সন্তানের ভালো কাজের প্রশংসা করুন। শিশুরা যখন সঠিক কাজগুলো করছে এবং ভালো অভ্যাসগুলো আয়ত্ত করে ফেলছে তখন তাকে অনুপ্রেরণা দিন। প্রতিবার ভালো কিছু করার পরপরই তাদের উৎসাহ দিন। অন্য়থায় বিপরীত প্রভাব পড়তে পারে। বাচ্চার ভালো অভ্যাসগুলোর প্রশংসা না করলে একসময় সে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য খারাপ আচরণ করতে পারে। তাই ছোট ছোট বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন।
  • শিশুরা কিছু ভুল করলে সংশোধন করে দিন। কারো সঙ্গে কথোপথনের সময় কিছু ভুল বললে সঙ্গে সঙ্গেই থামিয়ে দিন। দ্রুত তার ভুলটিকে শুধরে দিন। কিছু ক্ষেত্রে সবার সামনে বাচ্চাকে ভুল শুধরে দিলে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে পরে বাচ্চাকে বুঝিয়ে বলুন।
  • বাচ্চাদের কিছু শেখাচ্ছেন, কিন্তু কোনোভাবেই আয়ত্ত করতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে বিরক্ত হবেন না। ধৈর্যশীল হোন। ধৈর্যচ্যুত হয়ে সন্তানের ওপর রেগে যাবেন না। আপনি শান্ত ও অনড় থাকুন। আপনাকে দেখে সন্তানও একইভাবে শান্ত থাকবে।
  • সব ধরনের ধর্ম, গোষ্ঠী, লিঙ্গ এবং জাতীর লোকদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শেখাবেন। সন্তানকে শেখান মানুষেকে কেবল তার চরিত্র আর কাজ দিয়ে বিচার করতে হয়। অন্য সবকিছুই সাধারণ বিষয়।
  • বাচ্চার সঙ্গে সর্বদা বিনয়ী হয়ে কথা বলুন। কোনোরকম অশ্লীল শব্দ বা ভাষা ব্যবহার একদমই করবেন না।
  • বাচ্চাকে শিষ্টাচার শেখাতে কিছু শব্দের ব্যবহার শেখান। ‘দয়া করে', ‘ধন্যবাদ‘, ‘দুঃখিত‘, ‘আমি কি‘ এবং ‘এক্সকিউজমি' এই ধরনের নম্র শব্দগুলো আয়ত্ত করান। আপনি নিজেও এই শব্দগুলো বার বার ব্যবহার করুন।
  • পরিবারের অন্যদেরও শিষ্টাচার পালনে উৎসাহিত করুন। বাড়িতে নিয়ম গড়ে তুলুন, যা দেখে শিশুরাও নিজের মধ্যে এগুলো রপ্ত করে নিবে। তা অভ্যাস করে ফেলবে।