দুর্ঘটনার কোনো সময় নেই। যেকোনো মুহূর্তেই দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারেন। আগুন লাগার ঘটনাও ঠিক তেমনই। হঠাৎই অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। বাসাবাড়ি, শিল্পকারখানা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কোনোটিই অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকির বাইরে নয়।
আগুন লেগেছে তা বুঝে ওঠার আগেই তা ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানো বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তাই প্রাথমিকভাবে স্থানীয়দেরই এগিয়ে আসতে হয়। আপনার বাড়ি বা আশপাশের কোথাও আগুন লাগলে তা নেভানোর আসল তরিকা জেনে রাখুন। কারণ আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, সেই অনুযায়ী তা নেভাতে হয়।
ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, আগুন লাগার ৫টি ধরন রয়েছে। সাধারণ পদার্থ থেকে আগুন লাগতে পারে, তেলের আগুন, গ্যাসের আগুন, ধাতব পদার্থের আগুন এবং ইলেকট্রিক কানেকশন থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটতে পারে। আর এই ৫ ধরনের আগুন নেভানোর প্রক্রিয়াও ভিন্ন। শুধু পানি দিয়েই এসব আগুন নেভানো সম্ভব নয়। এর জন্য একেক ধরনের উপকরণ ব্যবহার করতে হয়।
কোন আগুন কীভাবে নেভাবেন, তা প্রাথমিক ধারণা জেনে নিন এই আয়োজনে।
বাঁশ, কাঠ, কাগজ, কাপড়ে আগুন লাগলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসবে। এছাড়া শুকনা বালু এবং ভেজা কাঁথা বা ভারী কাপড়ও ব্যবহার করতে পারেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
তেল, মবিল, পেট্রল বা অন্যান্য তরল পদার্থ থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে পানি ব্যবহার না যাবে না। এ ক্ষেত্রে আগুন নেভাতে ভেজা কম্বল, বস্তা, কাঁথা, ভারী কাপড় ব্যবহার করুন। হাতের কাছে শুকনা বালু ছিটিয়েও তরল পদার্থ থেকে সৃষ্ট আগুন নেভানো যাবে। আগুনের মাত্রা বেড়ে গেলে অ্যাকুয়েস ফিল্ম ফর্মিং ফোম (এএফএফ) ছড়িয়ে দিন। আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
গ্যাস থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে প্রথমে গ্যাসের সরবরাহ লাইন বন্ধ করে দিন। রাইজারের নব ঘুরিয়ে গ্যাস বন্ধ করুন। গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে সঙ্গে সঙ্গে ভেজা কাঁথা, কম্বল, বস্তা বা ভারী কাপড় সিলিন্ডারের গায়ে জড়িয়ে চাপ দিন। এরপর নব ঘুরিয়ে গ্যাস বন্ধ করুন। গ্যাস লিক হচ্ছে কি না, সব সময় খেয়াল রাখুন। গ্যাসের সামান্য গন্ধ পেলে সেখানে দেশলাই, সিগারেট, মোমবাতি বা অন্য কোনো জ্বালানি নিয়ে যাবেন না।
ধাতব পদার্থের আগুন বা সোডিয়াম, পটাশিয়াম থেকে আগুনের সূত্রপাত হলে তা ভয়াবহ হতে পারে। এসব আগুনে পানির ব্যবহার করলে আরও বিস্ফোরণ বাড়ে। এ ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরাই ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
বৈদ্যুতিক তারের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হলে পানি ব্যবহার করা যাবে না। এতে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়বে। এ ক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক লাইনের মেইন সুইচ বন্ধ করুন। বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ হলে দূর থেকে আগুনে পানি ছড়িয়ে দিন। আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এই ধরনের আগুন কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাধ্যসে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে।