তেলেই এখন তেলেসমাতি। দামের হিড়িকে এখন লাগামছাড়া তেল। রান্না করতে তেল তো লাগবেই। তবে পরিমাণের ওপর স্বাদ নির্ভর করে। বেশি তেলে বেশি স্বাদ— এই ধারণা ভুল। বরং অল্প তেলে রান্নায়ও সুস্বাদু খাবার তৈরি সম্ভব। যা স্বাস্থ্যকরও হয় বটে। পুষ্টিবিদরা পরামর্শও দিয়েছেন, অল্প তেলের রান্নায় স্বাদ ও সুস্থতা পাওয়া যাবে একসঙ্গে।
লিটারপ্রতি তেল কিনতে এখন বাড়তি টাকা গুনতে হয়। তেল ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে অল্প তেলে রান্না শেখার বিকল্প নেই। অল্প তেলে রান্না করা যায়, এমন কিছু খাবার রয়েছে। বাঙালিয়ানা রান্নাসহ ভারী খাবারও বানানো যাবে অল্প তেলে। শুধু রান্নার ধরনটা পাল্টে নিতে হবে। স্বাদ বদলাবে না। বরং স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।
অল্প তেলে রান্না করা যায় এমন কিছু খাবার নিয়ে থাকছে আজকের আয়োজন।
সবজি পোলাও
২৫০ গ্রাম পোলাও চাল ভালো করে ধুয়ে নিন। আলু, গাজর, বরবটি ছোট টুকরো করে কেটে ধুয়ে নিন। এবার চুলায় কড়াই চড়ান। কড়াইতে দুই চা চামচ তেল দিয়ে এলাচ, তেজপাতা ও দারুচিনি দিয়ে দিন। সবজিগুলো তেলে ছেড়ে ভাজুন। এবার এতে ৪০০ গ্রাম নারকেল দুধ দিয়ে দিন। ফুটে এলে চাল দিয়ে দিন। লবণ ও কাঁচা মরিচ দিন। দুধ শুকিয়ে এলে অল্প আঁচে দমে বসান। ১৫ মিনিট পর নামিয়ে পরিবেশন করুন।
চিকেন ফ্রাই
মুরগির মাংসের বুকের অংশ নিতে হবে এই রান্নায়। ১ চা-চামচ টক দই, ২ চা চামচ আদার রস, কাঁচা মরিচ কুচি, মরিচ গুঁড়ো, সয়া সস, সামান্য চিনি, সামান্য তেল ও স্বাদমতো লবণ দিয়ে মুরগির মাংসকে ম্যারিনেট করে রাখুন। আধা ঘণ্টা ফ্রিজে রাখুন। মেরিন্যাট করা মাংস এবার ভেজে নিতে হবে। চুলায় ননস্টিকি প্যান বসিয়ে বাকি তেল ছড়িয়ে দিন। এবার মুরগির মাংসের টুকরো সেখানে দিয়ে দিন। মাঝারি আঁচে ঢেকে রান্না করুন। একপাশ হলে অন্য পাশ উল্টে দিন। মাংস সেদ্ধ হয়ে ভাজা ভাজা হবে। এরপর নামিয়ে এর ওপর লেবুর রস ও চিলি ফ্লেক্স দিয়ে লম্বাকারে কেটে পরিবেশন করুন।
চিকেন সালাদ
২০০ গ্রাম মুরগির মাংস ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। মাংসকে লেবুর রস ও লবণ দিয়ে মেখে রাখুন। কড়াইয়ে এক চামচ তেল দিয়ে মাংসের টুকরোগুলো ভেজে নিন। এবার সেদ্ধ করা কাবুলি ছোলা, একটি সেদ্ধ ডিম ছোট করে কাটা, টমেটো, গাজর, শসা ছোট কিউব করে কাটা, গোলমরিচ গুঁড়ো, এক কাপ টক দই ও পনির টুকরো করে কাটা একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণে ভাজা মুরগির টুকরোগুলোও মাখিয়ে নিন। তৈরি হয়ে যাবে চিকেন সালাদ।
সবজিতে লইট্টা শুঁটকি
১০০ গ্রাম লইট্যা শুঁটকি কেটে ভেজে নিন। এরপর ১০ মিনিট গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ভেজানো শুঁটকি ভালোভাবে ধুয়ে থেতো করে নিন। এবার বিভিন্ন রকম সবজি যেমন আলু, বেগুন , টমেটো, শিম কেটে ধুয়ে নিন। সব সবজি ও লইট্টা শুটকিসহ পেয়াজকুঁচি, রসুন ছ্যাচা, হলুদ গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো, ধনেপাতা কুচি, ১ চা-চামচ তেল ও লবণ একসঙ্গে মাখিয়ে নিন। চুলায় একটি পাত্র বসিয়ে সবজির মিশ্রণটি দিয়ে দিন। পাত্রটি ঢেকে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। কিছুক্ষণ পর পর নাড়ুন। সবজি সেদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
যেকোনো ভর্তা
যেকোনো ভর্তা পদ সাধারণত সামান্য তেলেই বানানো যায়। মাছভর্তা, মাছ বা গরুর মাংসের শুঁটকি ভর্তা, আলু, বেগুন, টমেটো, পেঁপে, ব্রকলি, শিম, ঢ্যাঁড়স ভর্তা করা যায় অল্প তেলেই।
ডাল রান্না
ডাল চচ্চড়ি বা পাতলা ডাল রান্নাও করা যায় অল্প তেলে। হলুদ-লবণ-পেঁয়াজ দিয়ে ডাল ফুটিয়ে নিন। চাইলে সামান্য তেলে বাগার করে নিতে পারেন। আবার বিনা তেলেও টমেটো, ধনেপাতা, কাঁচামরিচ দিয়ে ডাল ফুটিয়ে রান্না করতে পারেন।