ঈদের চাঁদ রাতের ব্যস্ততা

সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ২, ২০২২, ০২:৩৫ পিএম

‍‍‘ও মোর, রমজানের ওই রোজার শেষে, এলো খুশির ঈদ‍‍’—এই গান বেজে উঠলেই শুরু হয়ে যায় ঈদ আনন্দ। ঈদের আগের রাতে চাঁদ দেখার পরই চারপাশে বাজতে শুরু হয় এই গান। জানান দেয়, ভোর হলেই ঈদের দিনটি শুরু।

রমজানে দীর্ঘ এক মাস রোজা রাখা ও সিয়াম সাধনা করেন মুসলিমরা। শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার পরই শেষ হয় রমজান মাস। মানে শেষ রোজা। শাওয়াল মাসের প্রথম দিনটি ঈদের দিন হিসাবে উদযাপন হয়। রোজা শেষ হওয়ার যেমন কষ্ট থাকে, পাশাপাশি মুসলিমদের মধ্যে ঈদের আনন্দও থাকে।

জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই ঈদের আনন্দ উদযাপন করেন। ঘরে ঘরে চলে ঈদের প্রস্তুতি। ভালো খাবার রান্না হয় প্রায় প্রতিটি পরিবারেই। নতুন পোশাক কেনার ধুম তো থাকেই। ঈদের আগেই এসব প্রস্তুতি শুরু হয়। কিন্তু ঈদের ঠিক আগের দিন অর্থাৎ চাঁদ রাত থাকে অন্য রকম। সবকিছু একসঙ্গে গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত থাকে সবাই। তা ছাড়া ঈদের অগ্রিম খুশিতে মেতে ওঠে সবাই এই রাতেই।

কী হয় ঈদের এই চাঁদ রাতে? এমন প্রশ্নে উত্তর মিলবে, কী না হয়! খাওয়ার আয়োজনের প্রস্তুতি, কেনাকাটা, ঘোরাফেরা, পার্লারে ছোটাছুটি, মেহেদি পরা, ঘর গোছানোসহ ঈদ আনন্দের সব প্রস্তুতিই চলে এই রাতে। চাঁদ রাতেই সব গুছিয়ে নেওয়া হয়। বলা যায়, ঈদের দিনের কাজ অগ্রিম সেরে নেওয়া হয় চাঁদ রাতে।

মা-চাচি,নানি-দাদি সবাই ব্যস্ত থাকে রান্নার আয়োজনে। মিষ্টি পদ রান্না হয়। আর অন্য খাবার তৈরির আয়োজন করে রাখে। ঈদের সকালে ঝটপট শুধু রান্না বসিয়ে দেওয়া যায়। কারণ, ঈদের সকাল থেকেই আসা শুরু করে অতিথিরা। তাদের আপ্যায়নের প্রস্তুতি হয় এই চাঁদ রাতেই।

চাঁদ রাতে ছোট-বড় মেয়েরা সবারই মেহেদি লাগানোর ধুম পড়ে। সবাই একসঙ্গে বাড়িতে বসে কিংবা পার্লারে গিয়েও হাতে মেহেদি লাগায়। ঈদের নতুন পোশাক আর দুই হাতে বিভিন্ন নকশার মেহেদি যেন ঈদ আনন্দের সূত্রে গাঁথা।

চাঁদ রাতে ঈদ শপিংয়ের ইতি টানে। মানে সবাই শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা করে। তাই এই রাতে ক্রেতা-বিক্রেতারা ব্যস্ত সময় কাটায়। লাভ-লোকসানের হিসাব না করেই বিক্রেতারা পণ্য ছেড়ে দেয়। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে ক্রেতারাও দরদামে আটকে থাকে না। তাই তুমুল গতিতে চলে ঈদের শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা।

ঈদ উপলক্ষে ঘরকে নতুন করে সাজানো হয়। ঘরের পর্দা, চাদর, সোফার কুশন-কভারেও থাকে নতুনের ছোঁয়া। চাঁদ রাতেই পুরোনো সবকিছু পাল্টে নেওয়া হয়। এতে ঈদের সকালের কাজটা অনেকটাই হালকা হয়ে যায়। ঈদের দিনের কাজকে যতটা সম্ভব এগিয়ে রাখার ব্যস্ততা থাকে এই চাঁদ রাতে।

চাঁদ রাত মানে শেষ রোজা, শেষ ইফতার। এই দিন ইফতার আয়োজনেও বাড়তি আয়োজন থাকে। ইফতারের টেবিল জুড়ে থাকে পরিবারের সবার পছন্দের খাবারগুলো। একসঙ্গে বসে শেষ ইফতারকে উপভোগ করে পরিবারের সবাই।

ঈদ উপলক্ষে সবার ছোটাছুটি বেড়ে যায়। তবে ফাঁকা রাস্তায় সেই ছোটাছুটিও আনন্দের। অনেকে বন্ধুরা মিলে ঘুরতে বের হয়। সেলুনে গিয়ে চুল কাটা, মার্কেট ঘোরা, চায়ের দোকানে আড্ডাও চলে এই রাতে। সবকিছুতেই থাকে ঈদ আনন্দ। ঈদের অগ্রিম আনন্দ উদযাপন শুরু হয় এই রাতেই।